অনুরোধে মান্যতা, শিক্ষা মন্ত্রকের বিষয়টি সর্বাগ্রে উত্থাপন করেছিলেন রামবাহাদুর রায়

ইতিহাস হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। এ বার থেকে এই মন্ত্রকের নাম হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। বুধবারই এই প্রস্তাবে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম পরিবর্তিত হওয়ায় খুশি ব্যক্ত করেছেন বিশিষ্ট আন্দোলনকারী এবং প্রবীণ সাংবাদিক রামবাহাদুর রায়। তাঁর একটি অনুরোধই বুধবার মেনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে এবার থেকে শিক্ষা মন্ত্রক বলা হবে। যদিও এই বিষয়ে কিছু মন্তব্য করতে চাইছেন না রামবাহাদুর রায়, এমনকি কৃতিত্বও নিচ্ছেন না। রামবাহাদুর রায় সর্বদাই ভাবতেন, শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত মন্ত্রকের নাম কীভাবে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক হতে পারে? তাঁর মতে, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক নামের কারণে অনেকটাই শ্রম বলে মনে হয়। এই কারণেই মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে পুনরায় শিক্ষা মন্ত্রক নাম দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে ছিলেন তিনি।২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন রামবাহাদুর রায়। সেই সময় সময় পোষণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, ফলস্বরূপ বুধবার নাম পরিবর্তিত হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের দিন। ওই দিন নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সমগ্র দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালকদের গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন ছিল। ইউজিসি, এএইসিটিইউ, আইসিএসএসআর, আইজিএনসিএ, জেএনইউ প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ওই সম্মেলনের মূল বিষয় ছিল ‘কনফারেন্স অফ একাডেমিক লিডার্স অন এডুকেশন ফর রিসার্জেন্স’। সম্মেলনে ৪০০-রও বেশি শিক্ষাবিদ অংশ নিয়েছিলেন। ওই সম্মেলনে যে সমস্ত কাগজপত্র পড়া হয়েছিল এবং গবেষণা অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, সেই সংকলনকে ‘শিক্ষার জাতীয় উপনিষদ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। ওই সম্মেলনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তৎকালীন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের পাশাপাশি ওই মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ডা. সত্যপাল সিং ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। ওই সম্মেলনেই নিজের প্রস্তাবিত ভাষণে রাজীব গান্ধী দ্বারা শিক্ষা মন্ত্রকের নাম পরিবর্তন করে মানব সম্পদ উন্নয়ক মন্ত্রক করাকে অনুচিত বলেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় কলা কেন্দ্রের সভাপতি রামবাহাদুর রায়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি অনুরোধ করেছিলেন, এই মন্ত্রককে যেন পুনরায় শিক্ষা মন্ত্রক করা হয়। এই নামই এই মন্ত্রককে স্বার্থকতা প্রদান করবে। সম্মেলনে উপস্থিত সকলেই এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হাসি মুখে এবং মাথা নেড়ে একপ্রকার স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। ওই সম্মেলনেই তৎকালীন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের উপস্থিতিতে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে শিক্ষা মন্ত্রক হিসেবে নামকরণের জন্য একটি প্রস্তাবও পাস করা হয়েছিল। বুধবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকেই মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.