উইম্বলডনেও তা হলে বাঙালির বিজয়কেতন ওড়ে? এর আগে কলকাতার লিয়েন্ডার পেজ জুনিয়র উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু লিয়েন্ডার বাঙালি নন, তিনি অ্যাংলো ইন্ডিয়ান। তাঁর মাতৃভাষা বাংলা নয়।
সেদিক থেকে আমেরিকার নিউ জার্সিতে বসবাসকারী প্রবাসী বাঙালি সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনচরিত খানিক আলাদাই। বাড়িতে বাবা-মা দু’জনেই বাংলার মানুষ, একটা সময় দিল্লিতেও থাকত তারা। তারপর বাবা চলে যান আমেরিকায়, সেই থেকে সমীর ওখানেই রয়েছে। তার পড়াশুনো ও টেনিস শিক্ষা সবটাই মার্কিন মুলুকে। তবুও বাড়ির ডাইনিং টেবিলে খেতে বসলে তাদের মধ্যে বাংলাতেই কথা হয়।
বাঙালি ব্রাক্ষণ পরিবারের ১৭ বছর বয়সী ওই সন্তান রবিবার অল ইংল্যান্ড ক্লাবের এক নম্বর সেন্টার কোর্টে ফাইনাল ম্যাচটি জিতেছে ৭-৫, ৬-৩। হারালেন আমেরিকার প্রতিপক্ষ ভিক্টর লাইলভকে।
এদিন শুরু থেকেই দুরন্ত ফর্মে খেলতে শুরু করে সমীর। তার একেকটি শটের কোনও জবাবই হয়তো ছিল না প্রতিপক্ষের কাছে। শেষপর্যন্ত প্রথম সেটটি ৭-৫ গেমে জিতে নেয় সে। এরপর দ্বিতীয় সেটে আরও আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে শুরু করে। সেটটি ৬-৩ গেমে জিতে ম্যাচ পকেটে পুরে নেয়। সেই সঙ্গে সঙ্গে উইম্বলডন জুনিয়র খেতাব জিতে ইতিহাসের পাতায় নিজের নামও তুলেছে এই নামী প্রতিভা।
সমীর এর আগে ফরাসি ওপেনেও খেলেছে, কিন্তু প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকাতে ব্যর্থ হয়েছিল। তার এই উত্থান টেনিসমহলে খুবই চমকপ্রদ। কারণ তাকে নিয়ে বেশি তথ্য নেই উইকিপিডিয়াতে। শুধু জানা গিয়েছে, সমীরের বাবা-মা দু’জনেই একটা সময় কলকাতায় থাকতেন। তারপর তাঁরা দিল্লিতে চলে যান ব্যবসার কাজেই, তারপর সেখান থেকে মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেয় তারা।
এর আগে ভারতের ইউকি ভামব্রি (২০০৯ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন), লিয়েন্ডার পেজ (উইম্বলডন ১৯৯০, ইউএস ওপেন ১৯৯১), রমেশ কৃষ্ণাণ (ফ্রেঞ্চ ওপেন এবং উইম্বলডন ১৯৭৯) জুনিয়র গ্র্যান্ড স্লাম খেতাব জয়ের নজির গড়েছেন। এমনকি বাংলার আরও এক নামী তারকা জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ও একটা সময় জুনিয়র উইম্বলডনের ফাইনালে উঠেছিলেন, খেতাব অধরা ছিল তাঁর।
রবিবার খেতাব জয়ের পরে উইম্বলডনের সরকারী ওয়েবসাইটে সমীরের ছবি দিয়ে ক্যাপশন লেখা হয়, এবার থেকে এই প্রতিভার খোঁজ চলবে।