দু’দিনের সফরে অসমে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার কোকরাঝোড়ে জনসভা করেন তিনি। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন, চলতি বছরে অসমে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জোট জিতলে হিংসামুক্ত, অনুপ্রবেশকারীমুক্ত ও বন্যামুক্ত অসম গড়ে তুলব। গত ডিসেম্বরে বড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলের ভোটে জেতে বিজেপি জোট। বিজেপির শরিক ছিল কট্টরপন্থী ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারাল। অমিত শাহের বক্তব্য, বিটিসি-র ভোটে বিজেপি জোট যেভাবে জিতেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, বিধানসভা ভোটেও তারাই জিতবে।
বড়োল্যান্ড আন্দোলনে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের হাতে এদিন সরকারের আর্থিক সহায়তা তুলে দেন অমিত শাহ। পরে তিনি বলেন, বড়োল্যান্ড চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরে এক বছর কেটেছে। এখন বিটিসি-র ভোট হচ্ছে শান্তিতে। আগামী দিনে এই অঞ্চল সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বড়ো অধ্যুষিত এলাকায় রাস্তা তৈরির জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
তাঁর কথায়, “এখন বড়োল্যান্ড উন্নতির পথে চলতে শুরু করেছে। এই অঞ্চলে একসময় ব্যাপক রক্তক্ষয় হয়েছিল। এখন এখানে যথাসাধ্য উন্নয়ন করা হবে।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “একবছর আগে যখন বিটিসি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, মোদীজি আমাকে বলেছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে জঙ্গিবাদ দূর করবেন। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি, বড়ো ও অন্যান্য জনজাতির মানুষ শান্তিতে বসবাস করছেন।”
অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দেন, আর কয়েক বছরের মধ্যে বড়োল্যান্ড হয়ে উঠবে অসমের সবচেয়ে উন্নত জায়গা।
শনিবার অসমের শিবসাগর জেলায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এখানে তিনি ১ লক্ষ ভূমিপুত্রের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেন। তিনি একবারও বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের কথা মুখে আনেননি। রবিবার অমিত শাহও ওই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সংসদে নাগরিকত্ব আইন পাশ হয়। তাতে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির নিপীড়িত সম্প্রদায়ের মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই আইন নিয়ে অসমে প্রবল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কারণ অসমে দীর্ঘকাল যাবৎ অনুপ্রবেশের সমস্যা রয়েছে।
অমিত শাহ এদিন সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ড অ্যাক্ট নিয়ে কিছু না বললেও আসু অসম জুড়ে ওই আইনের কপি পোড়ায়। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অসম সফরেরও প্রতিবাদ জানায় তারা।
এদিন নলবাড়ি জেলাতেও সভা করেন অমিত শাহ। সেখানে তিনি বলেন, বিজেপি যেভাবে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করেছে, অযোধ্যায় রামমন্দির বানাচ্ছে, একইভাবে অনুপ্রবেশ রুখতেও সফল হবে। তাঁর কথায়, “আপনারা কি অসমকে অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে মুক্ত করতে চান? কংগ্রেস কি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পারে? তারা তো অনুপ্রবেশকারীদের জন্য গেট খুলে দিয়েছিল। একমাত্র বিজেপি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পারে।”