১- দেবী সরস্বতীর উপাসনা
বিজয়াদশমীর দিন দেবীর উপাসনা একটি মূর্ত আত্মার প্রকাশিত ভাবকে একটি অপ্রকাশিত রূপে রূপান্তরিত করে এবং এর স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সহায়তা করে। তথ্যসূত্র: ভারতীয় সংস্কৃতিকোষ, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা নং ৩১৯, ৩২০
২- এটা বিশ্বাস করা হয় যে, শ্রীরামচন্দ্র এই দিন রাবণ বধের জন্যে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছিলেন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই এই দিন বিজয়া দশমী পালন করা হয়।
৩- দশেরা বিজয়ের উৎসব।তাই এইদিন রাজা-মহারাজারা বিশেষ রীতিনীতি পালন করতেন। এটি ছিলো বিজয় এবং বীরত্বের অনুষ্ঠান! অজ্ঞাতবাসে যাওয়ার আগে অর্জুন তাঁর সমস্ত অস্ত্রসস্ত্র গুলিকে একটি শমীগাছের কোটরে লুকিয়ে রেখেছিলেন। পরে যখন কৌরবরা বিরাট রাজার গোশালা লুঠ করতে আসে তখন অর্জুন সেই কোটর থেকে অস্ত্রশস্ত্র বের করে করে এনে কৌরবদের পরাজিত করেন।
বিজয়া দশমীর গুরুত্ব এবং শমীপুজো
পাণ্ডবরা তাদের অস্ত্রশস্ত্র পাহারা দেওয়ার জন্য দুর্গাপুজোর সঙ্গে শমীগাছকেও পুজো করেছিলো। যেহেতু দিনটি ছিলো কৌরবদের বিরুদ্ধে তাদের বিজয়ের দিন‚ তাই দিনটি বিজয় দিবস হিসাবে পালিত হয় এবং শমী পুজোও বিজয়া দশমীর সঙ্গে পালিত হয়।
৩- পুরাকালে কৃষকেরা বছরের প্রথম ফসল তোলার পর দশেরার দিন খুশির উৎসব পালন করতো। নবরাত্রিতে‚ অর্থাৎ যেদিন ঘট স্থাপন করা হতো সেদিন নয় ধরনের খাদ্যশস্য নিয়ে একটি পাত্রের মধ্যে অঙ্কুরিত করা হতো। দশেরার দিন অঙ্কুরিত বীজগুলি দেবতাকে উৎসর্গ করা হতো। বিভিন্ন জায়গায় বাড়ির দরজাগুলিকে ধানের গোছা দিয়ে সাজানো হতো। যা নির্দেশ করে যে দশেরা আসলে কৃষকদের উৎসব ছিলো। বিজয়া দশমী চাষের সময়েরও সূচনা করে। সবাই এই দিনে ভালো শস্য‚ শান্তি এবং উন্নতির লক্ষ্যে ধরিত্রী মাতার আশীর্বাদ প্রার্থনা করত। (উৎস – ভারতীয় সংস্কৃতি কোষ, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩১৯-৩২০)
৪- মাধবাচার্য এবং বিজয়াদশমী
১২৩৮ সালে বিজয়া দশমীর দিন শ্রী মাধবাচার্য জন্মগ্রহণ করেছিলেন দক্ষিণ কর্ণাটকের উদুপি গ্রামের থেকে প্রায় তিন মাইল দূরে অশ্বযুজ মাসে। তার পিতা ছিলেন ভাগবত সম্প্রদায়ের একজন ধার্মিক ব্রাহ্মণ, এবং পেশায় ছিলেন পৌরাণিক।
৫- ভেলু নাচিয়ার এবং কুইলি – ১৮৫৭ সালেরও ৮৫ বছর আগে এই বীরাঙ্গনা বিজয়া দশমীর দিনে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেছিলেন।
সোর্স – https://www.thebetterindia.com/157316/news-india-independence-women-fighters-british-raj
