পশ্চিমবঙ্গের জমিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি করতে বিরাট ষড়যন্ত্র করেছিল জেএমবি জঙ্গি সংগঠন। এখনকার পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান শহরের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের (২০১৪) তদন্তে সেই তথ্য উঠে এসেছিল গোয়েন্দাদের হাতে। তখনই জানা যায়, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় অসমেও জাল বিছিয়েছে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনটি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের একবার অসমের মাটিতে নাশকতা ছড়ানোর বিশেষ রিপোর্ট উঠে এসেছে। এতে দাবি করা হয়েছে, স্থানীয় কিছু কট্টরপন্থী ইসলামিক সংগঠনের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগসাজশের। পাশাপাশি অসমের সবথেকে বড় জঙ্গি সংগঠন আলফা (স্বাধীনতা) ও মাওবাদীদের সম্পর্কের কথাও বলা হয়েছে। রিপোর্ট বলছে, অসমে আলফার পাশাপাশি মাথাচাড়া দিচ্ছে মাওবাদীরা। জানা গিয়েছে, মাওবাদীরা খোলাখুলিভাবে সমর্থন দিচ্ছে কট্টরপন্থী ইসলামি ধর্মীয় সংগঠনকে। এরা সরকারের প্রতিনিয়ত সমালোচনা করে। এসবের পাশাপাশি, চলছে অস্ত্র পাচার।
অসমে অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী ( এনআরসি ) আপডেট করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতির সম্পূর্ণ ফায়দা লুঠতে চাইছে মাওবাদী সংগঠন। এই বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জি নিউজ সংবাদ। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, শীর্ষ মাও নেতাদের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম (আলফা)র যোগসাজশ বাড়ছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র থেকে রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুধু আলফা নয়, স্থানীয় কিছু কট্টরপন্থী মুসলিম সংগঠন এতে জড়িত।
অসম স্বরাষ্ট্র দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ” নতুনভাবে মাথাচাড়া দিচ্ছে মাওবাদীরা। তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে খবর রয়েছে। অসমে মাওবাদীদের দাপট কতটা তা আমরা জানার চেষ্টা করছি। তাদের বাহিনীর শক্তি, হামলার সম্ভবত এলাকা, নেতৃত্বদের সম্পর্কেও জানার চেষ্টা করছি। “
এনআরসি তালিকার চূড়ান্ত খসড়াটি রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। কারণ এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে মাওবাদীরা নিজেদের সংগঠন ছড়াচ্ছে। পাশাপাশি, নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলার বিষয়ে নকশা তৈরির উপর মাওবাদীরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাওবাদীদের প্রায় পাঁচ হাজার সশস্ত্র ক্যাডার রয়েছে। ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশ জুড়ে দণ্ডকারণ্যের বিশেষ জোনাল কমিটি অত্যন্ত সক্রিয়।
তবে, দলের প্রবীণ নেতাদের বয়স বৃদ্ধি মাওবাদীদের পক্ষে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। অনেক প্রবীণ নেতার মৃত্যু ও আত্মসমর্পণে মাওবাদীরা ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত। দক্ষিণ বস্তার তিন জেলা বিজাপুর, দান্তেওয়াডা ও সুকমা নকশালদের সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্গ। তাদের প্রধান ঘাঁটি।