লোকসভা নির্বাচনের আগে বুধবার রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রথমে শিলিগুড়ি, তারপর ব্রিগেডের মঞ্চে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মোদী। নিয়ে এলেন পরিবারতন্ত্রকে। দেশে ৫৫ বছরের কংগ্রেস সরকারের প্রসঙ্গ তোলার পর মোদী বলেন, ‘এ রাজ্যেও পরিবারতন্ত্র চলছে। পিসি-ভাইপো মিলে সব লুটে নিচ্ছে।’ এই অবস্থা থেকে পশ্চিমবঙ্গকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। এ দিনের সভা থেকে এই বদলেরই ডাক দিলেন মোদী।
শিলিগুড়ির সভায় যেভাবে সরাসরি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছিলেন, সেরকম অবশ্য দেখা যায়নি ব্রিগেডের মঞ্চে। এই সভা থেকে মূলত নিজের সরকারের ৫ বছরের রিপোর্ট কার্ড পেশ করেন মোদী। তার মধ্যেই বালাকোট নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মমতার সমালোচনা, পরিবারতন্ত্র নিয়ে মমতা-অভিষেককে কটাক্ষ, আর বাম-তৃণমূলকে এক পংক্তিতে বসিয়ে অস্ত্রের সংস্কৃতি নিয়ে খোঁচা, এই তিনটি বিষয় তুলে আনেন মোদী।
বালাকোটে বায়ুসেনার হামলার পর মমতা বহুবার বলেছেন, ওই হামলায় কত জঙ্গি নিহত হয়েছে, তার জবাব দিন মোদী। এই প্রসঙ্গে এ দিন মোদী বলেন, এয়ার স্ট্রাইকের উপর কে সন্দেহ প্রকাশ করেছে, জঙ্গিদের লাশের সংখ্যা গুনতে কে বলেছে? সুপুত্রদের ( পড়ুন সেনাদের ) কাছ থেকে প্রমাণ চাওয়ার পাপ কে করেছে? সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিজেপি সরকার যেভাবে লড়াই করেছে, তা করার হিম্মত কারও ছিল না বলেও দাবি করেন মোদী। এমনকী এ দিনের ব্রিগেড থেকেই ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেডে বিরোধী দলগুলির প্রসঙ্গ তুলে এনে মোদী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্রিগেডের মঞ্চে দেশের সব জায়গা থেকে নেতাদের ধরে এনেছিলেন। তাঁরা এসে মোদীকে গালমন্দ করলেন। মোদীর দোষ বের করলেন।” তারপরেই উপস্থিত জনতার উদ্দেশে মোদীর হুঙ্কার, “যদি সবাইকে চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া অন্যায় হয়, কৃষকদের সুবিধা করা অন্যায় হয়, গরিবদের ঘর-গ্যাসের সুবিধা দেওয়া অন্যায় হয়, তাহলে আমি দোষী।”
এরপরেই পরিবারতন্ত্রের কথা তুলে আনেন মোদী। বলেন, ৫৫ বছর ধরে একটা পরিবার ( পড়ুন গান্ধী পরিবার ) দেশের মানুষের সব লুটেছে। কিন্তু শেষ ৫ বছরে সেই পরিবারের দুর্নীতিকেই সামনে নিয়ে এসেছি আমরা। তাঁরা সবাই এখন জামিনে রয়েছেন। এরপরেই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উপরেও বংশবাদের অভিযোগ আনেন মোদী। তিনি বলেন, “এ রাজ্যেও এখন পরিবারতন্ত্র চলছে। পিসি-ভাইপো মিলে সব লুটে নিচ্ছেন। কিন্তু বেশিদিন তা চলতে দেওয়া যাবে না। রাজ্যে পরিবর্তন আনতে হবে।” বাংলার মানুষ যে আর তৃণমূল সরকারের অত্যাচার সহ্য করবে না, সে ব্যাপারেও এ দিনের সভায় দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দেন মোদী। তিনি বলেন, যতদিন না এই পরিবর্তন হচ্ছে, ততদিন তিনি চুপ করে বসে থাকবেন না। বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিয়ে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান করেন প্রধানমন্ত্রী।