৬- ১৯২৫ সালে বিজয়া দশমীর দিন আরএসএসের প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো। শ্রীরামচন্দ্র এবং শ্রীকৃষ্ণের প্রতি বীর সাভারকারের ছিলো অপরিসীম শ্রদ্ধা। তিনি এই দুইজনকে দেশের প্রধান সেনাপতি এবং সর্বাধিনায়ক বলে উল্লেখ করতেন। ১৯০৯ সালে তাঁর হাত ধরেই লন্ডনে প্রথম বিজয়া দশমী পালিত হয়। রামচন্দ্রের কাজকে স্মরণ করে তিনি বলতেন, ” শ্রীরামচন্দ্রের সিংহাসন ত্যাগের আপাত কারণ যদিও ছিলো পিতৃসত্য রক্ষা, কিন্তু তার আসল কারণ ছিলো রাক্ষস দমন। যখন তিনি লঙ্কা আক্রমণ করে রাবণ হত্যার জন্যে ধর্মযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন তাঁর ভূমিকা ছিলো গৌরবোজ্জ্বল।”
উৎস Hindu Mahasabha in Colonial North India, 1915-1930: Constructing Nation By Prabhu Bapu
অন্য উৎস https://books.google.co.in/books?id=iUFalxUFFWkC&pg=PA110&lpg=PA110&dq=vijaya+dashami+1857&source=bl&ots=PR7nu44CAS&sig=Wn17aPh1363zlXOqqySH7Q94SMw&hl=en&sa=X&ved=2ahUKEwj1ieCfvIHeAhXLP৪8KHUh6BF০৪ChDoATAGegQIBRAB#v=onepage&q=vijaya%20dashami%201457&f=false
৭- ১৯৩১ সালের ২৩শে অক্টোবর, কর্ণাটকের দক্ষিণ কান্নাডা জেলার ম্যাঙ্গালুরুতে এ.বি.শেট্টির নেতৃত্বে একদল কৃষকের দ্বারা বিজয়া ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। বিজয়া দশমীর শুভদিনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্যে এর নাম হয়েছিল ‘বিজয়া ব্যাঙ্ক’.
৮ -১৯৫৬ সালের ১৪ই অক্টোবর নাগপুরের দীক্ষাভূমিতে এই বিজয়া দশমীর দিনে বাবা সাহেব আম্বেদকর বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। আজও সেই ঘটনা স্মরণ করে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে অনুষ্ঠান পালন করা হয়।
৯- সরস্বতী পুজো এবং বিদ্যারম্ভ
বিদ্যাশিক্ষা শুরুর জন্যে সরস্বতী পুজোর দিনটিকে শুভদিন মনে করা হয়। প্রধানত কর্ণাটক এবং কেরালাতে এই দিন থেকেই শিশুদের নাচ, গান, ভাষাশিক্ষা বা অন্যান্য লোকশিল্প শিক্ষা দেওয়া শুরু হয়। বাবা বা অন্য কোনো গুরুজনের সাহায্যে শিশুরা একটি প্লেটের উপর ধান বা বালি ছড়িয়ে দিয়ে তার উপর একটি মন্ত্র লিখে তাদের বিদ্যাশিক্ষার সূচনা করে।
১০- বিজয়া দশমী এবং ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির
ঢাকাতে এই সময় ৫ দিন ধরে অনুষ্ঠান এবং ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। ঢাকেশ্বরী মন্দির এবং ঢাকার রামকৃষ্ণ মন্দিরে অনুষ্ঠিত হওয়া উৎসবগুলির মধ্যে এটিই সবথেকে বড়।
১১- ইউনেস্কো এবং বিজয়া দশমী
২০০৮ সালে বিজয়া দশমীকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে ‘”Intangible Cultural Heritage of Humanity” বলে উল্লেখ করা হয়।
বিজয়া দশমীতে অস্ত্রপুজোর গুরুত্ব
আয়ুধ পুজো : অস্ত্রের আরাধনা – নবরাত্রির নবম দিনে অনুষ্ঠিত হয় আয়ুধ পুজো বা শস্ত্র পুজো।
