ডাক্তার পেটালে ১০ বছর পর্যন্ত জেল বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা! বিল আনতে চলেছে কেন্দ্র

চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা যেন দিনকে দিন আরও বেশি করে সামনে আসছে। এই ঘটনার বেড়ে চলা রুখতে এবার নতুন বিল আনতে চলেছে কেন্দ্র। জানা গেছে, এই নতুন বিল পাশ হলে চিকিৎসক নিগ্রহের শাস্তি হবে ১০ বছরের জেল অথবা ১০ লক্ষ টাকার জরিমানা।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, নতুন বিল পাশ হলে, কড়া আইনের জেরে এই নিগ্রহের ঘটনা হয়তো কমবে দেশে।

কিছু দিন আগেই এনআরএস হাসপাতালে এক বৃদ্ধ রোগীর মৃত্যুতে জুনিয়র চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়কে নিগ্রহ করে তাঁর পরিবার ও প্রতিবেশীরা। মাথার খুলি ফেটে গেছিল পরিবহর। ঘটনার অভিঘাতে যেন সারা দেশে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। ধর্মঘট ডেকেছিলেন চিকিৎসকেরা। সারা দেশে বন্ধ ছিল চিকিৎসা পরিষেবা। সে ভাবে শাস্তি হয়নি কারও।

গত সপ্তাহেই ফের মার খান আসামের চা বাগানের বৃদ্ধ চিকিৎসক দেবেন দত্ত। প্রাণে বাঁচেননি ৭৩ বছরের ওই চিকিৎসক। তাঁর মৃত্যুর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে সারা দেশকে।

৩৩ বছর বয়সি শ্রমিক সোমরা মাঝিকে তাঁর আত্মীয় ও অন্যান্য শ্রমিকেরা শনিবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেই সময় তাঁর অবস্থা গুরুতর ছিল। কিন্তু সেই সময় হাসপাতালে ছিলেন না ডাক্তার দেবেন দত্ত। ফার্মাসিস্টও ছুটিতে ছিলেন। কর্তব্যরত নার্স সোমরাকে স্যালাইন দিলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি বলে জানানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর সাড়ে তিনটের দিকে হাসপাতালে আসেন ডাক্তারবাবু। তখনই তাঁর উপর চড়াও হন ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। তাঁকে মারধর করে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। তার পরে পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে এসে তাঁকে উদ্ধার করে। কিন্তু তত ক্ষণে মৃত্যু হয় তাঁর।

এর পরেই মঙ্গলবার নতুন বিলের খসড়া তৈরি করেছে কেন্দ্র। ‘হেল্থকেয়ার সারভিস পার্সোনেল ও ক্লিনিক্যাল এসট্যাবলিশমেন্ট’ নামের বিলে কড়া শাস্তির কথা বলা হয়েছে। চিকিৎসকদের উপর কোনও রকম নিগ্রহ করলে বা হাসপাতালে ভাঙচুর চালালে ১০ বছরের জেল হতে পারে অভিযুক্তদের। অথবা জরিমানা হতে পারে ১০ লক্ষ টাকা। ভারতীয় সংবিধানের ৩২০ ধারায় পরিবর্তন আনবে এই নতুন বিল।

শুধু চিকিৎসকদের উপরেই নয়, চিকিৎসাকর্মীদের গায়ে হাত তুললেও তা জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এই নতুন বিলে। কেন্দ্র জানিয়েছে, যেভাবে দেশ জুড়ে চিকিৎসকদের ওপর গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে, তা বন্ধ করতে উদ্যোগী সরকার। এ জন্য নতুন বিলের খসড়া প্রস্তাব নিয়ে জনতার কাছ থেকেও মতামত জানতে চেয়েছে কেন্দ্র। তবে তা পাঠাতে হবে নোটিস প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.