প্রহরগোণা শুরু, মনে আশা নিয়ে অপেক্ষায় প্রার্থীরা

রাত পোহালেই ভোটগণনা শুরু। শনিবার তাই দিনভর ব্যস্ততা প্রার্থীদের মধ্যে। বাইরে সবাই বলছেন, ‘আমিই জিতব’। কিন্তু প্রচ্ছন্ন সংশয় অনেকেরই। শনিবার দক্ষিণেশ্বরে দলীয় অফিসে গণনা এজেন্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্র। বাইরে জটলা। কেউ অসুস্থ, চিকিৎসক দেখানোর পয়সা নেই। কারও প্রিয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। প্রদীপ আঢ্যর মত মদনবাবুর জনাকয় ছায়াসঙ্গী প্রত্যাশীদের সহযোগিতার চেষ্টা করছেন। কামারহাটি উন্নয়ন সমিতি এবং দেশপ্রেমি ক্লাব সংহতির সভাপতি এবং ব্যক্তি মদন মিত্র— সব মিলিয়ে বছরভর ব্যস্ততা। মদনবাবুর নিজের কথায়, “গণনার আগের দিন বলে বিশেষ কিছু নেই। এই মানুষই আমাকে জেতাবে।”নজরকাড়া এই কেন্দ্রে মদনবাবুর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-র রাজ্য সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন আন্দোলন আর প্রচারে প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। শনিবার এই প্রতিবেদককে বললেন, “জিতব, জিতব, জিতব।“ ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজের সামনে শ্রীমানী ভবনে নির্বাচনী অফিসে সকালেই একদফা বৈঠক সেরেছেন। বললেন, “২২ জন গণনা-এজেন্ট। ওদের প্রতিষেধক ও ছাড়পত্র সব ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা, সে সব দেখতে হচ্ছে। স্থানীয় একটি ডেন্টাল কলেজে কাল গণনা হবে। সাতসকালেই চলে যাব আমরা।”অনেকটা শেষ বেলায় তৃণমূল থেকে দলবদল করে অমিত শাহর পাঠানো বিশেষ বিমানে বিজেপি-তে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন, তাঁদের অন্যতম বৈশালী ডালমিয়া। যথারীতি হাওড়ার বালির প্রার্থী হয়েছেন। শনিবার এই প্রতিবেদককে বৈশালী বললেন, “করোনার জন্য সাহায্যপ্রার্থীর চাপ অনেক বেড়ে গিয়েছে। সকাল থেকেই ব্যস্ততা। আমার কেন্দ্রের ভোটগণনা হবে বেলুড় মঠে। ১৮ জন গণনা-এজেন্টের সঙ্গে সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল বৈঠকে বসব।  জেতার ব্যাপারে কিন্তু আমি ভীষণ আশাবাদী।”হাওড়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রন্তিদেব সেনগুপ্ত ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে এই এলাকারই বিজেপি প্রার্থী ছিলেন। সেই সুবাদে গণনার ব্যাপারে সম্যক ধারণা আছে। হিন্দুস্থান সমাচারকে শনিবার বললেন, “এবারের গণনায় তো অনেক নিয়মকানুন। এ ছাড়াও নিজেদের সতর্ক থাকতে হচ্ছে। চাপটা তাই বেশি। আমার ২১ জন গণনা-এজেন্ট আর ২১ জন ‘ডামি’। ওঁদের কয়েকজনের করোনা পরীক্ষা করা ছিল না। আজ সকালে হাওড়া ময়দানের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এরকম কয়েকজনের পরীক্ষা করালাম। এক প্রস্থ আলোচনার পর দুপুরে বিশ্রাম। সন্ধ্যায় কালকের পর্ব নিয়ে আলোচনা। গণনা-এজেন্টদের খাবার, প্যাড-পেনের কিট, সেসবের সুষ্ঠু বন্টন— সব কিছুই মাথায় রাখতে হচ্ছে।” টেনশন কতটা? “নো টেনশন, চটজলদি উত্তর ‘স্বস্তিকা’র সম্পাদক তথা হাওড়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর। যে সিঙ্গুর পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পালাবদলের নেপথ্যে অনেকটা অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছিল, সেই সিঙ্গুরে মোর্টার তরফে সিপিএম প্রার্থী করেছে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যকে। গণনার প্রহরগোণা নিয়ে জানতে চাইলে শনিবার তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, “ওটা এখন সেভাবে মুখ্য নয়। আমরা এখন আক্ষরিক অর্থেই লাল স্বেচ্ছাসেবী। কারা মাস্ক পাচ্ছেনা, ওষুধ দরকার— এ সবের তদারকি করছি। কাল গণনা হবে চন্দননগরে কানাইলাল বিদ্যালয়ে। আমরা যেভাবে থাকা দরকার, সকাল থেকে অবশ্যই থাকব।” কতটা আশাবাদী? “আমি তো জ্যোতিষী নই! জিতব কী হবে জানিনা। তবে, ভাল ফল হবে। হ্যাঁ সিঙ্গুরে সিপিএম ভাল করবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.