গোরু পাচারের নয়া রুট হলদিবাড়ি

হলদিবাড়ি, ১১ মে : হলদিবাড়ি ব্লকের বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা চোরাকারবারিদের নতুন রুট হচ্ছে। গোরু, ফেন্সিডিল, গাঁজা, বাইক পাচার করে কোটি কোটি টাকার কারবার চালাচ্ছে একটি চক্র। কোচবিহার জেলার প্রান্তিক ব্লক হলদিবাড়ির দক্ষিণে বাংলাদেশ। ব্লকের প্রায় ৩৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাংলাদেশের সীমান্ত অবস্থিত। তিস্তানদীর অংশ বাদ দিয়ে পুরো এলাকা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা থাকলেও সীমান্ত দিয়ে গোরু সহ বিভিন্ন সামগ্রী পাচারের অভিযোগ উঠছে।

হলদিবাড়ি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবছর আগে সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক থেকে ৫৫০ কেজি মণিপুরি গাঁজা উদ্ধার করে হলদিবাড়ি থানার পুলিশ। বছরখানেক আগে তিনটি গোরু সহ এক বাংলাদেশিকে ও কয়েক মাস আগে ডাঙ্গাপাড়া থেকে বাংলাদেশের টাকা সহ একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই বছরের শুরুতেই পারমেখলিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের দুরমুজপাড়ায় বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানদের গুলিতে নিহত হয় এক বাংলাদেশি চোরাকারবারি।

হলদিবাড়ি ব্লক হয়ে তিস্তা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই নদীর গতিপথে বিভিন্ন কারণে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া সম্ভব হয়নি। আর নদীর এই উন্মুক্ত এলাকা পাচারের করিডরে পরিণত হয়েছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশি চোরাকারবারিরা হামেশাই কাঁটাতারের বেড়া কেটে গোরু সহ বিভিন্ন সামগ্রী চোরাচালান করছে। পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি মাসেই ৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের কালীতলা ক্যাম্পের অধীন ৭৮৮/৩/এস  নম্বর পিলারের কাছেই দুবার কাঁটাতারের বেড়া কেটে দেয় দুষ্কৃতীরা। অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের দক্ষিণ বেরুবাড়ির অ্যাডভার্স পজেশনে থাকা প্রায় ৩০টি গ্রামের ২০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় এখনও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া সম্ভব হয়নি। দক্ষিণ বেরুবাড়ির বাকি ১৬ কিমি এলাকায় কাঁটাতার থাকলেও অরক্ষিত এলাকা দিয়ে চোরাচালান চলছেই। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এসব এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে গোরু সহ অন্য সামগ্রী পাচারের ঘটনা ঘটে। সীমান্তের হাটগুলি ও প্রতিবেশী রাজ্য থেকে গোরু কিনে এনে এই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিবাড়ি ব্লকের সীমান্ত এলাকার সক্রিয় ক্যাটল মাফিয়াদের প্রশ্রয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা এখানে আস্তানা তৈরি করছে। কিন্তু এলাকার গোরু পাচারচক্রের পান্ডাদের বিরুদ্ধে কোনো দিনই স্থানীয় গ্রামবাসীদের কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। এমনকি পুলিশ বা বিএসএফ কখনো-কখনো অভিযান চালালেও এদের বিরুদ্ধে টানা অভিযান চলে না। হলদিবাড়ি থানার আইসি দেবাশিস বসু বলেন, হলদিবাড়ি থানার অধীন অধিকাংশ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া আছে। সীমান্ত রক্ষীবাহিনী সবসময় পাহারা দিচ্ছে। তাই এখানে পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য নেই বললেই চলে। বিএসএফের ৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডান্ট এ কে সিং ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সৌজন্যে উত্তরবঙ্গ সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.