বিগত বেশ কয়েকটি সংসদ অধিবেশনের (Parliament Session) অভিজ্ঞতা ভাল নয়। সরকার-বিরোধী দ্বন্দ্বে সুস্থ আলোচনা সেভাবে দেখা যায়নি। অধিকাংশ বিলই পাশ হয়েছে একপেশেভাবে। বিরোধীরা কোনও বিল স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠাতে চাইলে সরকার রাজি হয়নি। আবার সরকার কোনও বিল নিয়ে আলোচনা চাইলে বিরোধীরা বিভিন্ন ইস্যু তুলে ওয়াক-আউট করেছে। বিরোধীরা বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনার দাবি তুললে সেটা মানা হয়নি। আবার সরকার সমঝোতা সূত্র বের করলে, বা বিরোধী শিবির মানেনি। এবারের বাদল অধিবেশনে (Monsoon Session) সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না কেন্দ্র। মূল্যবৃদ্ধি, করোনার মতো ইস্যুতে বিরোধী শিবির যখন সরকারপক্ষকে কোণঠাসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই সর্বদল বৈঠকে কৌশলী বার্তা দিয়ে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)।
প্রথামতোই বাদল অধিবেশনের আগের দিন সংসদে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল সরকার। সেই বৈঠকে বিরোধীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, “আমরা যে কোনও বিষয়ে সুস্থ আলোচনায় প্রস্তুত। ফলপ্রসূ আলোচনা হোক, সুস্থ বিতর্ক হোক। সরকার যে কোনও বিষয়ে আলোচনায় রাজি।” অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী ঘুরপথে বুঝিয়ে দিলেন আগের অধিবেশনগুলির মতো ওয়াক-আউট বা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ না দেখিয়ে বিরোধীরা যদি ইস্যু উত্থাপন করে, তাহলে সরকার পক্ষ তাঁদের জবাব দেবে। যদিও, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য নেহাতই কথার কথা বলে মনে করছে বিরোধী শিবির। আসলে সংসদের বাদল অধিবেশনে প্রায় ৩০টি বিল পাশ করানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। সব বিল নিয়ে আলোচনা বা পাশ করানোর জন্য বিরোধীদের সহায়তা যে প্রয়োজন, সেকথা বিলক্ষণ জানেন মোদি। সেকারণেই আগেভাগে বিরোধীদের সমর্থন প্রার্থনা করে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিনের সর্বদল বৈঠকে মোট ৩৩টি দলের দলনেতারা উপস্থিত ছিলেন। কংগ্রেসের তরফে মল্লিকার্জুন খাড়গে, অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury), তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়েন, ডিএমকের ত্রিচুরি শিবারা এদিনের বৈঠকে ছিলেন। সরকার পক্ষের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh) বৈঠকে। সর্বদল বৈঠকের পর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাও সব দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সর্বদল বৈঠকের পাশাপাশি NDA’র দলনেতাদের এবং বিরোধী শিবিরের পৃথক বৈঠকও হয় সংসদ ভবনে।