পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ শেষ হতে তখন আরও তিন ঘন্টা বাকি। ঝাড়গ্রামের সভা থেকে ভোটের পূর্বাভাস জানিয়ে দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্নায়ুযুদ্ধে তৃণমূলকে চাপে ফেলে দিতে বললেন, “দিদি বুঝে গেছেন, দশটাও আসন পাবেন না! দশের চৌকাঠ পার করতেই তাই দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন। আসলে ভয় পেয়েছেন দিদি।”

এখানেই থামেননি মোদী। একটি ডিটারজেন্টের বিজ্ঞাপন-স্লোগান ধার নিয়ে নাটকীয় ভাবে বলেন, “ডর আচ্ছা হ্যায়। দিদি কি ডর আচ্ছা হ্যায়। মানুষ যখন গণতন্ত্রের ভয় পায়, আইনের ভয় পায়, জনমতের ভয় পায়, তখন সেই ভয় কল্যাণের জন্য।”

ঝাড়গ্রাম-মেদিনীপুরে এ দিন মোদী-দিদি শঠে শাঠ্যং হয়েছে। গোপীবল্লভপুরের সভা থেকে মমতা যেমন বলেছেন, দিদির নখের যোগ্য হতে পারবেন না মোদী। তখন ঝাড়গ্রামের মঞ্চে তারিয়ে তারিয়ে মমতাকে কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গত বছর এই ঝাড়গ্রাম ও লাগোয়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় পঞ্চায়েত ভোটে ভাল করেছিল বিজেপি। এতটাই যে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি পরাস্ত হয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই মোদীর সভাতেও এ দিন সেই উদ্দীপনা দেখা যায়।

তাতে উৎসাহিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও পর্যন্ত বাংলায় যা ভোট হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের গুণ্ডা-হার্মাদদের ভয় উপেক্ষা করে মানুষ ভোট দিচ্ছেন। বিপুল সংখ্যায় ভোট পাচ্ছে বিজেপি। বোঝা যাচ্ছে, বাংলায় দিদির ধমকানো, চমকানোর রাজনীতি আর হালে পানি পাচ্ছে না। এ বার মানুষের ধমক, চমক খেতে হবে। তাঁর কথায়, “ বাংলায় গুণ্ডাতন্ত্র চালাচ্ছিলেন দিদি। কিন্তু দিদির পায়ের তলায় মাটি সরে গিয়েছে। পতন হয়েই গিয়েছে। ভোটের ফলেই বোঝা যাবে গো হারা হারছে তৃণমূল।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা ঠিক যে ভাবে প্রতিটা সভায় বলেন, উত্তরপ্রদেশে কুড়িটাও আসন পাবে না বিজেপি, মধ্যপ্রদেশে গোল্লা পাবে ইত্যাদি। এবং তা বলে বাংলায় ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। এ দিন প্রচারে এসে তাই করেছেন মোদী। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে ঝাড়গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সভা শুরু হওয়ার আগে এ দিনও রাজ্য নেতাদের থেকে রিপোর্ট নেন মোদী। এর আগে যে ১৮ টি আসনে ভোট হয়েছে, সেখানে কী সম্ভাবনা রয়েছে তাও বিশদে জানতে চান তিনি। তার পরেই জয়ের প্রত্যয় দেখান প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.