আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় চরম বিপদে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। দিল্লি হাইকোর্ট পর পর দু’টি আগাম জামিনের মামলা খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু ঠিক কী অভিযোগ কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতার বিরুদ্ধে?
এই মামলার শুরু ২০১৭ সালে। সেই সময়ে প্রকাশ্যে আসে আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলা। সিবিআই প্রথম মামলা দায়ের করে ২০১৭ সালের ১৫ মে। এই মামলার তদন্তেই উঠে আসে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের নাম। আইএনএক্স মিডিয়ার বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে আসা ৩০৫ কোটি টাকার তছরুপের অভিযোগ ওঠে। শুধু সিবিআই নয় এই মামলায় অভিযোগ করে ইডিও। পরে ইডির তরফে দায়ের হয় আরও একটি মামলা।
এত টাকার লেনদেনের জন্য কী ছিল কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ডের (এফআইপিবি) ভূমিকা? এই প্রশ্নও ওঠে তদন্তে। আর তার খোঁজখবর নিতে গিয়েই আসে পি চিদাম্বরমের নাম। এই লেনদেন যখন হয়েছিল তখন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ছিলেন চিদম্বরম। তিনি কীভাবে এমন ক্লিয়ারেন্স দিলেন, তা নিয়ে শুরু হয় খোঁজ। আর তাতেই চিদম্বরমের নাম জড়িয়ে যায় এই মামলায়।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, আইএনএক্স মিডিয়া ২০০৭ সালে এফআইপিবি-র দ্বারস্থ হয়। তাদের বক্তব্য ছিল ১০ টাকা দরে তারা তিন অনাবাসী ভারতীয়র থেকে ১৪.৯৮ লাখ ইকুইটি শেয়ার ও ৩১.২২ লাখ প্রেফারেন্স শেয়ার ছাড়তে চায়। আইএনএক্স মিডিয়ার ইকুইটি মূলধনের ৪৬.২১ শতাংশ এই শেয়ারের মূল্য। এর পরে এফআইপিবি আইএনএক্স মিডিয়াকে ৪.৬২ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র দেয়।
সিবিআইয়ের অভিযোগ আইএনএক্স মিডিয়া এফআইপিবি-র ছাড়পত্র নিয়েছিল ৪.৬২ কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য। কিন্তু তার বদলে ৩০৫ কোটি টাকা সংস্থায় নিয়ে আসে। আর এই অনিয়মের পিছনেই চিদম্বরেমের ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
২০১৮ সালের ২৩ জুলাই এই মামলায় দিল্লি হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন পি চিদাম্বরম। সেই সময় ২৫ জুলাই চিদাম্বরমকে রক্ষা কবচ দেয় আদালত। কিন্তু ২০১৯ সালের শুরুতে এই জামিন মামলায় রায় রিজার্ভ রাখে দিল্লি হাইকোর্ট। এদিন দিল্লি হাইকোর্ট চিদাম্বরমের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল।
তদন্তের মধ্যেই পি চিদম্বরমের ছেলে কার্তির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্তেও এই মামলার কিছু সূত্র পান তদন্তকারীরা। কার্তির চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ভাস্কররমণের কম্পিউটার থেকে আইএনএক্স মিডিয়া সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য পায় ইডি। ওই নথি থেকেও নানা ইঙ্গিত মেলে। জানা যায়, যে সময়ে অর্থমন্ত্রক এফআইপিবি ছাড়পত্র দিয়েছে, সে সময়েই আইএনএক্স মিডিয়া কার্তির অভিযুক্ত সংস্থায় অর্থ দিয়েছে।
শুধু টাকা দেওয়াই নয়, সিবিআইয়ের অভিযোগ, আইএনএক্স মিডিয়ার দুর্নীতি আড়াল করতে নানা প্রভাবও কাজে লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।