দার্জিলিংয়ে লোকসভা নির্বাচন হয়ে গিয়েছে৷ বাকি রয়ে গিয়েছে দার্জিলিং বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন৷ তবে নির্বাচন শেষ হয়ে গেলেও দার্জিলিং এবং পাহাড়ের রাজনীতি থেকে কোনও মতেই সরে আসতে চাইছে না বিজেপি৷ লোকসভায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং জিএনএলএফ সমর্থিক বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্ত লড়াই করেছিলেন৷
বিধানসভায় লড়াই করবেন জিএনএলএফ মুখোপাত্র নিরজ জিম্বা৷ বিজেপি তাকে সমর্থন করবে৷ এর মধ্যেই জিটিএ চেয়ারম্যান বিনয় তামাংকে আক্রমণ করেছে বিজেপি৷ বিজেপি প্রা্থী রাজু বিস্তা বলেছেন, বিনয়কে জিটিও-এর হিসাব দিতে হবে৷ সব টাকার হিসাব চাই৷ উন্নয়নের হিসাব চাই৷
দার্জিলিংয়ে এবার বিজেপি তৃণমূলের সমানে সমানে টক্কর৷ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমল গুরুং গোষ্ঠী বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থন করছে বলে সরাসরি নির্বাচনে লড়াই হয়েছে৷ কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ঘনিষ্ট বিনয় তামাং গোষ্ঠী প্রতীকসহ লড়াই করতে চেয়েও পারেনি৷ কারণ ভারতের নির্বাচন কমিশনের রেকর্ড অনুযায়ী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং এবং সম্পাদক রোশন গিরি৷
সেক্ষেত্রে আদালতে মামলা লড়েও দলের প্রতীক হস্তগত করতে পারেনি বিনয়৷ ঘাসফুল প্রতীকেই তার প্রার্থীকে নির্বাচনে লড়াই করতে হচ্ছে৷ বিজেপি অভিযোগ করেছে, কিছু লোক তৃণমূলের পে-রোলে থাকা কেউ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে৷ তাদের দিন শেষ৷ রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলছে, বিনয় তামাংকে উদ্দেশ্য করেই ওই কথাগুলি বলা হয়েছে৷
বিজেপির হাতিয়ার কিছু প্রশ্ন৷ প্রশ্ন উঠেছে জিটিএকে দেওয়া ৪০ কোটি টাকা কোথায় গেল? দার্জিলিংয়ে কী কী উন্নয়ন হয়েছে? বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য ২০৫ কোটি টাকা কোথায় গেল? রাজু বিস্ত বলেন, নির্বাচনে জিতছি সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই৷ নিরাজও জিতবে৷ দার্জিলিংয়ের আওয়াজ দিদি দিকে তোলা হবে৷
প্রসঙ্গত, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে জিতেছিল বিজেপি৷ কিন্তু দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির সাংসদ সুরেন্দ্রজিৎ সিং আলুওয়ালিয়া এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি৷ তার বদলে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্ত৷ বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থন করছে বিমল গুরুং নিয়ন্ত্রিত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং জিএনএলএফ৷ অন্যদিকে বিনয় তামাং নিয়ন্ত্রিত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রার্থী অমর সিং রাই৷
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বলেছেন, গোর্খাদের পাশে আছে বিজেপি৷ তবে পাশে থাকার বার্তা দিলেও গোর্খাদের কোনও বিশেষ দাবির বিষয়ে কিছুই বলেননি প্রধানমন্ত্রী৷ মোদী নিজের বক্তব্যে বলেছেন, ‘‘গোর্খা ভাইদের বলছি আমরা আপনাদের সঙ্গে রয়েছি৷’’
মোদী-শাহ প্রচার সভায় সরাসরি অভিযোগ করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোর্খাদের উপর অত্যাচার করেছে৷ জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ বা এনআরসি প্রশ্নে মোদী বলেছিলেন, অনেকেই এনআরসি নিয়ে ভুল বার্তা দিচ্ছেন৷ গোর্খাদের এনআরসি নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই৷ গোর্খা ভাইদের কোনও লোকসান হতে দেব না৷ তবে যারা শরণার্থী তারা কংগ্রেস সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ভুক্তভোগী৷ তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে৷