তারপর দশম দিনে অস্ত্রগুলির সুব্যবহারের জন্যে দেবীর থেকে আশীর্বাদ নেওয়া হয়।
বিজয়াদশমী –
এই আয়ুধপুজো অনুষ্ঠিত হয় সারা ভারত জুড়ে। ঐতিহ্যগত ভাবে এটি ছিলো অস্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং অস্ত্রের ব্যবহারের প্রতি দায়বদ্ধ, যেমন রাজকীয় পরিবার বা মার্শাল আর্টের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের যেমন কালারিপাযাত্যু দের উৎসব! কিন্তু বর্তমানে অস্ত্র সাধারণত দেখা যায় পুলিশ,নিরাপত্তা রক্ষী এবং আর্মিদের হাতে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ ইউনিটই বহুদিন ধরে অস্ত্রপুজো করে আসছে।
বিজয়াদশমীকে ঘিরে হিন্দুদের অস্ত্রপুজোর বহু ঐতিহ্য আছে। বিশেষত, এইদিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে এবং রাম রাবণকে বধ করেছিলেন। যদিও এতটা পরিচিত নয়, পাণ্ডবরা ১২ বছরের বনবাস এবং এক বছরের অজ্ঞাতবাসের পর এইদিনেই শমী গাছের কোটর থেকে তাদের অস্ত্র উদ্ধার করে কৌরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এই ঘটনাকে স্মরণ করে, কর্ণাটকের মহারাজা এই দশম দিনে একটি সজ্জিত হাতির পিঠে চেপে মহীশূরের বান্নিমানতাপাতে যান, সেখানে একটি শমী গাছকে সম্মান জানানো হয়। মহীশূরের প্রধান রাস্তায় হওয়া এই শোভাযাত্রার জন্যই মহীশূরের দশেরা বিখ্যাত।
শস্ত্রপুজো শিখদের মধ্যেও জনপ্রিয়। গুরু গোবিন্দ সিং তাঁর শিষ্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন শস্ত্রপুজো বা তলোয়ার পুজো করার জন্য। এর সঙ্গে স্তব গাওয়া হতো, চণ্ডী দি ভার ( অথবা ভার শ্রী ভগৌতিজী কি ও বলা হতো )। এটি ছিলো গুরুর লেখা একটি গান যেটা নেওয়া হয়েছিল দশম গ্রন্থের পঞ্চম অধ্যায় থেকে। এই ভারটির ভিত্তি হলো সংস্কৃত মার্কণ্ডেয় পুরাণের একটি যুদ্ধের ঘটনা। যেখানে ইন্দ্রের নেতৃত্বাধীন দেবতাদের সঙ্গে শুম্ভ-নিশুম্ভের নেতৃত্বাধীন অসুরদের যুদ্ধ হয়েছিলো। সেই যুদ্ধে অসুর নিধনের জন্যে দেবী মহামায়া নিজেকে একটি স্বর্গীয় তলোয়ারের রূপ দিয়েছিলেন। শিখদের মধ্যে যুদ্ধোন্মাদনা সৃষ্টি করা চণ্ডী দি ভার স্তবটি তাদের সবথেকে বড় যোদ্ধা শ্রেণী নিহঙ্গ শিখদের অত্যন্ত প্রিয়। চণ্ডী এবং ভগৌতি (ভগবতী) নাম দুটোর উৎস হচ্ছে মার্কণ্ডেয় পুরাণের দেবী মাহাত্ম্য। শিখদের এই অস্ত্রপুজো হিন্দু এবং শিখদের মধ্যে সুগভীর সম্পর্ক নির্দেশ করে।
কিছু বামপন্থী বুদ্ধিজীবী বিজয়াদশমী এবং নবরাত্রিকে নিয়ে অর্থহীন বিতর্কের সৃষ্টি করে। তাদের মতে দুর্গা হলেন একজন আর্য দেবী যিনি দ্রাবিড় মহিষাসুরকে হত্যা করেছিলেন। এই কারণে আয়ুধ পুজো নাকি একটি আর্য সংস্কৃতি! কিন্তু মজাদার হলো তামিলনাড়ুতেও একইরকম দেবীপুজো এবং অস্ত্রপুজোর ঐতিহ্য আছে। সঙ্গম সাহিত্যে যুদ্ধের দেবীর নাম কোট্রাবাই! এই দেবীই