অনুপ্রবেশ, জম্মু-কাশ্মীর, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক। কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরে আপাতত এই বিষয়গুলি নিয়েই মাথা ঘামাবেন অমিত শাহ। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রমাণ করেছেন, কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা নেই তাঁর। কাজেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবেও তিনি কয়েকটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অফিসাররা অমিত শাহের কাছে নানা নথিপত্র পেশ করেন। মন্ত্রকের কাজের বিবরণ দেন। পরে অফিসাররা জানিয়েছেন, অমিত শাহ তাঁর পূর্বসুরীদের মতো নন। তিনি অফিসারদের সঙ্গে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, অমিত শাহ মন্ত্রকের কাজকর্মে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে চান। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ব্যাপারে তিনি আরও কঠোর নীতি অবলম্বন করবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তিনি কিছু নতুন ধ্যানধারণা চালু করতে পারেন।
একটি মহলের ধারণা, ৫৪ বছরের অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের গুরুত্ব কমবে। এর আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বেশিরভাগ সময় দোভালের কথা শুনে চলতেন। কিন্তু অমিত শাহ আরও কঠোর প্রকৃতির মানুষ। তিনি সব সময় দোভালের পরামর্শ মেনে কাজ করবেন কিনা সন্দেহ। প্রথম এনডিএ সরকারে দোভাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চোখ ও কান হিসাবে কাজ করতেন। কিন্তু অমিত শাহ মোদীর দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ। এখন আর মোদী দোভালের ওপরে অত নির্ভর করবেন কিনা সন্দেহ আছে।
নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জম্মু ও কাশ্মীর। নির্বাচনী প্রচারের সময় অমিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে সংবিধানের ৩৫ এ ধারাটি বাদ দেবেন। কারণ তাতে কাশ্মীরের অস্থায়ী বাসিন্দাদের প্রতি বৈষম্যের কথা বলা হয়েছে। মহিলাদেরও সমদৃষ্টিতে দেখা হয়নি। তিনি ৩৭০ ধারাও বাতিল করার কথা বলেছেন। কারণ ওই ধারায় আছে, কাশ্মীরে আলাদা পতাকা ও সংবিধান থাকবে।
লোকসভা ভোটে বিজেপি জম্মু-কাশ্মীরে ছ’টি আসন জিতেছে। গত বিধানসভা ভোটে তারা পেয়েছিল ২৫ টি আসন। আগামী নভেম্বরে সেখানে ফের বিধানসভা ভোট হবে। বিজেপির আশা এবার তাদের আসন বাড়বে আরও।
নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ভোটের প্রচারের সময় বলেছিলেন, অনুপ্রবেশকারীরা উইপোকার মতো। যে খাদ্য গরিবদের পাওয়া উচিত, তারা খেয়ে নিচ্ছে। তারা আমাদের কাজ কেড়ে নিচ্ছে। মন্ত্রী হওয়ার পরে অমিত শাহ অনুপ্রবেশকারীদের সম্পর্কেও কঠিন সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।