কমিশনের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাতেই শেষ এ রাজ্যের ভোট প্রচার। সন্ধেবেলা দমদম সেন্ট্রাল জেলের মাঠে জনসভা করতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গোটা বক্তৃতায় আক্রমণ শানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আরও একবার জানিয়ে দিলেন, ২৩ মে ৩০০-র বেশি আসন নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসছেন তিনি। এ দিন মোদীর হেলিকপ্টার যখন নামছে, সমাবেশে আসা জনতা তখন মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। আর পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় এ বার জ্বলছে, বিজেপি-বিজেপি বলছে। দমদমে এসেছি দম দেখাতে।”
এ দিন বিকেলে মথুরাপুরে জনসভা করার পর দমদমে আসেন মোদী। সেখানে বাংলার নির্বাচনে হিংসা নিয়ে সরব হন প্রধানমন্ত্রী। উদাহরণ দিয়ে বোঝাতে যান, পাকিস্তানে বাংলার থেকে ভাল ভোট হয়। তাঁর কথায়, “পাকিস্তানে এত সন্ত্রাসবাদী, তবু পঞ্চায়েত আর লোকসভা ভোট হয়েছে শান্তিতে। অথচ বাংলায় সব দফায়, সব জেলায়, সব আসনে হিংসা আর হিংসা। আর এর জন্য দায়ী দিদির অহঙ্কার।”
মমতাকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে মোদী বলেন, “দিদি আপনি বাংলাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভেবেছেন। আপনি ভুল করছেন।” নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র সচিব অত্রি ভট্টাচার্য এবং এডিজি সিআইডি রাজীব কুমারকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কমিশন ঘোষণা করে, প্রচার শুক্রবারের বদলে শেষ হবে বৃহস্পতিবার রাত দশটায়। রাতেই সাংবাদিক বৈঠক করে কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মমতা। স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, মুকুল রায়-সহ বিজেপি নেতাদের নির্দেশে কমিশন চলছে। বৃহস্পতিবার মথুরাপুরের জনসভায় দাঁড়িয়ে আরও একধাপ এগিয়ে বলেছেন কমিশন বিজেপি-র ভাই। সেই প্রসঙ্গ টেনেই মোদী বলেন, “আজকে নির্বাচন কমিশনকে গালি দিচ্ছেন। কিন্তু মনে রাখবেন বামেরা কী করত বাংলায়। যদি কমিশন এগারোর বিধানসভায় কড়া হাতে ভোট না করাতো, তাহলে আপনি আজকে মুখ্যমন্ত্রী হতেন না।”
মমতার সঙ্গে তাঁর ভাইপোকেও আক্রমণ শানান শেষ প্রচারে। বলেন, “দিদি ভাবছেন ওঁর কাছে সুপ্রিম পাওয়ার আছে। কিন্তু ভুলে ভাবছেন। জনগণই সুপ্রিম। দিদি মনে রাখবেন, বাংলা কিন্তু আপনার আর আপনার ভাতিজার জমিদারি নয়।”
ধারাবাহিক ভাবে নরেন্দ্র মোদীকে মিথ্যেবাদী প্রাইম মিনিস্টার বলে আক্রমণ করছেন মমতা। দমদমের জনসভায় দাঁড়িয়ে পাল্টা এ দিন মোদী বলেন, “দিনকে রাত করছেন দিদি। কিন্তু সত্যিটাকে বদলানো যায় না।
এ দিন সেন্ট্রাল জেল মাঠে উপচে পড়া ভিড় হয়েছিল মোদীর সভায়। কিন্তু দেখা যায় মোদী মঞ্চে ওঠার পরই মাঠ ছাড়তে শুরু করেন কাতারে কাতারে মানুষ। এটা কিসের ইঙ্গিত তা অবশ্য বোঝা যাবে ভোটের দিনই। অনেকের মতে, মোদেরর টানেই এসেছিলেন মানুষ। তাঁকে দেখেই আবার ফিরে গিয়েছেন। আবার অনেকের মতে, প্রধানমন্ত্রী এলে একটা হুজুগ থাকেই, সেটা সবসময় ভোট বাক্সে প্রতিফলিত নাও হতে পারে।