শুম্ভ-নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন, যাকে দেবী মাহাত্ম্যে সম্মান জানানো হয়েছে। ইনিই চণ্ডী দি ভারের দেবী, তামিল সাহিত্যে যাকে বলা হয় নিশুম্ভ সুদিনী (নিশুম্ভের হত্যাকারী)! ইনি বিজয়ের অধিষ্ঠাত্রী এবং চোল সাম্রাজ্যের যুদ্ধের দেবী। চোল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বিজয়ালয় কুম্ভকোনমের কাছে নিশুম্ভ সুদিনী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অন্য এক জনপ্রিয় দেবী মুরুগাও ছিলেন যুদ্ধের দেবতা। পুষাম হলো তামিলদের একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠান (যদিও উত্তর ভারতে এটি তেমন পরিচিত নয়), যেটি অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয়। শুধু স্বদেশে না, এমনকি শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী তামিলদের মধ্যেও।
দেবী পার্বতী মুরুগাকে শক্তিশালী করতে তাঁর হাতে বর্শা তুলে দিয়েছিলেন, যার সাহায্যে অসুরদের বিরুদ্ধে দেবতারা জয়ী হয়েছিলেন। এই ঘটনাকে স্মরণ করে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে পুষাম উৎসব করা হয়। এটা হলো আরেকটি অস্ত্র পুজোর উদাহরণ! প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মুরুগাওয়ের বর্শা এবং বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র হলো এমন দুটো উদাহরণ, যেখানে তাদের নিয়ন্ত্রক দেবতাদের ছাড়াই তাদের পুজো করা হয়।
এই অস্ত্রপুজো হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে কী ধারণা দেয়?
এই প্রসঙ্গে এসে আমরা হিন্দু ধর্ম বা ধার্মিক আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে আব্রাহামিক সংস্কৃতির পার্থক্য বুঝতে পারি। কিন্তু তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ যে, এটি হিংসার প্রতি, একইভাবে অহিংসার প্রতি হিন্দু ধর্মের মনোভাব বুঝতে পারি। যদি কোনো রাজা যুদ্ধের দেবতার আরাধনা করে, যুদ্ধাস্ত্রের আরাধনা করে তবে এসবের থেকে সে আক্ষরিক ভাবেই যুদ্ধের উদ্দীপনা লাভ করতে পারে। কিন্তু হিন্দুধর্ম সাধকদের জন্যে এইসব পৌরাণিক আখ্যানগুলোর রূপকধর্মী ও আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যাও রেখেছে। অসুরদের সঙ্গে দেবতাদের ভেতরের এই যুদ্ধকে মনের ভেতরে পাপ-পুণ্যের সংগ্রাম বলে বিবেচিত হতে পারে। মহিষাসুরের হত্যা আমাদের ভেতরের তামসিক গুণের ধ্বংস বলে মনে করা যায়। পার্বতীর থেকে মুরুগার বর্শা পাওয়ার ঘটনাতে সর্বোচ্চ সত্যের ব্যক্তিত্বের আরোপ ঘটে। যেখানে ভগবান শিব নিজেই ‘ওম’ শিক্ষা পান বলে ব্যাখ্যা করা যায়। প্রসংগত মুরুগা পূজিত হন স্বামীনাথন রূপে, যেখানে স্বামী মানে যে শিক্ষা দেয় আর নাথ মানে মহাদেব।
