৪৮ ঘন্টার মধ্যে বাংলায় জন্য নিযুক্ত বিশেষ কেন্দ্রীয় পুলিশ পর্যবেক্ষক বদলে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু একই সঙ্গে খুলে গেল সম্ভাবনার কিছু দরজাও। প্রশ্ন উঠল, তবে কি ভোটের সময় রাজ্য পুলিশের ডিজি বা কলকাতা পুলিশের কমিশনারকেও বদলে দেবে কমিশন?
মঙ্গলবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিশেষ কেন্দ্রীয় পুলিশ পর্যবেক্ষক হিসাবে বিএসএফের প্রাক্তন ডিজি কে কে শর্মাকে নিয়োগ করেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তার পর চব্বিশ ঘন্টা না কাটতেই কালীঘাটে তাঁর বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ছবি তুলে ধরেছিলেন। তাতে দেখা গিয়েছিল, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আরএসএসের অনুগামী একটি সংগঠনের আলোচনা সভায় গিয়েছিলেন, তৎকালীন বিসিএফের ডিজি কে কে শর্মা। তাই তৃণমূল নেত্রী দাবি করেছিলেন, কে কে শর্মাকে পুলিশ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরানো হোক। নইলে ভোটে পক্ষপাত হতে পারে।
বিবেক দুবে
মমতার পাশাপাশি একই যুক্তি দেখিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন বামেরাও। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকেলেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিশেষ কেন্দ্রীয় পুলিশ পর্যবেক্ষক পদে নতুন মুখ আনা হচ্ছে। কে কে শর্মাকে সরিয়ে ওই পদে নিয়োগ করা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার বিবেক দুবেকে। কে কে শর্মাকে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য পুলিশ পর্যবেক্ষকরা হয়েছে।
গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক জয় দেখছে তৃণমূল। কারণ, মূলত তাদের দাবি শুনে এই পদক্ষেপ করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু অনেকের মতে, এই বদলি অন্য সম্ভাবনার দরজা খুলে দিল। যা তৃণমূলের জন্য স্বস্তিদায়ক নাও হতে পারে। গত পরশু কমিশনের কাছে গিয়েছিলেন বাংলার বিজেপি নেতারা। ওই বৈঠকে মুকুলবাবুরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না মঞ্চের ছবি পেশ করেন কমিশনের কাছে। তার পর বলেন, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র, কলকাতা পুলিশের কমিশনার অনুজ শর্মা, সিনিয়র আইপিএস অফিসার জ্ঞানবন্ত সিংহ তৃণমূলনেত্রীর ধর্না মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। বাংলায় ভোট নিরপেক্ষ করার স্বার্থে নির্বাচনের সময়ে এঁদের সংশ্লিষ্ট পদ থেকে সরাতে হবে। বৃহস্পতিবারও সাংবাদিক বৈঠক করে একই দাবি জানান মুকুলবাবু। বিজেপি সূত্রে খবর, জেলা স্তরে পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে রাজ্য পুলিশের কর্তাদের কোনও তৃণমূল নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি রয়েছে কিনা তা খুঁজে বের করতে নেমেছে বিজেপি। যাতে সেগুলি কমিশনের কাছে পেশ করা যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ভোটের সময় কলকাতা পুলিশের কমিশনার পদ থেকে রাজীব কুমারকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। পরিবর্তে কমিশনার পদে নিয়োগ করা হয়েছিল আইপিএস অফিসার সোমেন মিত্রকে। বিজেপি-র দাবি এ বারও সে রকম পদক্ষেপ করুক কমিশন।
এখন দেখার কমিশন বিজেপি-র দাবিতে কর্ণপাত করে কিনা।