মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্ল। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর কুর্সি থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি। তবে বিধায়ক পদ ছাড়ছেন না। নবান্ন সূত্রে খবর, তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে। তৃণমূল থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।
লক্ষ্মীরতন জানিয়েছেন, রাজনীতি থেকে অবসর চেয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত। লক্ষ্মীরতন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে নাকি দাবি করেছেন, তিনি অন্য কোনও দলে যাবেন না, রাজনীতি থেকেই অবসর নিচ্ছেন। আবার ক্রিকেট মাঠে ফিরতে চান তিনি। কিন্তু ধন্দ থাকছেই কারণ লক্ষ্মীরতন রাজনীতি ছাড়লেও বিধায়ক পদ ছাড়ছেন না, বরং জানিয়ে দিয়েছেন, বিধায়ক হিসেবে নিজের সময়সীমা শেষ করবেন।
হাওড়ার আর এক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের আগামী পদক্ষেপ নিয়েও ধন্ধ রয়েছে। তিনি বারবার দলীয় কর্মপদ্ধতির সমালোচনা করেছেন, অনেকেই বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীর পথে হেঁটে তিনিও তৃণমূলে যোগ দেবেন। ফলে লক্ষ্মীরতন কী করতে চান তা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
সৌগত রায় বলেছেন, লক্ষ্মীরতন যদি সত্যিই মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন, তবে তিনি দুঃখিত হবেন। তৃণমূলের কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, কেন ঠিক ভোটের আগে লক্ষ্মীরতন এভাবে দল ছাড়লেন তাঁরা জানেন না। দল তাঁকে বিধায়ক পদ দিয়েছে, মর্যাদা দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করেছেন, শুধু রাজনীতি নয়, অন্যান্য পেশার মানুষকেও নিয়ে এসে দায়িত্ব দিতে। তাঁরা যথেষ্ট ভাল কাজ করছেন। বিজেপির দেউলিয়া দশা, তাই তারা অন্য় দলের দিকে এভাবে নজর দিচ্ছে। হাওড়ার আর এক মন্ত্রী অরূপ রায় আবার দাবি করেছেন, লক্ষ্মীরতন পদত্যাগ করেছেন বলেই তিনি জানেন না। ঠিক ভোটের আগে জেলা সভাপতির পদ ছেড়ে চলে যাওয়ার অর্থ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সেনাপতির চলে যাওয়ার মত। লক্ষ্মীরতনের সঙ্গে তাঁর মনমালিন্য রয়েছে বলে যে অভিযোগ রয়েছে তা অস্বীকার করেছেন অরূপ। তাঁর বক্তব্য, সম্পর্কে লক্ষ্মীরতন তাঁর ছোট ভাইয়ের মত, দুজনের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে লক্ষ্মী নাকি আগেও তাঁকে বলেছেন, রাজনীতির জন্য তিনি নিজের খেলাধুলোর জগতে নজর দিতে পারছেন না।
বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, নির্দিষ্ট কোনও লক্ষ্যবিহীন দল দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারে না। তৃণমূল তৈরি হয়েছিল সিপিএমের বিরোধিতা করে। কিন্তু ২০১১-য় ক্ষমতায় আসার পর তাদের অস্তিত্ব রক্ষার কোনও কারণই আর নেই। তবে লক্ষ্মীরতন কেন পদত্যাগ করলেন তা তাঁরা জানেন না, সেটা তিনিই বলতে পারবেন। যদিও ইঙ্গিতপূর্ণভাবে শমীক জানিয়েছেন, অনেকের সঙ্গেই তাঁদের কথা চলছে।