পশ্চিমবঙ্গে একনায়কতন্ত্র চলছে। বাংলার সরকার কারো কথা শোনে না, কারোর সাথে কোনো আলোচনা করে না মালদায় নির্বাচনী প্রচারে এসে এভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
মালদার চাঁচল থেকে এরাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করলেন রাহুল গান্ধী। মালদা উত্তরের কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরীর সমর্থনে এইসভা করেন কংগ্রেস সভাপতি।
কংগ্রেস সভাপতি এদিন একাধারে যেমন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যেমন তোপ দাগেন তেমনি সমালোচনায় মুখর হন মমতা সরকারের বিরুদ্ধেও। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার এরাজ্যে কোন উন্নয়ন করতে পারেনি। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে কর্মস্থান হয়নি। এরাজ্যের সরকার কারোর সাথে কোনো আলোচনা করে না। কারো কথা শোনে না। তিনি বলেন এরাজ্যে কংগ্রেস কর্মীরা আক্রান্ত। অথচ তাদের সঙ্গে সঠিক বিচার হয়না। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, রাস্তা কোনো ক্ষেত্রেই এরাজ্যে উন্নয়ন চোখে পড়ে না।
এদিন কংগ্রেস সভাপতি বিজেপি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও শেষপর্যন্ত জোট করতে ব্যর্থ হওয়া বামেদের সম্পর্কে তেমন জোরালো কোন মন্তব্য করেনি। তিনি বলেন এরাজ্যের মানুষ সিপিএমের আমলে ব্যর্থতা দেখেছে। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ব্যর্থতা দেখছে। ফলে এই ব্যর্থতা পুনরাবৃত্তি আটকাতে বাংলায় কংগ্রেস ক্ষমতায় এসে কাজ করে দেখাবে।
একই সঙ্গে দিল্লিতে কংগ্রেস যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে তারা কি করবেন তা তুলে ধরেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস
সভাপতি প্রতিশ্রুতি দেন তারা ক্ষমতায় এলে গরীবদের নূন্যতম আয় নিশ্চিত করা হবে। গরীবের টাকা সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি শূন্য পদ পূরণ করা হবে। ইন্দিরা গান্ধী যেমন ব্যাঙ্ক জাতীয় করণ করেছিলেন। সেই পথেই গিয়ে সমস্ত ধরণের বেসরকারিকরণ বন্ধ করার আশ্বাস দেন তিনি। সরকারের সহযোগিতায় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি ও তাতে পড়াশোনার সুযোগ বৃদ্ধি করা হবে। তিনি আরো বলেন তারা ক্ষমতায় এলে জিএসটির সংস্কার করবেন। বিজেপির আমলের জিএসটিকে গব্বর সিং ট্যাক্স বলে কটাক্ষ করেন তিনি। রাহুল কৃষি ঋণ মুকুবের প্রতিশ্রুতি দেন। একই সঙ্গে আবারও নরেন্দ্র মোদীকে ধনি সম্প্রদায়ের চৌকিদার বলে কটাক্ষ করেন। মালদার উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী মৌসম বেনজির নূরের নাম না করে তাকে প্রতারক বলে আক্রমণ করেন সোনিয়া তনয়। রাফায়েল ইস্যুতেও তোপ দাগেন তিনি কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। তবে রাজ্য বিজেপি নিয়ে তেমন কিছু বলতে শোনা যায় নি তার কাছে। বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি ভেদাভেদের রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন মালদার সভা থেকে।
শত চেষ্টা করেও মোদী বিরোধী জোট করে ভোট লড়তে না পারার জন্যেই কি নাম না করেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এহেন আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সভাপতি? এই সভার এই প্রশ্নই এখন ঘোরাঘুরি করছে রাজনৈতিক মহলে।
মালদায় এদিনের সভা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা সৌমেন মিত্র, গৌরব গগৈ,আবু হাসান খান চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সি সহ এইরাজ্যে কংগ্রেসের একাধিক প্রার্থীরা। এই সভা শুরুর আগেই সভাস্থলে ব্যপক বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। ব্যারিকেড ভেঙে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা মঞ্চের কাছে চলে যান। পুলিশ প্রশাসন ও নেতৃত্বের উদ্যোগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।