ভোট বিপর্যয়ের পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে অভিমান ঝরে পড়ল দিদির গলা থেকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার কালীঘাটের বাড়িতে প্রার্থী এবং জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে সাংবাদিকদের বলেন, “মানুষের জন্য অনেক করেছি। আর না। এ বার একটু দলে বেশি সময় দেব।”
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বেশি করলে আবার একটু…… এখন মনে হচ্ছে একটু বেশিই করে ফেলেছি। এ বার আমি একটু দল করব।” সেই সঙ্গে দিদি এ-ও বলেন, “মানুষের প্রোজেক্ট করতে গিয়ে যারা শুধু নিজেদের প্রোজেক্ট করেছে আমি তাদের জন্যও এ বার একটু কড়া হব।”
লোকসভা ভোট হলেও, এ বারের প্রচারে তৃণমূলের অন্যতম হাতিয়ার ছিল রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কর্মসূচি। দেওয়াল লেখা থেকে বক্তৃতা, সবেতেই জায়গা করে নিয়েছিল সবুজ সাথী, কন্যাশ্রী, যুবশ্রীর মতো প্রকল্প। তৃণমূল ভেবেছিল এগুলো দিয়েই বাজিমাত হবে। আর গ্রামাঞ্চলে এই সব প্রকল্পের সুযোগ পাওয়া মানুষের সংখ্যা বিরাট। কিন্তু দেখা গিয়েছে গ্রামাঞ্চলেই তৃণমূলের ভোটে ধস নেমেছে। গ্রামীন ১৫টি কেন্দ্র জিতে নিয়েছে বিজেপি।
এ দিন খানিকটা আক্ষেপের সুরেই দিদি বলেছেন, “কী করিনি। মরে গেলেও এখন টাকা পায়। মানুষের জন্য সব করে দিয়েছি। সব কমপ্লিট। এ বার দলে সময় দেব।” যদিও পর্যবেক্ষকদের মতে, নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্প ঘোষণা করলেও, নিচু স্তরের নেতারা তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়েও তৃণমূলের পর্যালোচনায় উঠে এসেছিল, দলের ব্লক স্তরের নেতারা সরকারি প্রকল্পের টাকা লুটেপুটে খেয়েছে। দলনেত্রী চেষ্টা করেছিলেন জনতার ক্ষোভ ঠেকাতে। কিন্তু তা এতটাই, যে আটকানো যায়নি। শুধু মেরুকরণ নয়, নিচু স্তরের এই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাও যে জঙ্গলমহল-সহ একাধিক জায়গায় তৃণমূলের ধস নামিয়েছে সেই রিপোর্ট রয়েছে দিদির কাছেও।
যদিও তৃণমূলনেত্রীর ‘মানুষের জন্য অনেক করে ফেলেছি’ বলা নিয়ে দলীয় নেতারা বলছেন, ওটা দিদি রাগের মাথায় বলে ফেলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন্যই কাজ করে এসেছেন। এবং আগামী দিনেও তাই করবেন। এটা নিয়ে অত জলঘোলা করার কিছু নেই।