রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election , West Bengal) ফল প্রকাশ হবে ২ মে, রবিবার। খুব স্বাভাবিক ভাবেই রবিবার সংবাদ মাধ্যমে করোনা নিয়ে কম আলোচনা হবে। সারা দিন জুড়ে শুধুই থাকবে নির্বাচনের ফল প্রকাশ (Election Counting) আর কে কার থেকে এগিয়ে, কে কার থেকে পিছিয়ে এই আলোচনা। পাশাপাশি থাকবে কোন প্রার্থী কেন এগিয়ে কোন প্রার্থী কেন পিছিয়ে। তবে সংবাদ মাধ্যমে নির্বাচন শেষের দিন অর্থাৎ ২৯ এপ্রিল এক্সিট পোলের যে ভবিষ্যৎবাণী ঘোষিত হয়েছে, তার বেশিটা জুড়েই তৃণমূলের (TMC) ক্ষমতায় আসার কথা বলা হয়েছে। এতে খুব স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল খুশি আর বিজেপির (BJP) কিছুটা মুখ ভার। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নির্বাচনের ফল প্রকাশের আগেই প্রার্থী ও দলের নেতাদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করে বলে দিয়েছেন, “দুটি তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে তৃণমূল রাজ্যে আবার ক্ষমতায় আসছে।” আর নির্বাচনের শুরু থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) বলে আসছেন, “এবার ২০০ আসন নিয়ে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসতে চলেছে।” প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi) সব সভাতেই বলেছেন, “২মে দিদি যাচ্ছেন, বিজেপি আসছে।” তাই ফল প্রকাশের আগের দিন কে আসছে আর কে যাচ্ছে তা নিয়ে নেতা থেকে শুরু করে কর্মীদের মধ্যে তুমুল আলোচনা চলছে। সবাই এবার বলছে পরিবর্তন না প্রত্যাবর্তন! পাড়ার চায়ের দোকান থেকে রাজনৈতিক নেতার ড্রইংরুমে এখন এই আলোচনার ঝড় বইছে।
আসলে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে পরিমাণ সভা রাজ্যে করেছেন, এর আগে কোনও প্রধানমন্ত্রী সেটা করেননি। তবে সভা করার দৌড়ে পায়ে আঘাত নিয়েও থাকেননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-র হয়ে রাজ্যে নির্বাচনী সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত, ট্রাজনাথ সিং, যোগী আদিত্য নাথ, জে পি নাড্ডা সহ বিজেপি-র শীর্ষ নেতারা। তবে পায়ে আঘাত নিয়েও মোদী-শাহের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই কাজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন তৃণমূলের যুবনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই দুই শিবিরের কথাই এবারের নির্বাচনে প্রচারের শিরোনামে এসেছে। করোনা সংক্রমণের মধ্যেও তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্ত্ব মানুষের মধ্যে নির্বাচনী লড়াইয়ের একটা সুর বেঁধে দিতে পেরেছেন। আর তার ফলে পাশাপাশি বাড়ির প্রতিবেশীরা হয়ে উঠেছেন পরস্পরের নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী। আর নির্বাচন শেষে, গণনার আগের দিন তাই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা কে কত ভোট জিতবেন সেই আলোচনায় মৌখিকভাবে ও সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোচনায় মশগুল রয়েছেন।
এক্সিট পোলের ভবিষ্যৎবাণী মানতে চান না বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলছেন, “বিজেপি-ই বাংলায় ক্ষমতায় আসছে। আমরা এক্সিট পোল নয়, আসল ফলে বিশ্বাস করি।” এদিকে এক্সিট পোলের ফল শুনে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, ‘এক্সিট পেলে যা বলছে সেটা আমরা আগেই বলেছি। আমরা আবারও বলছি রাজ্যে তৃণমূলই ক্ষমতায় আসছে।” বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা এক্সিট পোলের ওপর মোটেই ভরসা রাখতে পারছেন না। তিনি বলেছেন, “এর আগে বিহারের নির্বাচনের পর দেখেছেন এক্সিট পোল কতটা কী বলতে পারে। আমরা রাজ্যের মানুষদের এবারের বিধানসভা নির্বাচনে যে ভাবে পাশে পেয়েছি, তাতে বলতে পারি আমরাই রাজ্যে ক্ষমতায় আসছি।”