ধর্ষিতার মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারল ধর্ষকের পরিবার, দগদগে ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে নাবালিকা

প্রথমে লাথি, বেধড়ক মার। এরপর খুনের হুমকি। তাতেও ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে রাজি হয়নি ১৬ বছরের মেয়েটি। এর ফলও হল মারাত্মক। মাটিতে ফেলে পেটাতে পেটাতেই নির্যাতিতার দিকে অ্যাসিড ছুড়ে মারল অপরাধীদের পরিবারের লোকজন। মারধর করা হল নির্যাতিতার পরিবারকেও। সারা শরীরে দগদগে ক্ষত নিয়ে মেয়েটিকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।

ঘটনা মেরঠের। পুলিশ জানিয়েছে, হাপুর এলাকার বাসিন্দা ওই মেয়েটির পরিবারকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির দুই পা, হাত, মুখের কিছু অংশ ঝলসে গেছে। সারা শরীরেও দগদগে ক্ষত। হাপুরেরই একরটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

গত বছর জুন মাসে প্রতিবেশী দুই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছিলেন নির্যাতিতা। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ ছিল, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে লাগাতার ধর্ষণ করা হয় মেয়েটিকে। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাঁকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল রাস্তায়। সেই ঘটনায় দিলশাদ ও মুনিল নামে দুই যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল নির্যাতিতার পরিবার। দিলশাদকে গ্রেফতার করা হলেও প্রমাণের অভাবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ক্লিনচিট দেওয়া হয় মুনিরকেও।

নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, দুই ধর্ষকের বিরুদ্ধেই কোনও আইনি ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। বরং তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর তারাই ক্রমাগত খুনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে নাবালিকাকে। এর আগেও বারকয়েক বাড়িতে চড়াও হয়ে মামলা তুলে নেওয়া কথা বলেছিল তারা। তবে নির্যাতিতা রাজি হননি। ফলে অত্যাচার ক্রমশই বাড়তে থাকে। পুলিশ নাকি সব দেখেও নীরব ছিল।

গতকাল রবিবার ফের তারা চড়াও হয়েছিল নির্যাতিতার বাড়িতে। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, অনেক লোকজন জড়ো করে এনেছিল অপরাধীরা। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁদের। এরপর অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয় মেয়েটির শরীর।

বাবুরবাগ থানার সুপার উত্তম সিং রাথোর বলেছেন, নির্যাতিতার পরিবার চায় ধর্ষণের মামলায় তদন্ত ফের শুরু হোক। গত বছর জুনের সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে দিলশাদের কোনও খোঁজ নেই এখনও। মনে করা হচ্ছে সে ভিন্ রাজ্যে আত্মগোপন করে আছে। তবে বাকিদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ আছে।

এএসপি সরবেশ মিশ্র বলেছেন, মারধর ও অ্যাসিড হানার ঘটনায় মুনির, তারিক ও নরুদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তারা পলাতক। খোঁজ চলছে। আরও অনেকেই জড়িত এই ঘটনায়। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.