‘মন কি বাতে’ দেশবাসীর মনোবল বৃদ্ধির চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন কি বাত-এ (Maan ki Baat) উঠে এল দেশের সর্বস্তরে ঘটে যাওয়া নানা দূর্যোগের কথা। এই বক্তৃতায় যেমন স্থান পেল ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে ঘটে যাওয়া আমফান ঘূর্ণিঝড়ের প্রসঙ্গ, তেমনি প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করলেন পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার কথাও। রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মূলত দেশবাসীর মনোবল বৃদ্ধির চেষ্টা করেছেন বারংবার। গত ২০ মে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফানের (Amphan Cyclone Strom) তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ওড়িশাতেও। সেই বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ ওড়িশার মানুষ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে লড়াই করছেন। আমি নিজে ঘুরে দেখেছি। বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, “আমি নিজে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করে এসেছি। সেখানে মানুষ যেভাবে এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাঁকে ঐ কুর্নিশ জানাতেই হয়। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার গুলির সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারও তাদের পাশেই আছে।”

কৃষিতে সঙ্কট দেখা দিয়েছে পশ্চিম ও মধ্য ভারতের চার-পাঁচটি রাজ্যে। হানা দিয়েছে কোটি কোটি পঙ্গপালের (Locust) দল। সেই দলটি হানা দিয়েছে পাঞ্জাব, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের কৃষি প্রধান অঞ্চলে। পঙ্গপালের হানায় একরের পর একর কয়েক কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে ইতিমধ্যে। এদিন পতঙ্গবাহিনীর হানায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, “পঙ্গপালের মতো পতঙ্গদের হানা কৃষির অনেক ক্ষতি করেছে। কিভাবে এই পঙ্গপালের রোধ করা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।”

গতকাল সন্ধ্যায় আনলক-ওয়ান (Unlock-1) কর্মসূচি শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। লকডাউন পরিস্থিতি থেকে দেশকে বেরিয়ে আসার প্রথম ধাপেই এই পদক্ষেপকে দেখা হচ্ছে। ‌এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে সবকিছু চালু হচ্ছে। এই সময় আরও সাবধান থাকতে হবে। মাস্ক পরা, ২ গজ দূরত্বের বিধি আরও সতর্ক ভাবে মেনে চলতে হবে।’’ লকডাউনে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrent Labours) সঙ্গে ঘটে গিয়েছে বেশ কিছু দুর্ঘটনা। মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গবাদে রেললাইন ধরে হেঁটে ফেরার সময় রাতে রেললাইনের উপরেই ঘুমিয়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। রাতে তাঁদের পিষে দেয় ট্রেন। এ ছাড়া হেঁটে ঘরে ফিরতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। আবার শ্রমিক স্পেশাল চালু হওয়ার পর থেকে বহু মানুষ বাড়ি ফিরছেন। বাসে করেও ফেরানো হচ্ছে শ্রমিকদের। পরিযায়ীদের  এই দুর্দশা নিয়েও এ দিন মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা অবর্ণনীয়। তাঁদের জন্য অনেক ব্যবস্থা করেছে সরকার।’’ 

কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থেকে যে দেশের এক কোটিরও বেশি মানুষ উপকৃত হয়েছেন এদিনের ‘মন কি বাত’-এ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি আসন্ন পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানে দেশবাসীকে বেশি বেশি করে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রেও অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.