বুধবার দিনহাটার সভা থেকে কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি কাগজ তুলে ধরে বলেছিলেন, সিবিআই যাকে খুঁজছে তাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। কোচবিহারে মোদীর প্রার্থীর বিরুদ্ধে মানুষ পাচারের অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে।
চব্বিশ ঘন্টা না কাটতেই জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে একই ধরনের কাগজ দেখালেন নিশীথ। বললেন, আমার বিরুদ্ধে ওই কাগজ যদি সত্যি হয়, তা হলে এটাও সত্যি। মানব পাচারের অভিযোগ রয়েছে দিদির লোকের বিরুদ্ধে।
নিশীথ এ দিন বলেন, “যে মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়েছেন, তা আমার কাছে এসে পৌঁছয়নি। আমি পেলাম না, অথচ মুখ্যমন্ত্রী পেয়ে গেলেন সিবিআইয়ের চিঠি! এটা ঠিক বুঝতে পারলাম না।” এর পরই রবি ঘোষের বিরুদ্ধে চিঠিটি সংবাদমাধ্যমকে দেখান নিশীথ। এমনকী তিনি এও জানান, এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করার কথাও ভাবছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সিবিআইয়ের নামে দুটি সরকারি নোটিস গত কয়েক মাস ধরে কোচবিহারে তথা সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। একই ধরনের দেখতে দুটি নোটিস। তার একটি নিশীথের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ রয়েছে, অন্যটিতে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে। কিন্তু এর সত্যতা যাচাই করা যায়নি। এমনকী সিবিআইও প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি এ ব্যাপারে দেয়নি।
প্রসঙ্গত, চার পাঁচ মাস আগে পর্যন্ত কোচবিহারে যুব তৃণমূল সভাপতি ছিলেন নিশীথ। তিনি অভিষেকের লোক বলেই জেলায় পরিচিত ছিলেন। দলের মূল সংগঠনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে তাঁর দ্বৈরথও ছিল সুবিদিত। নিশীথের প্রতাপ এমনই ছিল যে পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে জিতিয়ে এনেছিলেন তিনি। কিন্তু আচমকাই অভিষেকের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে নিশীথের। এবং এখন তা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বুধবার কোচবিহারে এক জনসভায় নিশীথের বিরুদ্ধে সোনা পাচারের অভিযোগ তোলেন অভিষেক। আবার তার পাল্টা হিসাবে নিশীথ বলেন, “এতোদিন জানতাম চোরের মায়ের বড় গলা, এখন দেখছি চোরের স্বামীরও বড় গলা হয়।”
সন্দেহ নেই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে কোচবিহারের রাজনীতি গরম হয়ে উঠেছে। আগামী এক দুদিনে তা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবার দিনহাটার পর বৃহস্পতিবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় সভা করার কথা মমতার। তার পাল্টা দিতে আবার সাত তারিখ কোচবিহারে রাস মেলার মাঠে সভা করবেন মোদী। তার পর ১১ তারিখ বাংলায় সাত দফার ভোটের প্রথম দফার ভোট হবে এখানেই।
এ দিকে আজ কোচবিহারে এসেই গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো কাগজটি জাল বলে দাবি করেন মুকুল রায় । তিনি বলেন ,”আমার কাছেও এমন কাগজ আছে যা বলে দেবে মুখ্যমন্ত্রীর অন্দরমহলে একজনের বাবার নাম দুই জায়গায় দুরকম।”