তৃণমূলের যিনি দল চালাচ্ছেন, তিনি লন্ডনে না সুইৎজারল্যান্ডে, খোঁজ নিন না: খোঁচা মুকুলের

বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তকে কেন্দ্র করে যে ঘটনা পরম্পরা শুরু হয়েছে তাতে তৃণমূল অস্বস্তিতে পড়েছে সন্দেহ নেই। সেই কাটা ঘায়ে লঙ্কার গুঁড়ো দিতে নেমে পড়লেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।

রবিবার দুপুরে তৃণমূল ভবনে বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলরদের বৈঠকে ডাকেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ওই বৈঠকে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়। বলা হয়, দল বিরোধী কাজ করেছেন সব্যসাচী। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি।

এর পর রাতে সল্টলেকের বিএফ ব্লকে সুইমিং ক্লাবে সব্যসাচীর সঙ্গে নৈশভোজ করেন মুকুল রায়। তার পর তাঁকে পাশে নিয়েই বলেন, “তৃণমূলের আবার শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি! খায় না মাথায় মাখে! আমার থেকে বেশি ভাল তৃণমূলকে কেউ চেনে? কেউ জানে, তৃণমূল কী ভাবে চলে? এই তো যিনি এখন তৃণমূল চালাচ্ছেন, খোঁজ নিয়ে দেখুন না, তিনি লন্ডনে রয়েছেন না সুইৎজারল্যান্ডে?”

তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতাতেই রয়েছেন। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও রয়েছেন কলকাতায়। মুকুলবাবু কার কথা বললেন, তা স্পষ্ট নয়। তৃণমূলের তরফে এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও (এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত) পাওয়া যায়নি।

তিনি যে সব্যসাচীর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন এ দিন বিকেলে তা আগাম জানিয়ে দেন মুকুলবাবু। পরে সুইমিং ক্লাবে সব্যসাচীকে পাশে নিয়ে তিনি বলেন, “আমি এখানে বিজেপি নেতা হিসেবে আসিনি। সব্যসাচী আমার পরিবারের সদস্য। আমি ওঁর দাদা। সেই হিসাবে এসেছি।”

বিধাননগরের মেয়র পদ থেকে সব্যসাচীকে সরানোর প্রক্রিয়া রবিবার বিকেল থেকে শুরু করে দেয় তৃণমূল। আপাতত ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় পুরসভার কাজ চালাবেন বলে ঘোষণা করা হয়। তা নিয়েও এ দিন তৃণমূলকে অস্বস্তিতে ফেলার চেষ্টা করেন মুকুলবাবু। রাজারহাট নিউটাউন এলাকার দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা ছিলেন তাপস।

এ দিন মুকুলবাবু বলেন, ২০১১ সালে তৃণমূলে কেউ সাহস দেখিয়েছিল তাপস চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর। সব্যসাচী দাঁড়িয়েছিল, তাপসকে হারিয়েছিল। ২০০৮ সালে রাজারহাটে তৃণমূলের এক কর্মী খুন হয়েছিলেন। তাপসের কল্যাণে তৃণমূলের কেউ তাঁকে মাটি দিতে যায়নি। আমরা দাদা-ভাই গিয়েছিলাম, আমি আর সব্যসাচী।

তৃণমূলের এক নেতার কথায়, বোঝাই যাচ্ছে আগাম স্ক্রিপ্ট মেনেই মঞ্চস্থ করছেন মুকুলবাবু ও সব্যসাচী। তৃণমূল এ সবকে গুরুত্ব না দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.