মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার জানিয়েছিল, এ বার থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন ২৩ জানুয়ারি ‘পরাক্রম দিবস’ হিসাবে পালিত হবে দেশ জুড়ে।
রাতে সরকারের শীর্ষ সূত্রে জানা গেল, সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে হাওড়া কালকা মেলের নতুন নামকরণ করা হয়েছে—‘নেতাজি এক্সপ্রেস’। কেন বেছে বেছে কালকা মেলের নামকরণ নেতাজির নামে করা হল?
১৮৬৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া মেল বলে এই ট্রেন যাত্রা শুরু করেছিল। ১৯৪১ সালের ১৬ জানুয়ারি মধ্য রাতে তাঁর এলগিন রোডের বাড়ি থেকে পালিয়ে সোজা বিহারের গোমো স্টেশনে পৌঁছেছিলেন। তার পর এই ট্রেনে উঠেই তিনি নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন।
রেল বোর্ডের ডেপুটি ডিরেক্টর জানিয়েছেন, জরুরি ভিত্তিতে ১২৩১১/১২৩১২ হাওড়া কালকা মেলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২৩ জানুয়ারি কলকাতায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জাতীয় গ্রন্থাগারে নেতাজির ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তিনি। তার আগে রেল মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সূত্রের মতে, ২৩ জানুয়ারির আগেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে যাবে।
নেতাজির ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনের জন্য ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ওই কমিটিতে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন দিকের দিকপাল ও নেতাজি গবেষকদের রাখা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও কমিটিতে রাখা হয়েছে। আগামী এক বছর ধরে গোটা দেশে ওই কমিটি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পালন করবে।
ভোটের আগে নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালন নিয়ে কেন্দ্রের এই সব উদ্যোগকে অনেকেই রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে দেখতে চাইছেন। তা ছাড়া বাংলাতেও পাল্লা দিয়ে উদযাপনের আয়োজন করছে তৃণমূল সরকার। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, নেতাজিকে নিয়ে ভাবাবেগকে রাজনীতির পুঁজি করতে চাইছে দুই দল। তৃণমূল যেমন বাঙালি আবেগ ও অস্মিতাকে পুঁজি করতে চাইছে, তেমনই বিজেপি একে সাংস্কৃতিক রাষ্ট্রবাদের অঙ্গ করে তুলতে চাইছে। পরাক্রম দিবস পালন, ট্রেনের নাম বদলের সিদ্ধান্তের মধ্যে জাতীয়তাবাদের আবেগ উস্কে দেওয়ার ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।