By Election: উপনির্বাচন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই ইভিএম, ভিভিপ্যাট নিয়ে প্রস্তুতি কমিশনের

রাজ্যে ভবানীপুর-সহ সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট পরীক্ষার কাজ শুরু করার নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশনের রাজ্য দফতর। শুক্রবার এ বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করতে সাতটি জেলার জেলাশাসকদের নির্দেশ পাঠিয়েছেন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার আরিজ আফতাব

সূত্রের খবর, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে পাঠানো এক চিঠিতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন দ্রুত ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের ‘ফার্স্ট লেভেল চেকিং’-এর কাজ শুরু করে দেন। যে সব জেলায় ভোট হবে, সেই সমস্ত জেলার জেলাশাসকদের ওই নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, কোচবিহার ও দক্ষিণ কলকাতা জেলাকে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চলতি মাসের ২ তারিখ থেকেই অবশ্য ইভিএম এবং পোস্টাল ব্যালট পরীক্ষা পদ্ধতির কাজ খানিকটা এগিয়েই রেখেছে কমিশন। প্রথম পর্যায়ে দক্ষিণ কলকাতার চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে যে সমস্ত ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট কাজে লাগানো হয়েছিল, মূলত সেগুলি পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। ভবানীপুর, রাসবিহারী, বালিগঞ্জ এবং কলকাতা বন্দর কেন্দ্রে যে সব ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট ভোটের কাজে লাগানো হয়েছিল, মূলত সেগুলি পরীক্ষার কাজ ইতিমধ্যে শেষও হয়ে গিয়েছে।AdvertisementAdvertisement


ভোটারদের লাইন।

ভোটারদের লাইন।
ফাইল ছবি।


রাজ্যের সাতটি আসনে উপনির্বাচনের নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েন এখন জারি আছে। উপনির্বাচন নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ভবানীপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। ভোটে বিপুল জয়ের পর তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন গত ৫ মে। ফলে ৫ নভেম্বরের মধ্যে তাঁকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। তিনি ইতিমধ্যেই বলেছেন, ‘‘ভবানীপুরের অনেক ওয়ার্ড ইতিমধ্যেই কোভিডমুক্ত। জিরো, জিরো, জিরো!’’ আবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যখন লোকাল ট্রেন চালাতে দেওয়া হচ্ছে না, তখন উপনির্বাচন কী ভাবে করা হবে!’’’ শুভেন্দু তথা বিজেপি-র আরও দাবি, ‘‘আগে রাজ্যের পুরসভার ভোট করানো হোক। তার পর বিধানসভা উপনির্বাচন।’’ শুভেন্দুদের প্রশ্ন, ‘‘উপনির্বাচন নিয়ে এত তাড়াহুড়োর কী আছে?’’

শাসক-বিরোধীর মধ্যে এই তরজার মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুশীল চন্দ্রের সঙ্গে দেখা করে দ্রুত উপনির্বাচন করার দাবি জানিয়েছে। তার পরেই শুভেন্দু দাবি করেছেন, কোভিড সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ রুখতে উপনির্বাচনের চেয়ে বেশি প্রয়োজন রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি করা। তাই আগে সেদিকে নজর দেওয়া হোক।


আরও পড়ুনশনিবার সকালের বিমানে দিল্লি গেলেন রাজ্যপাল ধনখড়, কারণ নিয়ে জল্পনা

উল্লেখ্য, বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে এই যুক্তি-পাল্টা যুক্তির মধ্যেই রাজ্যসভার একটি আসনে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আগামী ৯ আগস্ট ওই ভোট হবে। তাই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের একাংশ ধরে নিচ্ছে, সেপ্টেম্বর মাসের যে কোনও সময়ে বিধানসভা উপনির্বাচন হতে পারে। তাই উপনির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি আগেভাগে সেরে ফেলতে চাইছে তারা।

ভবানীপুরে মমতা ছাড়াও কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে ৫ নভেম্বরের মধ্যে উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে। কারণ, তিনি মমতার জন্য ভবানীপুরের বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। দিনহাটা ও শান্তিপুর থেকে যথাক্রমে বিধায়কপদ ত্যাগ করেছেন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার। উপনির্বাচন হবে সেখানেও। ফলাফল ঘোষণার আগেই করোনা সংক্রমণে প্রয়াত হন খড়দহের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহ। সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। পাশাপাশিই করোনা সংক্রমণে প্রার্থীদের মৃত্যুর কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ভোট করা যায়নি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে। ওই সাতটি কেন্দ্রেই তাই নির্বাচন বাকি রয়ে গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.