প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থেকে সোমেন মিত্রর ইস্তফা, গ্রহণ করল না হাই কম্যান্ড

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সোমেন মিত্র। লোকসভা ভোটে গোটা দেশের মতো এ রাজ্যেও বিপর্যয় হয়েছে কংগ্রেসের। আসন কমেছে গতবারের থেকেও। সেই ব্যর্থতার দায় নিয়ে ইস্তফা দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। যদিও তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি কংগ্রেস হাই কম্যান্ড।

এ প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি দিয়ে সোমেন মিত্র জানান, “লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করতে পারেনি কংগ্রেস। এই ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। গোটা দেশের মতো এই রাজ্যও কংগ্রেস ভাল ফল করেনি। তাই আমিও ইস্তফা দিয়েছি।”

বিধান ভবনের তরফে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান অমিতাভ চক্রবর্তী। ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র গত ২৪ মে লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন। যদিও লোকসভা নির্বাচনের পাঁচমাস আগে তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মনোনীত হয়েছিলেন তথাপি সেদিনই তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। সহকর্মীদের অনুরোধে তিনি প্রদেশ সভাপতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর পদত্যাগ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি গ্রহণ না করায়, তিনি আশা করেছিলেন যে রাহুল গান্ধীই সভাপতি থাকবেন। কিন্তু, রাহুল গান্ধীর অনড় মনোভাবের পরে তাঁর বক্তব্য, রাহুল গান্ধীই তাঁকে সভাপতির দায়িত্ব দেন। যখন তিনিই কংগ্রেস সভাপতি থাকবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তখন আমারও প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব আঁকড়ে থাকার কোনও মানে হয় না। গত পরশু তিনি তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।

দু’দশক আগে ১৯৯৮ সালে, বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গত ২১ সেপ্টেম্বর কংগ্রেস হাই কম্যান্ড অধীর চৌধুরীকে সরিয়ে তাঁকে প্রদেশ সভাপতি করার পর বলেছিলেন, “হারকিউলিয়ান টাস্ক।” উনিশের লোকসভায় বিপর্যয়ের পর ফের সেই রাস্তায় হাঁটলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে আরও বলা হয়েছে, সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে বাংলার পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ দেখা করেছেন সোমেন মিত্রর সঙ্গে  । এবং এআইসিসি যে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবে না, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন। সোমেন মিত্রকে নতুন উদ্যমে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন তিনি।

আগামী ১৯ জুলাই জেলা কংগ্রেস সভাপতিদের ডাকা সভা থেকেই রাজ্য কংগ্রেসের রোড ম্যাপ তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন গৌরব। সেদিন সভাতে এআইসিসি-র প্রতিনিধি থাকবেন বলেও প্রদেশ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। গৌরব গগৈ বলেন, জাতীয় স্তরে নতুন কংগ্রেস সভাপতি ঘোষণা হওয়ার পরে তিনিই স্থির করবেন কোনও রাজ্যে কে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকবেন। তাই কংগ্রেস সভাপতির অফিস এই মুহূর্তে সোমেন মিত্রের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.