মার্চের ২৭ তারিখ কালীঘাটের বাড়ি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক ছ’দিনের মাথায় সেই ইস্তাহার নিয়ে এক ডজন প্রশ্ন তুলল বিজেপি। মুরলীধর সেন লেনের বিজেপি রাজ্য দফতর থেকে রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রবীণ সাংবাদিক স্বপন দাশগুপ্ত সাংবাদিক সম্মেলন করে ইস্তাহার নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন কালীঘাটের দিকে।

এ দিন ফের পুলওয়ামা এবং বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইকের পর মমতার মন্তব্যকে টেনে আনে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়, “পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর উনি বলেছিলেন কেন তদন্ত না করে অন্যের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। বালাকোটে বিমান হানার পর ক্ষয়ক্ষতির হিসেব চেয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে সরকারে এলে পাকিস্তানের প্রতি এই নরম মনোভাব নিয়ে কী হবে তাঁর বিদেশনীতি? জনগণকে জানাক তৃণমূল কংগ্রেস।”

তৃণমূল স্লোগান দিয়েছে, এ বার বাংলায় বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ। টিপ্পনির সুরে স্বপনবাবু বলেন, “বিয়াল্লিশটি আসন জিতে কি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়?” এ দিন বিজেপি প্রশ্ন তোলে, বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে? সেই সঙ্গে কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও মমতাকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি রাজ্যসভার সাংসদ। প্রসঙ্গত, ইস্তাহার প্রকাশের দিন দিদি জঙ্গলমহলের সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গ তুলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছিলেন, নতুন সরকার কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করবে। এও বলেছিলেন, তিনি এক মাস কাশ্মীরে গিয়ে থাকবেন। এ দিন বিজেপি-র তরফে মমতার উদ্দেশে প্রশ্ন তোলা হয়, “ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক আবদুল্লাহ বলেছেন, কাশ্মীরের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নিয়ে এসে ব্রিগেডে সভা করেছিলেন। এখন তিনি বলুন, তিনিও কি এই বক্তব্যকে সমর্থন করেন?”

দুর্নীতি নিয়েও মমতা এবং তাঁর দলের বিরুদ্ধে কড়া তোপ দাগে বিজেপি। বিমানবন্দর কাণ্ডের কথা উল্লেখ করে স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, “এখন বাংলায় তো ভিআইপিদের ব্যাগে কিছু থাকলেও তা চেক করা যায় না। নরেন্দ্র মোদীর সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছে। এখন ব্যাক গিয়ার দেওয়ার কোনও জায়গা নেই।” তাঁর কথায়, “এটা কোনও পাড়ার নির্বাচন নয়। এটা গোটা দেশের নির্বাচন। আগামী দিনে দেশ কোন পথে চলবে তা ঠিক হবে এই নির্বাচনে।”

বিজেপি-র এই সাংবাদিক সম্মেলনের পাল্টা অবশ্য তৃণমূল সরকারিভাবে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “পাকিস্তানের প্রতি কে নরম তা গোটা দেশ জানে। সবাই জানে কে চুপি চুপি নওয়াজ শরিফের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.