বারাসত কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কাকলিকে পাশে দাঁড় করিয়ে, ক্যামেরার সামনে এক সিআইএসএফ জওয়ান অভিযোগ করলেন, “এদের পার্টির লোক কালকে রাতে আমাদের বলেছে মদ দেবে। আরও সব জিনিসের লোভ দেখিয়েছে।”
ঘটনা দেগঙ্গার ১০৪ নম্বর বুথে। সকালে মধ্যমগ্রামে নিজে ভোট দিয়েই দেগঙ্গা যান কাকলি। খবর পান কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা নাকি সাধারণ ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। ভোট দিতে বলছেন বিজেপি-কে। বুথ চত্বরেই কেন্দ্রীয়বাহিনীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন কাকলি। অভিযোগ করলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা সাধারণ ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে। প্রার্থীর অভিযোগ এবং সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে, এক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের প্রশ্ন করেন, “আমি আপনাদের মেরেছি? আমরা এখানে কারও গায়ে হাত দিয়েছি? এখানে আপনারা কোনও হট্টগোল দেখেছেন?” একাধিক ভোটারকে বলতে শোনা যায়, নাহ! কিচ্ছু হচ্ছে না। শান্তিতে ভোট হচ্ছে ওই বুথে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কাকলিকে বলতে শোনা যায়, “শুনুন। আমি দশ বছরের সাংসদ। আপনাদের কমিটিতে আমি আছি। আপনাদের খাবারের জন্য ৯০ টাকা দেওয়া হয়। আমি এটা বাড়ানোর জন্য দশ বছরে বিশবার সওয়াল করেছি। আর আপনারা এখানে আমাকে অপমান করছেন!” বুথে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সংখ্যা নিয়েও আপত্তি জানান কাকলি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান বিনয়ের সঙ্গেই প্রার্থীকে বলেন, “ম্যাডাম, আপনার যা বলার উপরতলাকে বলুন ! আমাদের দায়িত্ব এখানে থাকা। আমাদের বলে কোনও লাভ নেই।” বুথের মধ্যেই চিৎকার করতে থাকেন কাকলি। “ডোন্ট ডু পলিটিক্স।”
পরে বুথের বাইরে এসে কাকলি বলেন, “এখানকার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা সাধারণ মানুষকে বলছেন বিজেপি-কে ভোট দিতে। আমি গিয়ে বলি, আপনার তো পদ্ম ফুলে ভোট দিতে বলা কাজ না। আপনি কেন করছেন। তখন ‘ঠোক দেনা’ বলে বন্দুক তুলেছে।” কাকলির দাবি, এই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। কমিশনে তিনি অভিযোগ জানাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
এ বারের লোকসভা ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বচসায় জড়ানো তৃণমূল নেতাদের এই প্রথম নয়। প্রথম দফাতেই সিআরপিএফ-এর জওয়ানদের সঙ্গে চড়া গলায় তর্ক করেছিলেন কোচবিহারেরে তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তারপর বালুরঘাটে অর্পিতা ঘোষ, হাওড়ায় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শেষ দফায় কাকলি জড়ালেন বচসায়।