‘জয় শ্রীরাম’ বনাম ‘জয় বাংলা’৷ ভোট পরবর্তী সময় সাক্ষী থেকেছে বাংলা৷ এবার সেই স্লোগানদ্বয় লোকসভার অন্দরেও৷
মঙ্গলবার চলছিল শপথ নেওয়ার পালা৷ শাসক, বিরোধীপক্ষের বিজয়ী প্রার্থীরা শপথ নিচ্ছিলেন৷ তালিকায় সামিল বাংলার সাংসদরাও৷ নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে একে একে এগিয়ে আসছেন দেব থেকে আলুওয়ালিয়া, দিলীপ ঘোষ, সৌমিত্র খানরা৷ বিজেপি সাংসদদের শপথে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনির মাতামাতি৷
সেই স্বর আরও বাড়ছে তৃণমূলের কোনও সাংসদের শপথের সময়৷ এযেন অনেকটা ‘রাম’ এগিয়ে না ‘বাংলা’ তার যুদ্ধ৷ তবে স্লোগান ধ্বনি জমে গেল ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথের সময়৷
ঘোষণা হল অভিষেকের নাম৷ সাদা ধপধপে পায়জামা, পাঞ্জাবিতে শপথের জায়গার দিকে হাসিমুখে এগিয়ে চলেছেন তৃণমূলের এই সাংসদ৷ স্লোগান উঠল ‘জয় বাংলা’৷ তৃণমূলের বাকি সাংসদের ধ্বনিতে তখন আলাদা যোশ৷ সেই স্লোগানেই যেন লুকিয়ে ছিল গেরুয়া শিবিরের ‘জয় শ্রীরামে’র বাড়বাড়ন্ত৷ চলল পালটা ধ্বনির বহর৷ লোকসভা ততক্ষণে স্লোগানের সাড়ম্বর৷
এরই মাঝে শপথের মাইকের সামনে উপস্থিত ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ৷ আপাত গম্ভীর মুখ৷ কাগজ হাতে শপথের আগেই সকলকে ধন্যবাদ দিলেন৷ সঙ্গে বললেন, ‘‘সভায় এত জনপ্রিয়তা বোধহয় মোদীজীরও নেই৷ আপনাদের এই ভালেবাসা ও আর্শীবাদ যেন এইভাবেই বজায় থাকে৷’’ তারপরই গড়গড়িয়ে পড়ে ফেললেন শপথবাক্য৷ শেষে বললেন, ‘‘জয় বাংলা, জয় হিন্দ৷’’ পাসটা শুরু হয় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি৷
বিতর্কের সূত্রপাত বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ঘিরে৷ প্রচারে মূলত এই ধ্বনিকেই ব্যবহার করেই দেশজুড়ে বৈতরণী পেরিয়েছে গেরুয়া শিবির৷ এই ধ্বনির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিভেদের সূত্র৷ অভিযোগ তৃণমূল সুপ্রিমো৷ তাইতো ‘জয় শ্রীরাম’ শুনেই ভোটের আগে কনভয় থামিয়ে কড়া হওয়ার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ভোটের পরেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে৷ এই স্লোগানের বিরোধী হওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেন মমতা৷
পদ্ম শিবির থেকে উড়ে এসেছে নানা ট্রোল৷ মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা সুস্থ্য নয় বলে দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়৷ একাধিক ট্যুইট করেন তিনি৷ গেরুয়া শিবিরের অন্যান্যরাও মুখ্যমন্ত্রীকে ছেড়ে কথা বলেননি৷ বিজেপির স্লোগানের পালটা তৃণমূলের ধ্বনি হয়, ‘জয় বাংলা, জয় হিন্দ৷’
সেই তরজা এখনও চলছে৷ গণতন্ত্রের পীঠস্থানেও তারই রেশ৷