নির্মাণ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়ল ‘কর্মতীর্থ’-এর পাঁচিল

নির্মাণকাজ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়ল বাঁকুড়ার জয়পুরের ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্পের পাঁচিলের একাংশ। বাঁকুড়ার জয়পুরের হেতিয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক বিতর্কের পাশাপাশি জমির মালিকানা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

স্থানীয় একাংশের পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বের তরফে ঐ জমি হেতিয়া হাসপাতালের বলে দাবি করা হয়েছে। হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন ও স্থায়ী চিকিৎসকের ব্যবস্থা না করে ঐ জমিতে কেন ‘কর্মতীর্থ’ তৈরী হচ্ছে! তা নিয়ে সরব হয়েছেন তারা। যদিও ঐ দাবী সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন শাসক দলের নেতা থেকে স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরাও।

স্থানীয় বাসিন্দা বংশী দে বলেন, হাসপাতাল কমিটির সম্পাদক থাকাকালীন অসীমানন্দ তীর্থ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এই জমি দান করেছেন। পরে দেখা যায়, ঐ জমিতে পাঁচিল তৈরির কাজ হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতাল নয় ওখানে ‘কর্মতীর্থ’ তৈরী হবে। কিন্তু সেই পাঁচিল তৈরির কয়েক মাসের মধ্যেই তা ধ্বসে পড়ল। কর্মতীর্থ নয়, এলাকার গরীব মানুষের স্বার্থে হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা বেশী দাবি করে তিনি বলেন, এখন কম্পাউন্ডার আর নার্সই হাসপাতাল চালাচ্ছেন। জরুরি প্রয়োজনে বিষ্ণুপুর বা বাঁকুড়ায় ছুটে যেতে হচ্ছে। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রীকে স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ের বাইরে দেখা যায় না বলেও তিনি স্পষ্টতই অভিযোগ করেন।

‘বিতর্কিত’ জায়গার উপর কিভাবে রাজ্য সরকারি প্রকল্পের কাজ শুরু হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপির জয়পুর মণ্ডল-১-এর সম্পাদক নবকুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, কিভাবে হাসপাতালের ঐ জমি হস্তান্তর হল? কোন কৌশলে হস্তান্তর হল? নবনির্মিত পাঁচিল ভেঙে পড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের যেমন করুণ অবস্থা, তেমনি এই আমলে যত নির্মাণ কাজ হয়েছে সব ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, রাজ্য সরকার যেমন যেকোনো সময় ভেঙে যাবে তেমনই এই সব নির্মাণকাজ গুলিও যেকোন সময় ভেঙে পড়বে। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য জায়গার মতো এক্ষেত্রেও শাসক দলের নেতারা ‘কাটমানি’ খেয়েছেন। তাই অল্প দিনের মধ্যেই এই অবস্থা।

যদিও কোতুলপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি বলেন, যে যাই বলুক ঐ জায়গা স্বাস্থ্য দফতরের নয়। স্বামীজি সরকারকে দান করেছেন। আর ঐ দান করা জমিতে কর্মতীর্থের কাজ শুরু হয়েছে। পাঁচিল ভেঙে পড়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এই কাজে তাদের দলের কেউ যুক্ত নয়। যে ঠিকাদার এই কাজের বরাত পেয়েছেন তাকে ডেকে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বলেন, প্রশাসনিক স্তরে খবর পেয়েছি পাঁচিলের গায়ে অতিরিক্ত মাটি ফেলে রাখার কারণেই তা ভেঙে পড়েছে। কর্মতীর্থের জমি বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঐ জায়গাটি হাসপাতালের নয়, এলাকায় স্বামীজি নামে পরিচিত হেতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ঐ জায়গাটি স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতকে দান করেছিলেন। সেই জায়গাতেই কর্মতীর্থ গড়ে উঠছে। হাসপাতাল ও কর্মতীর্থ দুটো পরিষেবাই মানুষ পেতে পারেন সেবিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.