লোকসভা ভোটের পর রাজ্যের চারিদিক থেকে শাসক দল তৃণমূলের ভাঙন দেখা গেছে। কখনো পঞ্চায়েত সদস্য, তো কখনো কাউন্সিলর এবং বিধায়ক। সবাই একে একে ঘাসফুল শিবির ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এমনকি বিজেপি নেতা মুকুল রায় এও বলেছেন যে, এরাজ্যে তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেস ছেড়ে ১০৭ জন বিধায়ক যোগ দেবেন বিজেপিতে। মুকুল রায়ের এই মন্তব্যের পর রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়েছে। এমনকি গোয়া আর কর্ণাটকের মতো এরাজ্যের পরিস্থিতি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
আরেকদিকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তোলা হচ্ছে শাসক দলের তরফ থেকে। এমনকি তাঁদের পুলিশের ও ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। সেই ক্রমেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূলের এক প্রাক্তন সংখ্যালঘু নেতাকে গ্রেফতার করলো পুলিশ।
গত পরশু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতি বাবর আলি শেখ। ওনার হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন বর্ধমান জেলার বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ। বিজেপিতে যোগ দানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাবর আলি শেখকে গ্রেফতার করে কালনার মন্তেশ্বর থানার পুলিশ। বাবর আলি শেখ-কে কালনা মহাকুমা আদালতে পেশ করা হলে, তাঁকে চার দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বাবর আলি শেখ জানিয়েছেন, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যই ওনার বিরুদ্ধে এরকম মিথ্যে অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়। বিজেপির বর্ধমান জেলার সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ জানিয়েছেন, বাবর শেখ যতদিন তৃণমূলে ছিল। ততদিন উনি ভালো ছিলেন, বিজেপিতে যোগ দিতেই উনি অপরাধী হয়ে গেলেন, আর ওনাকে গ্রেফতার করা হল। এটাই কি মাননীয়ার গণতন্ত্র?
আরেকদিকে তৃণমূলের নেতা আজিজুল শেখ জানান, ‘বাবর আলি শেখ-এর অভিযোগ ভিত্তিহীন। বাবরের বিরুদ্ধে এলাকার একটি পুকুর দখলের গুরতর অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ওই পুকুর দখলের সময় গ্রামবাসীদের সাথে সংঘর্ষ বাধে বাবরের। আর সেই জন্য গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বাবর আলি শেখ-কে গ্রেফতার করা হয়েছে।” এখন প্রশ্ন হল এটাই যে, পুকুর চুরির অভিযোগ থাকলে, তৃণমূলে থাকাকালীন বাবর আলি শেখ-কে কেন গ্রেফতার করলো না পুলিশ?