গত রবিবার খড়্গপুরের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, বিজেপি সরকার স্কিম (যোজনা) করে চলে। অর্থাৎ মানুষের স্বার্থে পরিকল্পনা করা হয়। আর তৃণমূল মানেই স্ক্যাম অর্থাৎ দুর্নীতি।
বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির সভা থেকে সেই একই শব্দবন্ধে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন শাহ বলেন, “আপনারা যদি স্ক্যাম চান তাহলে দিদিকে ভোট দিন। আর যদি স্কিম চান, উন্নয়ন চান তাহলে মোদীজির সরকার নিয়ে আসুন।”
স্কিম আর স্ক্যাম নিয়ে বিজেপি আর তৃণমূলের পার্থক্য ব্যাখ্যা করে অমিত শাহ বলেন, “কেন্দ্রের যে প্রকল্পগুলি রাজ্য সরকারের মাধ্যমে বলবৎ করা হয়েছে সেগুলি তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। আর আয়ুষ্মান ভারত, কিষান সম্মান নিধির মতো যে প্রকল্পগুলিতে সরাসরি টাকা ট্রান্সফার হয়, সেগুলি রাজ্য সরকার কার্যকরই করতে দেয়নি। কমিশন ছাড়া এক পা চলে না মমতাদিদির সরকার।”
সন্দেহ নেই জঙ্গলমহলে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অভাব অনটনের জনপদে সাধারণ মানুষ তা নিয়ে তিতিবিরক্ত তার টের পাওয়া গিয়েছিল পঞ্চায়েত ভোটেই। সেই সময়ে একাধিক ব্লকে তৃণমূলের খারাপ ফলের পর দলের অভ্যন্তরীণ ময়নাতদন্তেই উঠে এসেছিল সেই দুর্নীতির কথা। দেখা গিয়েছিল, সরকারি প্রকল্প মানুষের কাছে পৌঁছনর বদলে স্থানীয় নেতারা ফুলে-ফেঁপে উঠেছেন। লাইন দিয়ে কুড়ে ঘরে মাঝে হয়তো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে প্রাসাদোপম বাড়ি। সামনে হয়তো দাঁড়িয়ে আছে দামী এসইউভি। যাঁদের পাতে ভাত জোটে না তাঁদের তো ক্রোধ হবেই। তারপর দেখা গিয়েছে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি ধসিয়ে দিয়ে জঙ্গলমহল জয় করেছে বিজেপি। একুশের ভোটে তৃণমূলের সেই দুর্নীতিকেই স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেন শাহ।
বিজেপির ইস্তেহারে উল্লেখ করা আদিবাসী উন্নয়নের কথাও এদিন জনসভায় বলেন শাহ। প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি বলেছেন, “দিদি বলেছিলেন জঙ্গলমহল হাসছে। কিন্তু এখানকার বেকার ছেলে-মেয়েরা চাকরি না পেয়ে যন্ত্রণায় ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন। বিজেপির সরকার এলে জঙ্গলমহলে প্রতি পরিবার পিছু এক জনের চাকরি নিশ্চিত করা হবে।” তা ছাড়া জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের জন্য পৃথক এইমস হবে বলে জানান শাহ।