তাস খেলেই দেশকে সোনা এনে দিয়েছিলেন, অর্জুনের জন্য মনোনীত সেই শিবনাথ ও প্রণব

এশিয়ান গেমসে শুধু সোনা জয় নয়, এবার তাঁরা অর্জুন পুরস্কারের দোরগড়ায় দাঁড়িয়ে। বাংলার টেবল-টেনিস খেলোয়াড় সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়ের (Sutirtha Mukherjee) নাম অর্জুনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলা থেকে দুই তাস খেলোয়াড় শিবনাথ দে সরকার (Shivnath De Sarkar) ও প্রণব বর্ধনের (Pranab Vardhan) নামও পাঠিয়েছে ব্রিজ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া।

তাস, দাবা, পাশা- এই তিন সর্বনাশা’ কথাগুলোকে মুছে দিয়েছেন বাংলার দুই তাস খেলোয়াড়। বিশেষ করে এশিয়ান গেমস থেকে যেদিন তাঁরা নিয়ে এসেছিলেন সোনার পদক। চারিদিকে হইচই পড়ে গিয়েছিল। সালকিয়ার শিবনাথ কিংবা যাদবপুরের প্রণববাবুরা মনে করছেন, করোনা আতঙ্কের মধ্যেও তাঁরা অন্তত কিছু সময়ের জন্য স্বস্তি এনে দিতে পারছেন। ফোনে শিবনাথ বলছিলেন, “রাজ্যের সঙ্গে সারা দেশের মানুষ করোনার জন্য মানসিক দিক থেকেও বিধ্বস্ত। আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে সকলের দিন কাটছে। সেই জায়গায় অন্তত ব্রিজ মানুষকে কিছু সময়ের জন্য ভুলিয়ে রাখছে। এটা কিন্তু কম বড় কথা নয়।”

আগে রাজ্যে ছিল ২৭০০ জন রেজিস্টার্ড ব্রিজ খেলোয়াড়। এই দুই বঙ্গ সন্তান এশিয়াডে পদক নিয়ে দেশে ফেরার পর থেকে রেজিস্টার্ড খেলোয়াড়ের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ছ’হাজারে। তার উপর যদি অর্জুন হতে পারেন তাহলে দেশের মধ্যে এঁরাই প্রথম এই সম্মান পাবেন। এর আগে কেউ ব্রিজ খেলে অর্জুন হননি। “নমিনেশন পেপার যা পাঠানোর আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। জানি না কী হবে। তবে হলে ব্যাপারটা সকলের নজর কাড়বে। যতই হোক দেশে প্রথম ব্রিজ খেলে কেউ অর্জুন হবে। জনমানসে সাড়া পড়তে বাধ্য।” ফেডারেশনের তরফে এমনটাই বলা হয়। শিবনাথ বলছিলেন, “আগে অনেকে তাস খেলাকে সর্বনাশা বলত। এখন কেউ বলতে পারবে না। প্রায় জনা পনেরো ছেলে ইতিমধ্যে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখিয়ে সরকারি চাকরি পেয়ে গিয়েছে। সুতরাং ভাল পারফর্ম করলে আর্থিক দিক দিয়েও লাভবান হওয়া যায়। যার জন্য ব্রিজ খেলাকে অনেকে পেশা হিসাবে ভাবতে শুরু করেছে।”

করোনার জন্য ২০২১ সাল পর্যন্ত ভারতে কোনও ব্রিজ টুর্নামেন্ট হবে না। তাই বলে কেউ হাত গুটিয়ে বসে নেই। অনলাইনে যথারীতি খেলা চলছে। যদিও একেদুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো ছাড়া আর কিছু বলা যাবে না। তবু আতঙ্কের মাঝে সাময়িক স্বস্তি। এটাই বা কম কী। নাইবা হল আর্থিক লাভ। যেহেতু অনলাইনের খেলায় প্রাইজ মানি থাকে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.