গেরুয়া ঝড় উঠতেই রাজ্য জুড়ে পার্টি অফিস দখলে শাসক বিরোধী তরজা চরমে উঠেছে। অশান্তির আগুনে তপ্ত গ্রাম থেকে শহর। রক্তাক্ত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। প্রশ্ন উঠেছে, ‘দখল’ রাজনীতিতে কারা? আদৌ কি চেনা মুখ? তাই শঙ্কিত গেরুয়া শিবির।
গত ২৩ মে দেশের সপ্তদশ লোকসভার ফলাফল ঘোষণা হয়। নজরে থাকে এরাজ্যে গেরুয়া ঝড় চরমে উঠেছে। ঝড় উঠতে বদলাতে শুরু করছে দৈনিন্দিন চালচিত্র। দশদিন আগে যেখানে ‘জয়শ্রীরাম’ ধ্বনিতে শোরগোল পড়ত। আড়ালে শুরু হত গুঞ্জন। এখন সেই ধ্বনি যেন শুভেচ্ছা বিনিময়ের হাই হ্যালোর জায়গা দখল করে নিয়েছে। বাস ট্রেন থেকে মোবাইলে একটাই ধ্বনি ‘জয়শ্রীরাম’৷ এতো গেল ধ্বনি কথা। ভোট গণনার দুপুর থেকে শিল্পাঞ্চল জুড়ে তৃণমূলের পার্টি অফিস দখলের হিড়িক পড়ে যায়। ওইদিন কাঁকসার বিষ্ণুপুর, শিবপুর বাগান পাড়া শোকনা এলাকায় তিনটি পার্টি অফিস দখল হয়ে বিজেপির পতাকা উড়তে শুরু করে। পরদিনই আবার কাঁকসার রনডিহা মোড়ে দখল হয়। আবার সংগঠন দুর্বল থাকা বনকাটি পঞ্চায়েতের নিমটুকরী, বসুধা, ডাঙ্গাল এলাকায় ৩ টি তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল হয়ে যায়। কয়েকদিন পর কাঁকসার বিডিও অফিস এলাকা, দুর্গাপুরের ফরিদপুর গ্রামে দখল হয় তৃণমূলের কার্যালয়। তবে পার্টি অফিস দখলে দলের কোনও ভূমিকাই নেই বলে দাবি জেলা বিজেপির। ইতিমধ্যে কাঁকসার বিষ্ণুপুর ও দুর্গাপুর ফরিদপুরের তৃণমূলের পার্টি অফিস পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা করে বিজেপি। সৌজন্যের রাজনীতিতে এটাও এক নজির। তবে প্রশ্ন ওঠে ‘দখল’ রাজনীতিতে কারা? কাদের মদতে চলছে?
বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপির সম্পাদক রমন শর্মা জানান,” প্রতিহিংসার রাজনীতি বিজেপির সংস্কৃতি নয়। গেরুয়া ঝড় উঠতেই দলবদলের হিড়িক শুরু হয়েছে। দলকে না জানিয়ে এধরনের কাজ হচ্ছে। এরা মূলত বেনোজল বলেই ধারনা। তাদের সংস্কৃতি বিজেপির সংস্কৃতিতে কোন মিল নেই। উৎশৃঙ্খল ভাবে তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল করছে। অথচ এসবে দলের কোনও রকম নির্দেশ নেই। অনুমান ‘দলবদলকারী’ কোন একটি গোষ্ঠী এসব করছে। আমরা নজরে রাখছি। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অশান্তি বিশৃঙ্খলা করলে বরদাস্ত করব না।”
তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাপতি সমীর বিশ্বাস জানান,” এরা স্বার্থানেস্বী রাজনৈতিক কর্মী। গিরগিটির মত রঙ বদল করে। ২০১১ সালে যেভাবে বেনোজল তৃণমূলে ঢুকেছিল। তেমনই গনণার দিনই দলবদল করে ওই বেনোজল গেরুয়া শিবিরে ঢুকে এধরনের কাজ করছে।”