দুটো সিনেমাই নাইহিলিজম দিয়ে শুরু , নাইহিলিজমের শুরু এবং শেষ হচ্ছে শূন্যতা ,শূন্য দিয়ে শুরু ,শূন্যতে শেষ , বৌদ্ধ শূন্যবাদ প্রকারান্তরে নাইহিলিজমের বাপ। শূন্য বলতে অর্থহীনতা , জীবনের অর্থহীনতা , অস্তিত্বের অর্থহীনতা , আমি কে জিজ্ঞাসার উত্তর যখন একরাশ শূন্যতা
তাই নাইহিলিজম। ম্যাট্রিক্স সিনেমা, সেই ১০১ এপার্টমেন্টের ঘর থেকে ,শুরু হয়ে , আপাত অৰ্থহীনতা কে জয় করে ক্রমশ বিশ্বাস ভালোবাসা এবং রেসারকশনের (পুনর্জন্ম) মাধ্যমে জুডোখ্রিস্টান মত অনুসারী “the one” হয়ে ওঠার বা মহামানব হয়ে ওঠার কাহিনী , কিন্তু জোকার সিনেমার গন্তব্য সম্পূর্ণ বিপরীত! একপ্রকার ব্যক্তিগত নাহিলিজমের বিষকে সমগ্র সমাজে সংক্রমণ ঘটানোর কাহিনী , অনেকটা করোনা ভাইরাসকে ছড়িয়ে দিয়ে সারা পৃথিবীতে “আগ্রাসী চৈনিক মিডল কিংডম কমপ্লেক্স” প্রতিষ্ঠা করার গল্পের মতো।
আমার প্রিয় দার্শনিক নীৎসে এবং শোপেনহাওয়ার নাইহিলিজমের মূল দোগ্ধা , নাইহিলিজমের টোটাল ছয়টা প্রাথমিকস্তম্ভ “epistemological”, “metaphysical ” , “political “, “moral”, “cosmic” & “existential “
প্রসঙ্গ বিশেষে বলা দরকার , হিন্দু ধর্মে যে চারটে পুরুস্বার্থ আছে ?(ধর্ম-অর্থ-কাম-মোক্ষ) ,পশ্চিমী দুনিয়া , অজ্ঞানতিমিরঅন্ধ অবস্থায় উহাকে অর্থ তিনটে শব্দে নিবন্ধ করেছে ,(১. pleasure ,২. engagement & ৩.meaning) .মানুষ pleasure না পেলে কোনো কিছুতে engaged হবে না
কারণ কোনো কাজে engage হওয়া meaningless , যদি সে কাজের কোনো উদ্দেশ্য (meaning ) না থাকে pleasure ও অধরা রয়ে যায় , কিন্তু দিনের শেষে liberation বা মোক্ষ ব্যাপার টা অছ্যুত অধরা রয়ে গেলো।
বৌদ্ধরা তবুও নির্বানের উপর প্রাধান্য দেয় , আমাদের ওমকারের অকারে এবং উকার যেমন মকারে লয় হয়ে মাত্রা -পাদ বিহীন তুরীয় অবস্থা প্রাপ্ত হয় , বৌদ্ধদের কাছে তাই নির্বাণ এবং বর্ণ গন্ধহীন অলক্ষ্য শূন্যতা , তবে পশ্চিমাদের কাছে পুরুস্বার্থ হচ্ছে ম্যালফাংশনিং কম্পাস , যা দিক নির্দেশের বদলে “এন্ড টাইম” বা “জাজমেন্ট ডে” কে নির্দেশ করে। এর জন্যে হয়তো শোপেনহাওয়ার দায়ী।
কিন্তু যদি নিজের দিকে তাকাই বা আয়নার সামনে দাঁড়াই , অবাক কাণ্ড , আমরা জীবনও তো ৯০% অর্থহীন ,বাই ডিফল্ট আমরা কম বেশি নাইহিলিস্টটিক , সত্যকথা যে আমাদের (as individual ) ইতিহাসের ফুটনোটেও ঠাঁই হবে না , যতই এক্টিভিষ্ট হই, বা হাত পা ছুড়ি বা ফেসবুকে ফুটেজখোড় সেলেব্রিটি হই , হ্যাঁ , ইতিহাসের অবশেষেও আমাদের ঠাঁই হবেনা , যতই নিজেকে নিপীড়িত বঞ্চিত বালছাল প্রমান করতে চাই, আমাদের চেতনায় মুদিখানায় চালের দাম ,পেট্রোলের আকাশছোঁয়া দাম , ঘর কিনতে গিয়ে আগামী পঞ্চাশ বছরের অর্থকামকে জাস্ট জলাঞ্জলি দিতে হবে ,ইত্যাদি চিন্তা ঘোরাফেরা করে। রাষ্ট্র যতই উদারমনা হোক আমার জীবন শূন্য।
এই একটানা এলার্মের মতো একঘেঁয়ে শব্দকে অতিক্রম করার সুযোগ আমাদের সবার জীবনেই আসে , ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন জেফারসন এয়ারপ্লেনের বিখ্যাত গান বেজে ওঠে “one pill makes you larger and one pill makes you large “
কল্যাণ ধারা