কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ রাজ্যে কালীপুজো উপলক্ষ্যে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সব ধরনের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। দূষণ পর্ষদ বোর্ডের শীর্ষ আধিকারিক এবং কলকাতা পুলিশ এ বিষয়ে রবিবার শহরের বিভিন্ন আবাসনকে একত্রিত করে বৈঠক করে।
শহর এবং শহরের বাইরে আবাসন সহ বেশ কিছু এলাকায় শব্দ দূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে বাজি ফাটানো হয়। বেআইনি বাজিগুলি দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ৯০ ডেসিবেল ছাড়িয়ে যায়। এ বিষয়ে বিভিন্ন মানুষ পুলিশের কাছে ফোন করে অভিযোগও জানান। দূষণ পর্ষদের সেক্রেটারি রাজেশ কুমার কলকাতা পুলিশকে জানিয়েছেন কেউ যদি আইন ভাঙে তবে পরিবেশ সুরক্ষা আইনে তাকে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে। পরিবেশ সুরক্ষা আইনের আওতায় কেউ যদি পড়ে তবে তাকে পাঁচ বছরের জেল ও ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানাও হতে পারে। দূষণ পর্ষদের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘যদি মানুষ ভেবে থাকেন যে শব্দের মাত্রার নিয়ন্ত্রণ অতিক্রম করলে শুধু ২০০ টাকা জরিমানা দিলেই রেহাই মিলবে, তবে তারা ভুল ভাবছে। পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট একটি নিয়ম অনুসরণ করতে। কেউ যদি আইন ভাঙে এবং তা পুলিশের নজরে আসামাত্রই যেন আমাদেরও জানানো হয়। পরিবেশ সুরক্ষা আইনের অন্তর্গত নিয়ম ভঙ্গকারীকে শাস্তি দিতে পুলিশ যেন কোনও দ্বিধা বোধ না করে।’ কলকাতা পুলিশের অধীনে থাকা ১৪৬টি আবাসন এবং হাওড়া, ব্যারাকপুর ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটও এই বৈঠকে অংশ নিয়েছিল। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (রিজার্ভ ফোর্স) সুখেন্দু হিরা আবাসনের বাসিন্দাদের কাছে অনুরোধ করেন যে বাজি বাজার থেকেই যেন তাঁরা বাজি কেনেন। কলকাতায় এ বছর পাঁচটি বাজি বাজার বসবে এবং তিনটি বসবে হাওড়াতে। সুখেন্দু হিরা বলেন, ‘বাজি বাজারে পুলিশের কড়া নজরদারি থাকবে তাই সেখানে একমাত্র শব্দ দূষণের নিয়ম মানা এমন সব বাজিই পাওয়া যাবে।’ কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, বেশ কিছু ঘটনায় দেখা গিয়েছে আবাসনের মধ্য থেকে দেদার বাজির আওয়ার বা প্রচণ্ড জোরে মিউজিক চলছে, কিন্তু পুলিশ সেইসব আবাসনে ঢুকতে পারে না। রাজেশ কুমার পরামর্শ দেন যে এ ক্ষেত্রে পুলিশ ড্রোনের মাধ্যমে আবাসনের ছাদ থেকে নজরদারি চালাতে পারে। দূষণ পর্ষদ খুব শীঘ্রই তাষদের পরিবেশ অ্যাপে অনুমোদন রয়েছে এমন বাজির তালিকা আপলোড করবে। পুলিশও বিলি করবে প্রচারপত্র। দূষণ পর্ষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সবাই তো বাজি বাজার থেকে বাজি কিনতে পারেন না, অনেকে স্থানীয় বাজার থেকেও কেনেন। তাই সেই সব দোকানেও পুলিশ ও পর্ষদের অনুমোদিত বাজির তালিকা দেওয়া হবে।