কলকাতা বিমানবন্দরে সেই রাতে কী হয়েছিল? নির্বাচন কমিশন রিপোর্ট চাইল উত্তর ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসকের কাছে।
রাজনৈতিক চাপানউতর চলছিল ক’দিন ধরেই। রবিবার বিকেলে ‘ব্যক্তিগত’ সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই মাত্রাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা আওয়াজ তুলেছিল বিরোধীরাও। বিশেষত বিজেপি-র তরফে দাবি করা হয়েছিল, যেহেতু এখন আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের আওতায়, তাই কমিশনকেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। সত্যিটা আনতে হবে জনসমক্ষে।
সংবাদমাধ্যমের একাংশে খবর পরিবেশিত হয়, গত ১৫ মার্চ বেশি রাতে (তারিখ অনুযায়ী ১৬ মার্চ) অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা নারুলা এবং সঙ্গে একজন মহিলা দু’কিলো সোনা নিয়ে ব্যাঙ্কক থেকে ফেরার সময় কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়েন। তারপর তাঁদের উদ্ধার করতে ময়দানে নামে বিধাননগর পুলিশ। কিন্তু রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিষেক বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনুন। দু’কিলো কেন, দু’গ্রাম সোনা ছিল যদি প্রমাণ করতে পারেন তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।”
বিজেপি-র তরফে বারবার অভিযোগ করা হয়, ওই রাতে বিমানবন্দরে কী হয়েছিল তা প্রকাশ্যে আসা উচিত। এই কারণে গেরুয়া শিবিরের তরফে মুকুল রায়, রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তরা দাবি তোলেন, কমিশনকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। সোমবার দেখা গেল বিমানবন্দর কাণ্ড নিয়ে সেই পথেই এগোচ্ছে কমিশন। রাজ্যের অতিরিক্ত নির্বাচন কমিশনার সৃঞ্জয় বসু বলেছেন, “উত্তর চব্বিশপরগনার ডিও-র কাছে সম্পূর্ণ রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তা এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
আমতলার সাংবাদিক সম্মেলন থেকে একাধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিষেক। অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে কাস্টমসের কর্তারা ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। তিনি দেননি বলেই হেনস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দিল্লির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথাও বলেছিলেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী। এ দিকে বিজেপি-ও নাছোড়। সোমবার দিল্লি থেকে স্বপন দাশগুপ্ত পাল্টা অভিষেকের উদ্ধেশে পাঁচটি প্রশ্ন তোলেন। সেই সঙ্গে প্রবেণ সাংবাদিক স্বপনবাবু বলেন, “এমন কোন নির্বোধ কাস্টমস অফিসার আছেন, যিনি ভিআইপি-র স্ত্রীর কাছ থেকে ঘুষ চাইবেন! গল্পের তো একটা সীমা থাকে!”
এখন দেখার উত্তর ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসক কী রিপোর্ট দেয় কমিশনকে। কমিশনই বা সেই রিপোর্ট পেয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।