এই দুটি কারনে তরুণরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়, জানালেন ICMR প্রধান

করোনায়(Coronavirus) কাঁপছে গোটাদেশ(India)। মারণ ব্যাধির দ্বিতীয় ধাক্কায় রীতিমতো বিপর্যস্ত জনজীবন। বাজারে ভ্যাকসিন চলে আসলেও কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না বর্তমান পরিস্থিতিকে। তারউপর হু-হু করে বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। এই অবস্থায় দেশের করোনা সংক্রমণ নিয়ে ফের প্রকাশ্যে এল আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য।

মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে একটি বিবৃতি দিয়ে আইসিএমআর(ICMR)-এর প্রধান ডঃ বলরাম ভার্গব(Dr. Balaram Bhargava) জানিয়েছেন, প্রতিনিয়ত করোনার রুপ পরিবর্তনের কারণে ভারতে করোনার(New Variants of Coronavirus)দ্বিতীয় ঢেউয়ে তরুণ প্রজন্মরা(Young people) সবচেয়ে বেশি সংক্রামিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, “করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় তরুণ প্রজন্মের বেশি আক্রান্ত হওয়ার পিছনে সম্ভাব্য দুটি কারণ রয়েছে। যেগুলি হল, করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তা তরুণদের শরীরের উপর প্রভাব ফেলছে। যার ফলে অনেক কম সময়ের মধ্যেই বেশিরভাগ যুবক যুবতী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।”

এছাড়াও মঙ্গলবারের এই বৈঠকে আইসিএমআর(ICMR Chief) প্রধানকে আরও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, “করোনার তৃতীয় ঢেউ শিশুদের কোনও ক্ষতি করবে কি না? এর জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?”

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, করোনার প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বয়সের খুব বেশি পার্থক্য নেই। তিনি বলেন, “আমরা এটি নিয়ে আগস্ট মাস পর্যন্ত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছি। তাতে ৪৫ বছরের বেশি বয়সী লোকেদের মৃত্যুর ঝুঁকির সম্ভাবনা বেশি। এছাড়াও হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার প্রায় ৯.৭ শতাংশ।”

যদিও চলতি পরিস্থিতিতে গত মার্চ মাস থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আরও বেশি সংখ্যক তরুণ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এই রিপোর্ট অস্বীকার করেছে কেন্দ্র(Central Government)।

তবে কেন্দ্রের তরফে প্রকাশিত ডেটায় দেখানো হয়েছে যে, করোনার প্রথম ঢেউয়ে করোনা সংক্রমিতদের ৩১ শতাংশ লোক ৩০ বছরের কম বয়সী এবং ২০২১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ শতাংশে।

অন্যদিকে, সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কে বিজয় রাঘাওয়ান সম্প্রতি বলেছিলেন যে, ” পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করলে দেশকে আমরা করোনার তৃতীয় ঢেউ থেকে রুখতে পারি।”

এরপরই বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছিল যে, করোনার থার্ড ওয়েভ (Third Weave)শিশুদের উপর বেশি প্রভাব ফেলবে। শুধু তাই নয়, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। অতীমারি ঠেকাতে মহারাষ্ট্র(Maharashtra) সরকার রাজ্যে শিশু বিশেষজ্ঞ(Paediatric care Centre) কেন্দ্র স্থাপনও শুরু করে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ৪২১ জন। মঙ্গলবারের তুলনায় বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। মঙ্গলবার ৩ লক্ষ ২৯ হাজার ৯৪২ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। এদিন ফের মৃত্যুর সংখ্যা ৪ হাজারের গণ্ডি টপকালো। মঙ্গলবার যেখানে ৩ হাজার ৮৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেখানে বুধবার ৪ হাজার ২০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। কমেছে দৈনিক সুস্থতার হারও। মঙ্গলবার ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে বুধবার ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩৩৮ জন সুস্থ হয়েছেন। এই মুহূর্তে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৩৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৯৩৮ জন। সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ লক্ষ ৪ হাজার ৯৯ জন। এখনও পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৬৪২ জন। দেশের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ১৯৭ জনের। মোট ১৭ কোটি ৫২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৯৯১ জনকে এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.