জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে শুরু সদস্য অভিযান। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন ৬ জুলাই থেকে শুরু হবে সদস্য সংগ্রহ অভিযান। তার আগে সংগঠনকে তাজা রাখতে একটি দিনও নষ্ট করতে চাইছে না রাজ্য বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ আন্দোলনের মধ্যে থাকতে হবে দলকে। লোকসভা নির্বাচনে ১৮ আসন পাওয়ার পরে তৈরি হওয়া গেরুয়া হাওয়া বজায় রাখতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার রাজ্যজুড়ে পথে নামছে বিজেপি। সব পুলিশ জেলায় হবে সুপার ঘেরাও অভিযান। আর সেই ঘেরাওকে কেন্দ্র করে গোলমালের আশঙ্কায় সর্বত্র কড়া অবস্থানের পথে পুলিশ, প্রশাসন।
গত ১২ জুন লালবাজার অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। কয়েক ঘণ্টায় সেই অভিযান শেষ হয়ে গেলও বেশ কিছুক্ষণের জন্য উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কলকাতার রাজপথ। কাঁদানে গ্যাস আর জলকামানে ঠেকানো হয়েছিল বিজেপির অভিযান। সোমবার জেলায় জেলায় বিজেপির অভিযান ঠেকাতে ততটা শক্তি নিয়ে না নামলেও বিজেপিকে সহজে পুলিশ সুপারদের অফিস ঘেরাও করতে দেওয়া হবে না বলেই ঠিক করেছে রাজ্য প্রশাসন। তার ফলে কোনও কোনও জেলায় সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে রবিবার রাজ্য জুড়ে এসপি অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার রাজ্যের প্রতিটি জেলায় পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন দিলীপ।
শনিবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে তৃণমূলের মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। তৃণমূলের মিছিল ঘিরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া শুরু করতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২ বিজেপি সমর্থক-সহ মোট ৩ জন গুলিবিদ্ধ হন। রাজ্য বিজেপির অভিযোগ, পুলিশই গুলি চালিয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ, গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি না হওয়া সত্ত্বেও গুলি চালিয়েছে। পুলিশ অবশ্য গুলি চালানোর কথাই অস্বীকার করেছে। ইতিমধ্যেই পাত্রসায়রের ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে বিজেপি। ভাটপাড়া নিয়েও একই দাবি। সব মিলিয়ে রাজ্যের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা করেই এদিনে্র বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন দিলীপ ঘোষ।
আজ দুপুর ১২টা থেকে রাজ্যের সবক’টি পুলিশ জেলায় বিজেপি পথে নামবে বলে বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রতিটি জায়গায় রাজ্য অথবা জেলা স্তরের একজন করে নেতা উপস্থিত থাকবেন। এই ঘোষণার সঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকে রোজ রাজনৈতিক হিংসা এবং খুন-জখমের খবর আসছে। গত কয়েক দিনে ভাটপাড়া, আমডাঙা, পাত্রসায়র, খণ্ডঘোষ, নরেন্দ্রপুর, চোপড়া থেকে রাজনৈতিক হিংসার খবর এসেই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে পথে নামা ছাড়া আর কোনও রাস্তা বিজেপির সামনে খোলা নেই বলে দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। দিলীপ রবিবার বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা এখন যে রকম, তা শুধু পশ্চিমবঙ্গের নয়, গোটা দেশের চিন্তার কারণ। বিজেপি কর্মীদের রক্ষা করার জন্য রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনও পথ আমাদের সামনে খোলা নেই।’’
সপ্তাহের প্রথম দিনে বিজেপির এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জেলায় জেলায় স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সকাল থেকেই বিজেপি কর্মীরা জেলা সদরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।