অমরনাথ দর্শন করে ফেরার পথে, লখনউতে হামসফর এক্সপ্রেসে আইআরএস অফিসার এবং তার স্ত্রী এম রহমান, আত্মীয়া ই রহমান, এবং তাদের প্ররোচনায় আরপিএফ জওয়ানদের হাতে নির্মম ভাবে প্রহৃত ও চরম লাঞ্ছনার স্বীকার হলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী উৎপল মহারাজ ও তাঁর ভ্রমণসঙ্গীরা। তীর্থযাত্রীদের এই দলে ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর কলেজের অধ্যক্ষ জীতেশ চাকি, তাঁর স্ত্রী এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ শাখার স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দও। ট্রেনে ওই আইআরএস অফিসারের স্ত্রী এম রহমান, ই রহমান-সহ আরও কয়েকজন মহারাজের বুক করা সীট জোর করে দখল করে রাখেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন উৎপল মহারাজ। সেখান থেকেই বচসার সুত্রপাত। তাঁদের ছ’জনের আসন পড়েছিল একটি দিকে পরপর। আর তিনটি আসন ছিল আর এক দিকে। যেখানে ছ’টি আসন ছিল, সেখানেই গল্প করছিলেন তাঁরা। বিকেলের দিকে তাঁদের তিন জন অন্য দিকে গিয়ে দেখেন, তাঁদের জায়গা দখল করে বসে চার মহিলা। আসন ছাড়তে বললেও তাঁরা শোনেননি। দু’পক্ষে বচসা শুরু হয়। জীতেশবাবুরা বিবাদ আর না বাড়িয়ে ওই মহিলাদের দু’টি আসন ছেড়েও দেন। বিবাদ যে মেটেনি, তা বুঝতে পারেন লখনউ পৌঁছে। রাত তখন ১২টা। ওই চার মহিলার এক জনের স্বামী বলে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বেশ কয়েক জন আরপিএফ-কে নিয়ে কামরায় ওঠেন। অভিযোগ, সেই ব্যক্তি দাবি করেন, তিনি রেলের আধিকারিক। টেনে স্টেশনে নামানো হয় জীতেশবাবুদের কয়েক জনকে। জীতেশবাবুর কথায়, ‘‘সঙ্গে ছিলেন দুই বয়স্ক মহিলা। তাঁদেরও মারধর করা হয়। জ্যোতির্ময়ানন্দ বলেন, ‘‘যে ভাবে আমাদের মারধর, অকথ্য গালি দেওয়া হয়েছে, তা অবিশ্বাস্য।’’ ফোন করেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকেও। সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘লখনউয়ের বিধায়ক রাজনাথ সিংহকে জানাচ্ছি।’’ তার পরপরই রাতেই টুইটারে অভিযোগ জানান তাঁরা। ওই যাত্রীরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ট্যাগ করে টুইটারে সেই অভিযোগ করেন। তার পরেই ট্রেন বারাণসী পৌঁছলে রেল পুলিশের আধিকারিকেরা তাঁদের কাছে গিয়ে অভিযোগ শুনেছেন। ট্রেন শিয়ালদহে পৌঁছলে ওই যাত্রীরা রেল পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এই রকমের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মহারাজ ও ভক্তগণ।
নিচে দেওয়া ভিডিওতে ফুটে উঠেছে সেই প্রতিবাদের ছবিঃ