মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বাংলায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গলমহলের মুখে হাসি ফুটেছে। সেখানকার মেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে। সরকারের থেকে সাইকেল পাচ্ছে। কিন্তু সেই জঙ্গলমহলে দাঁড়িয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করলেন, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে দুঃখের খবর পাচ্ছেন তিনি।

সেটা কী?

সোমবার তমলুক ও ঝাড়গ্রামে সভা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। ঝাড়গ্রামের সভায় তিনি বলেন, “এই ভূমি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আশীর্ব্বাদ ধন্য পবিত্র ভূমি। তিনি মহিলাদের সামাজিক অধিকারের জন্য কাজ করেছিলেন। অথচ বিদ্যাসাগরের জন্মভূমি থেকেই খারাপ খবর পাচ্ছি। এখান থেকে মেয়ে পাচার হচ্ছে! যা শুনে দুঃখ হচ্ছে।”

মেয়ে পাচার ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কেন্দ্র যে কঠোর আইন প্রনয়ণ করেছে এ প্রসঙ্গে সে কথার উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে অভিযোগ করেন, বাংলায় ওই আইনের ঠিক মতো বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

জঙ্গলমহলের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকা থেকে গরিব পরিবারের মেয়ে পাচারের অভিযোগ মাঝে মধ্যেই ওঠে। প্রধানমন্ত্রী সে ব্যাপারে আঙুল তুলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

শুধু মেয়ে পাচার নয়, একাধিক বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে এ দিন কাঠগড়ায় তুলতে চান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রেশনের মাধ্যমে মানুষকে সস্তায় চাল গম দেওয়ার জন্য কেন্দ্র মোটা টাকা রাজ্যকে পাঠায়। কিন্তু সেই রেশনের টাকা থেকেও তোলা তুলছে তৃণমূলের এজেন্টরা। জঙ্গলমহলের মানুষকে রেশনে খারাপ চাল সরবরাহ করা হচ্ছে। এমনকী এও শোনা যায় যে গরিব পরিবারের রেশন কার্ডও নাকি আটকে রাখে তৃণমূলের এজেন্টরা। বুঝে পাইনা মেয়েদের সঙ্গে, গরিবদের সঙ্গে দিদির এতো শত্রুতা কেন?

পঞ্চায়েত ভোটে এই ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে খারাপ হয়েছিল তৃণমূল। পরে ময়নাতদন্তের পর তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও জানতে পেরেছিলেন, গণবন্টন ব্যবস্থায় দুর্নীতি পরাজয়ের বড় কারণ। স্থানীয় স্তরে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তৈরি হয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

সেই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকেই এ দিন আরও হাওয়া দিতে চান মোদী। তিনি বলেন, বাংলায় তৃণমূলের এজেন্ট ছাড়া একটাও কাজ হয় না। সরকারি পরিষেবা পেতে, ব্যবসা করতে, কাজ করতে গেলেই এজেন্টদের টাকা দিতে হয়। গরিবের টাকা খেয়ে নিচ্ছে তৃণমূল।

বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, জঙ্গমহলে মোদীর এটাই শেষ প্রচার নয়। আগামী ৯ তারিখ ফের পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় প্রচারে যাবেন মোদী। তাঁর পাশাপাশি জঙ্গলমহলে প্রচার বাড়াবেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.