তেইশের পরেই তালা লাগবে ভাইপোর অফিসে: ডায়মন্ড হারবারে মোদী

 নরেন্দ্র মোদী সভা করবেন ডায়মন্ড হারবারে। এটুকু ঘোষণার মধ্যেই ঝড়ের পূর্বাভাস ছিল।

হলও তাই। বুধবার ডায়মন্ডহারবারের সভা থেকে নাম না-করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রীতিমতো হুঁশিয়ার করে বললেন, ‘২৩ মে-র পরেই তালা লেগে যাবে ভাইপোর অফিসে।’

প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার এ দিন বারো আনাই জুড়ে ছিল বুয়া-ভাতিজা তথা পিসি-ভাইপোর উদ্দেশে আক্রমণ। তিনি বলেন, পিসি-ভাইপোর প্রশাসনিক মডেল বাংলায় ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করেছে। সেই ভয় থেকে মুক্ত কেবল তারাই, যারা তোলাবাজি করে, মেয়ে পাচার করে, গরু পাচার করে। ওই ভয় থেকে মুক্ত কয়লা মাফিয়া, বালি মাফিয়া।

এর পরই ভাইপোর বিরুদ্ধে সরাসরি জমি দখলের অভিযোগ আনেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “শুনেছি ভাইপো নাকি রাস্তা দখল করে নিজের অফিস বানিয়েছে। আর দিদি তোলার টাকা থেকে এতো কামিয়েও আশ মিটছে না। রাস্তা দখল করছে ভাইপো! কিছু তো লজ্জা থাকা উচিত!”

প্রধানমন্ত্রীর এই উত্তপ্ত বক্তৃতার সঙ্গে এ দিন সঙ্গত করছিল সভাস্থলের ভিড়ও। তাতে আরও উজ্জীবিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পিসি-ভাইপোর গ্যাং বাংলাকে বদনাম করে দিয়েছে। এখন ভয় পেয়ে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা নেওয়ার কথা বলছে। কিন্তু তোমার ভাইপোর এলাকায় দাঁড়িয়ে বলছি, তোমার তোলাবাজির জায়গা অত্যাচারের মাটিতে দাঁড়িয়ে আজ বক্তৃতা দিচ্ছি ওই ধমকিতে মোদী ভয় পায় না। এ বার ভোটে ভাইপোর ডাব্বা গুল হবে।”

ডায়মন্ড হারবারে এ দিন মোদীর সভার পরে কাল সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা করার কথা। মোদীর এই সব আক্রমণের জবাব কাল তিনি দিতে চাইবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যেই ভাইপোর বিরুদ্ধে মোদীর সমালোচনার জবাব এক প্রস্ত তিনি দিয়েছেন। অভিষেককে দলের আর পাঁচ জন রাজনৈতিক কর্মীর সঙ্গে তুলনা টেনে মমতা বলেছেন, তাঁকে দেখেই রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল যুব তৃণমূল সভাপতির। এমনকী তাঁকে রাজ্যসভা থেকে মনোনীত করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও ডায়মন্ড হারবার আসন ছাড়তে চাননি অভিষেক।

তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, যে হেতু নির্বাচনের সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট এগিয়ে এসেছে, তাই দুই পক্ষের আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণের ভাষাও এখন আরও উগ্র হবে বলেই আন্দাজ করা যাচ্ছে। কারণ, শেষ ধাপে পৌঁছে প্রত্যেকেই মরিয়া।

মোদী অবশ্য এ দিন শুধু ডায়মন্ড হারবার আসনের কথাই বলেননি। বোঝাতে চেয়েছেন, জয়নগর আসনের উপরেও নজর রয়েছে বিজেপি-র। দুই আসনেই তাঁদের সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.