অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকারের চাপের কাছে নতি স্বীকার করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অন্তঃরাজ্য প্রতিনিধিদলের পাঠানো কড়া চিঠি পড়েই করোনা ভাইরাসে (Coronavirus) আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১২৫০। সোমবার বিকেলে, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্য সচিব রাজীব সিংহ (Rajiv Sinha) বলেছেন, “আমাদের কাছে সব জায়গা থেকে তথ্য আসছিল না। এখন সরকারি, বেসরকারি সব ল্যাব থেকে তথ্য আসা শুরু করেছে। ফলে এখন আমরা রোজ মোট আক্রান্তের সংখ্যা জানাতে পারব।” তিনি আরও বলেন, “এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট ১২৫৯ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ জন।”
করোনা সংক্রমণ নিয়ে তথ্য বিভ্রান্তি এড়াতে মুখ্যসচিবকে দেওয়া চিঠিতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র লিখেছেন, “রাজ্য সরকার হাসপাতালগুলিতে আরও ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করুক। দরকার হলে অতিরিক্ত সময় কাজ করার জন্য তাদের ভাতা দেওয়া হোক।” তিনি আরও লিখেছেন, “গত ৩০ এপ্রিল রাজ্য সরকারের প্রকাশিত বুলেটিনে বলা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে(west bengal) ৫৪২টি অ্যাকটিভ কেস রয়েছে। ১৩৯ জন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর ৩৩ জন মারা গিয়েছেন। মোট কোভিড আক্রান্ত ছিল ৭৪৪।”
এরপরেই মারাত্মক মোড় নেয় অপূর্ব চন্দ্রের চিঠি। তিনি আরও লেখেন, “সেদিনই আবার রাজ্য সরকারের তরফে স্বাস্থ্য দফতরের মুখ্যসচিব কেন্দ্রকে একটি চিঠিতে জানিয়েছেন, ওইদিন পর্যন্ত মোট ৯৩১টি পজিটিভ কেস পাওয়া গিয়েছে। স্পষ্টত ১৮৭টি কেসের তফাৎ হচ্ছে।” একই সরকারের এমন একটি গুরুতর বিষয়ে কি করে দু’রকম বয়ান হতে পারে? অপূর্ব চন্দ্রের কড়া চিঠিতে এই প্রশ্নটি উঠে আসে। এমন চিঠির পরেই নড়েচড়ে বসেন নবান্নের শীর্ষ কর্তারা। তারপরই আজ, সোমবার এই তথ্য প্রকাশ করে দিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ।
রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যায়, গত প্রায় ১০ দিন যাবৎ কলকাতায় রয়েছেন তৃণমূলের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর (Prashanta Kishor)। করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের মোকাবিলায় যে সমস্ত ভুল পদক্ষেপগুলি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিয়েছে, সেগুলি থেকেই এবার একে একে সরকারকে পিছু হটার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনিই। প্রথমে করোনায় মৃত্যু নির্ধারণ করতে গঠিত অডিট কমিটি নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার পর, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়েও স্পষ্ট মতামত জানালো রাজ্য সরকার।