দিনাজপুর বোচাগঞ্জ উপজেলার সনকাই চৌরঙ্গী মহাশ্মশানের সার্বজনীন নবনির্মিত কালী মন্দির ভাংচুর ও সমাধিস্থলে অগ্নিসংযোগ করার প্রতিবাদে স্থানীয় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত সমাবেশে প্রধান বক্তারা বলেন, এই সরকার সংখ্যালঘু বান্ধব সরকার কিন্তু আমরা দেখতেছি সরকারের বদনাম করার জন্য এক শ্রেণীর মানুষেরা সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ছড়াতে সারা দেশে সংখ্যালঘুদের নানা ভাবে নির্যাতন করছে। তারা খুব বেশি নয় অল্প সংখ্যক মাত্র।প্রশাসনের সুদৃষ্টির অভাবে এরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দিন দিন।
তারা আরো বলেন, আমরা কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে কথা বলি না অসহায় বঞ্ছিত নিপীড়িত মানুষের কথা বলি।
কিছু দিন আগে আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়েও কাজ করেছি, প্রতিটি দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এবং সহষপুর চৌরঙ্গী মহাশ্মশানে যা ঘটেছে তার নিশ্চিত বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আপনাদের পাশে থাকব।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জেনারেল সেক্রেটারি তপন পান্ডে। তিনি বলেন শুধু সনকাই চৌরঙ্গী নয় সারা দেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় আমরা আপনাদের পাশে আছি এবং থাকব।
এছাড়াও সমাবেশ বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার রায় বুলু।
তিনি বলেন, সনকাই চৌরঙ্গী মহাশ্মশানের কালী মন্দির ভাংচুর ও সমাধিস্থলে অগ্নিসংযোগ ব্যপারে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নিতে তিনি শ্মশান কমিটির পাশে থেকে সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য সনকাই চৌরঙ্গী মৌজার খতিয়ান নং সিএস১ও২,২৪৪৮ দাগের বৃস্টিস ও পাকিস্তান আমলে শ্মশান হিসেবে দলিল রেকর্ড থাকলেও ৭৬-৭৭ সালে ৯০ বছরের জন্য লিজ নেন মোঃ আব্দুল্লা(বাচ্চু মিয়া) ২০১৩তে শ্মশান কমিটি নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করলে ২০১৫ সালে শ্মশানের পক্ষে রায় পায়,আব্দুল্লা(বাচ্চু) রায় না মেনে নিয়ে জজকোর্টের আপিল করেন, বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় স্থানীয় জনসাধারনের অভিযোগের ভিত্তিতে বোচাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন চৌধুরী ইগলু ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার রায় বুলু শ্মশানের জমিটি উদ্ধার করে শ্মশান কমিটির কাছে হস্তান্তর করেন। ইতিমধ্যেই এই মহাশশ্মানে স্বর্গীয় কেশব চন্দ্র রায় বাবুসহ বেশ কয়েক জনের শবদেহ সৎকার করা হয়েছে।
হিন্দু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী শ্মশান কমিটি একটি শ্মশানকালী মন্দিরগৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নিলে মোঃ আব্দুল্লা (বাচ্চু মিয়া) তাতে বাধা সৃষ্টি করে এবং মন্দির তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা জারীর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ এজাহারুল হক ২৪/২/১৯ তারিখ রবিবার তদন্তে এসে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাগজপত্র দেখে মন্দির তৈরির কাজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ প্রদান করেন।
অভিযোগ জানিয়েও অবৈধ দখল বহালে ব্যর্থ হয়ে রবিবার (২৪ ফেব্রুঃ) মোঃ আব্দুল্লাহর ভাতিজা সহসপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বাবু গং দুরদূরান্ত থেকে সন্ত্রাসী লোকজন ভাড়া করে এনে নবর্নিমিত সার্বজনীন কালী মন্দির ও সমাধিস্থল ভাংচুর ও বাজারের নিরীহ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্টান ইত্যাদিতে নির্বিচারে সশস্ত্র হামলা এবং ভাঙচুর চালায়। এ ব্যপারে শশ্মান কমিটির পক্ষে অভয় চন্দ্র রায় ৩২ জন চিহ্নিত ও অজ্ঞাত দের শতাধিক আসামি করে বোচাগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।