Bengal post-poll violence: বাংলার গ্রাম সামলাচ্ছে হাতে গোনা পুলিশ, থানা ভর্তি সিভিক ভলান্টিয়ারে: কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন

বড় এলাকা এবং জনসংখ্যা বেশি হলেও পর্যাপ্ত পুলিশ নেই পশ্চিমবঙ্গের অনেক থানায়। সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে কাজ চলছে। ফলে বড় ধরনের ঘটনার মোকাবিলা করা তাঁদের পক্ষে সম্ভবও হচ্ছে না। ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র তদন্তে নেমে গ্রামবাংলার থানাগুলি নিয়ে এমনই অভিজ্ঞতার কথা জানাল কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন। এমনকি এই তথ্য তারা কলকাতা হাই কোর্টে জমাও দিয়েছে।

ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দফায় দফায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যায় কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের দল। তদন্তে তারা পুলিশের ‘নিষ্ক্রিয়তা’র অভিযোগ পেয়েছে ভূরি ভূরি। নিজেরাও সরেজমিনে খতিয়ে দেখে রিপোর্টে সেই তথ্য নথিভুক্ত করেছেন কমিশনের আধিকারিকরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, রাজ্যের এক-একটি থানার এলাকা অনেক বড়, জনঘনত্বও বেশি, কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ নেই। থানার কাজ চলছে সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে। বাংলার গ্রামীণ থানাগুলির সর্বত্রই এই অবস্থা। উদাহরণ হিসেবে কমিশন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা থানার উল্লেখ করেছে কমিশন। ওই থানায় মাত্র ১২ জন পুরুষ কনস্টেবল এবং চার জন মহিলা কনস্টেবল রয়েছেন। আর সিভিক ভলান্টিয়ারের সংখ্যা ১৭০।

সিভিক ভলান্টিয়ারদের অবস্থা নিয়েও বলা হয়েছে রিপোর্টে। কমিশনের পর্যবেক্ষণ, এঁদের কাজ করার ক্ষমতা সীমিত। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নেই। বেতনও অত্যন্ত কম, মাসে ১০ হাজার টাকার নীচে। কাজে উন্নতিরও কোনও সুযোগ নেই এঁদের। তবে স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় এলাকা সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। এই স্কিমের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান হয়েছে বলেও স্বীকার করেছে কমিশন। তবে শাসকদলের কর্মীরাই অনেক বেশি কাজ পান বলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে। অন্য দিকে, কমিশনের ভোট পরবর্তী হিংসারর রিপোর্টে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’র তালিকায় রয়েছেন মহম্মদ আলম নামে ফলতা থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার।
আদালতে যে রিপোর্ট কমিশন জমা দিয়েছে তার ছত্রে ছত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। রিপোর্টে কমিশন জানিয়েছে, রাজ্যের গরিব ও সাধারণ মানুষ পুলিশের উপর আস্থা হারিয়েছে। তদন্তকারী দলের কাছে আক্রান্তেরা প্রায় সকলেই জানিয়েছেন, পুলিশকে ফোন করেও সাহায্য পাওয়া যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের সামনে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ। এর পিছনে রাজনৈতিক চাপও কাজ করছে বলে মনে করছে কমিশন। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত না থেকে পুলিশি ‘নিষ্ক্রিয়তা’কেই কাঠগড়ায় তুলেছেন কমিশনের আধিকারিকরা। রিপোর্টে তাঁদের উল্লেখ, বেশিরভাগ ভুক্তভোগী শাসকদলের গুন্ডাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অথচ পুলিশ অভিযোগকারীদেরই মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের দিয়ে মামলা করিয়েছে। আবার আক্রান্তদের বিরুদ্ধে পরে করা পাল্টা এফআইআর-এ কায়দা করে পুরনো তারিখ দেখানোর দৃষ্টান্তও মিলেছে বলে উল্লেখ করেছে কমিশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.