দু’লক্ষ টাকা অগ্রিম না দেওয়ায় অ্যাম্বুল্যান্সেই পড়ে কোভিড রোগী! ফের কাঠগড়ায় ডিসান হাসপাতাল

এর আগেও অগ্রিম দু’লক্ষ টাকা জমা না দিলে করোনা রোগীকে (COVID-19 patient) ভরতি নিতে রাজি না হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বাইপাসের ডিসান হাসপাতালের (DESUN Hospital) বিরুদ্ধে। আবারও একই অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ কলকাতার হিন্দুস্তান পার্কের বাসিন্দা শুভ্রা ঘোষ এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে। কেবল ডিসান নয়, তাঁর অভিযোগ উডল্যান্ড হাসপাতালের বিরুদ্ধেও।

জানা গিয়েছে, শুভ্রা দেবীর স্বামী অশোককুমার ঘোষ (৭৯) জুনের প্রথম সপ্তাহে গ্যাস্ট্রো সমস্যা নিয়ে উডল্যান্ড হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। নিয়ম-অনুযায়ী ভরতি সময় তাঁর কোভিড টেস্ট করা হয় এবং টেস্টের ফল নেগেটিভ আসে। দিন সাতেক পরে ফের একবার তার কোভিড টেস্ট করে উডল্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, রিপোর্ট পজিটিভ আসতেই হাসপাতালের ব্যবহার বদলে যায়। অশোকবাবুর পরিবারের লোকেদের জানানো হয়, “এখানে কোভিড চিকিৎসা হয় না। দু’ঘন্টার মধ্যে দ্রুত রোগীকে নিয়ে যান।”

এমন পরিস্থিতিতে চিন্তায় পড়ে যায় অশোকবাবুর পরিবার। দ্রুত সব বিল মিটিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে করে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় ডিসানে। হাসপাতালের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, অগ্রিম ২ লক্ষ টাকা জমা না দিলে রোগীকে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। ওই মুহূর্তে এত টাকা অগ্রিম দেওয়া সম্ভব ছিল না রোগীর পরিবারের পক্ষে।

অভিযোগ, বারবার হাসপাতালকে অনুরোধ করা হলেও তারা অনড় ছিল। শেষমেশ দেশের বাইরে থাকা এক আত্মীয়কে অনুরোধ করেন শুভ্রাদেবী। তাঁর সহায়তায় দু’লক্ষ টাকা হাসপাতালের অ্যাকাউন্টে ঢোকার পরেই চিকিৎসা শুরু হয়। তার আগে পর্যন্ত বৃদ্ধ অশোকবাবু অ্যাম্বুল্যান্সেই পড়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২২ আগস্ট এক নির্দেশিকায় কমিশনের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কোনওভাবেই অগ্রিম নিতে পারবে না কোনও হাসপাতাল। কোনও রোগীকে ফেরানোও যাবে না। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। সেই নির্দেশিকার সূত্র ধরেই আনন্দপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকা খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে

প্রশ্ন উঠছে উডল্যান্ড হাসপাতালের ভূমিকা নিয়েও। যদিও দু’ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে নিয়ে চলে যেতে বলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে উডল্যান্ড কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে নিজেদের জবাব দেওয়ার জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে ডিসান হাসপাতাল। স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে দুই হাসপাতালকেই তাদের বক্তব্য জমা দিতে বলা হয়েছে। আপাতত উডল্যান্ড হাসপাতালকে ১ লক্ষ এবং ডিসান হাসপাতালকে ৪ লক্ষ টাকা জমা রাখতে বলা হয়েছে। এই অভিযোগের শুনানির পরেই সেই টাকার ভাগ্য নির্ধারণ হবে।

প্রসঙ্গত, ডিসান হাসপাতালে ১৫ দিন ভর্তি থাকার পর মারা যান অশোকবাবু। তাঁর বিল হয়, ৮ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা। বিলের অর্থ নিয়েও কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছেন প্রয়াত অশোকবাবুর স্ত্রী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.