‘খারাপ সময়ে ফোন তো এক জনই করেছিল, জানি কে ভাল চায়’, কার নাম বলছেন অভিমানী কোহলী

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৬০ রানের ইনিংস। বিরাট কোহলী রানে ফিরলেন, কিন্তু দল জিততে পারল না। যে সময় রান পাচ্ছিলেন না, সেই সময় বিরাটকে নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। কেউ বলেছিলেন রান না পাওয়ায় অনেক বড় ব্যাটারকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা হলে বিরাটকে কেন বসানো হবে না? অনেকে মনে করেছিলেন ছন্দে না থাকা বিরাটকে এশিয়া কাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বড় প্রতিযোগিতায় খেলানোই উচিত নয়। কিন্তু তাঁদের কথা কি বিরাটের কানে পৌঁছেছিল? রানে ফিরে বিরাট এক হাত নিলেন প্রাক্তনদের।

এই বছরের শুরুতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন বিরাট। সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, “আমি যখন টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ি, এক জন মাত্র প্রাক্তন ক্রিকেটার আমাকে ফোন করেছিল। অনেকের কাছেই আমার নম্বর আছে। কিন্তু ফোন করেছিলেন শুধু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। এর থেকেই বোঝা যায় কে আমার ভাল চায়। সত্যি যদি আমার কথা কেউ ভেবে থাকে তা হলে সে আমাকে ফোন করে কথা বলতে পারত।”

বিরাট যখন রান পাচ্ছিলেন না, তখন অনেকেই সংবাদমাধ্যমে তাঁর সম্পর্কে কথা বলেছিলেন। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব বলেছিলেন, “এমন নয় যে গত পাঁচ-ছ’বছরে কোহলীকে ছাড়া কোনও দিন ভারত খেলেনি। তবে ওর মতো ক্রিকেটারকে আমি ছন্দে দেখতে চাই। ওকে হয়তো বাদ বা বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও ওর মধ্যে অনেক ক্রিকেট বাকি রয়েছে। আমি চাই ও রঞ্জি খেলে ছন্দে ফিরে আসুক।” এ বারের আইপিএলের সময় থেকে রান নেই বিরাটের ব্যাটে। শতরান আসেনি আড়াই বছর পেরিয়ে গিয়েছে। রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন বিশ্রাম নিতে। নাম না করে ইরফান পাঠান বলেছিলেন, বিশ্রাম নিয়ে কেউ কোনও দিন রানে ফেরেনি। নানা মুনির নানা মত সেই সময় ঘুরছিল। বিরাটকে ছিঁড়ে খাচ্ছিলেন সকলে। বিরাট কখনও কিছু বলেননি। শুধু ১৬ জুলাই একটি টুইট করেছিলেন। নিজের একটি ছবিতে লিখেছিলেন ‘দৃষ্টিভঙ্গি’।

কোহলী নিজে একটি মাত্র শব্দ লিখলেও, একটি ছবির সামনে হাঁটু মুড়ে বসা অবস্থায় নিজের ছবিও দিয়েছেন সঙ্গে। দু’টি সাদা ডানার সঙ্গে লেখা রয়েছে এরিন হ্যানসনের লেখা দু’টি লাইন, ‘হোয়াট ইফ আই ফল? ওহ, বাট ডার্লিং, হোয়াট ইফ ইউ ফ্লাই?’’ যার সারমর্ম, স্বপ্ন ছুঁতে পারব না ভেবে আমরা অনেক সময় নেতিবাচক ভাবি। সেগুলো আমাদের ক্ষতি করে দেয়। অথচ সকলের মধ্যেই এমন কিছু বিষয় আছে, যেগুলো আমাদের সাহায্যই করে।

এত দিন পর মুখ খুললেন বিরাট। জানিয়েছেন ধোনি ছাড়া কেউ পাশে থাকেননি। এত দিন পর রান পেতে শুরু করেছেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৬০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেললেন বিরাট। এক দিক ধরে রেখেছিলেন। ক্রিকেটের পরিভাষায় যাকে বলে ‘অ্যাঙ্কর ইনিংস’। অর্থাৎ, ভারতের ইনিংস গড়ে উঠল বিরাট নামক স্তম্ভে ভর করে। একের পর এক ব্যাটার এসে নিশ্চিন্তে ব্যাট চালালেন। তাঁদের মাথায় ছিল বিরাট রয়েছেন। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, “আমি চেয়েছিলাম পুরো ওভার ব্যাট করতে। হাতে যদি উইকেট থাকত আমি মেরে খেলতাম। কিন্তু সে উপায় ছিল না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.