দ্বিতীয়ত, আব্রাহামিক ঐতিহ্যের সঙ্গে বহুলাংশে আলাদা হয়ে সমস্ত সৃষ্টি এবং স্রষ্টা – উভয়ের উপরেই অন্তর্নিহিত এবং সর্বোৎকৃষ্ট এই দুই রূপেই হিন্দু ধর্ম দেবত্ব আরোপ করে। এই ধরনের মানসিকতাই এখানে সবকিছুকে স্বর্গীয় করে তোলে। কাজ করাটাই এখানে একটা আরাধনা। এবং কর্মযোগের দর্শন সম্পূর্ণ অন্যভাবে অস্ত্রপুজোকে ব্যাখ্যা করে। অস্ত্র মানে এখানে কাজ করার যন্ত্র। নবরাত্রির নবম দিনে, সবাই তাদের যন্ত্রকে স্বর্গীয় রূপ দেওয়ার জন্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে, সাজিয়ে গুছিয়ে রাখে। যেমন সংগীতজ্ঞরা সংগীতের যন্ত্রকে, কৃষকের চাষের যন্ত্রপাতিকে, ছাত্রছাত্রীরা তাদের বইখাতাকে, কলকারখানাগুলো তাদের যন্ত্রপাতিগুলোকে এবং সৈন্যরা তাদের অস্ত্রকে। এটা সম্ভবত আরও বেশি কৌতুহলোদ্দীপক যে, একটি সংস্কৃতি, যেখানে অস্ত্রের পুজো করার সংস্কৃতি আছে, তারা হিংসা বনাম অহিংসার প্রশ্নকে কীভাবে দেখে থাকে!
ধর্ম, অর্থ, কর্ম এবং মোক্ষ হলো হিন্দু ধর্মের চারটে মূল পুরুষার্থ (জীবনের লক্ষ্য)। ধার্মিক আচরণ হলো মূল ভিত্তি, যার উপর দাঁড়িয়ে জীবনের অন্য লক্ষ্যগুলি অর্জিত হয়। ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে একজন সৈনিকের ধর্ম হলো প্রয়োজনের খাতিরে যুদ্ধ করা। সামাজিক ক্ষেত্রে শাসকের উচিত ধর্মকে বলবৎ রাখা ও সমাজকে রক্ষা করা। অস্ত্রের ব্যবহার এক্ষেত্রে ধর্মকে রক্ষা করার পবিত্র কর্তব্য রূপে দেখা উচিত। অস্ত্রের ব্যবহারের মধ্যে ধর্মের প্রবেশ আমাদের ব্যাখ্যা করে কেন প্রাচীন ভারতে যুদ্ধ এত কঠোর নিয়ম নীতি মেনে চলতো। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, এক্ষেত্রে যুদ্ধ শুধুমাত্র সৈন্যদের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকতো, সমাজের অন্যান্য শ্রেণীকে তা স্পর্শ করতো না।
চতুর্থ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজসভায় আসা গ্রীক রাজদূত মেগাস্থিনিস মৌর্য সেনাবাহিনীকে নিয়মিত এবং পেশাদার বলে উল্লেখ করেছেন, যাদের রাষ্ট্রের খরচে নিয়োগ করা হতো, শিক্ষা দেওয়া হতো এবং ভরণপোষণ করা হতো। তারা কখনোই কৃষকের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতো না। তিনি বলেছিলেন, “যদি কোথাও কোনো যুদ্ধ বাঁধত, তবে দেখা যেত একই সময়ে একই অঞ্চলে সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে মরণপণ যুদ্ধ করছে আর কিছুটা দূরে কৃষকেরা নিরাপদে কৃষিকাজ করে যাচ্ছে”।২
সুলেমান, একজন আরব বণিক, যিনি নবম শতকের মধ্যভাগে বেশ কয়েকবার ভারতে এসেছিলেন তিনি লিখে গেছেন, “ভারতীয়রা কখনো সখনো যুদ্ধ করে বটে তবে তা অত্যন্ত বিরল। আমি কখনোই দেখিনি এক দেশের মানুষ অন্য দেশ জয় করে সেই দেশের বাসিন্দাদের তাড়িয়ে নিজেরা বসতি স্থাপন করে। যখন একজন রাজা তার প্রতিবেশী দেশ দখল করে সে তখন পরাজিত রাজপরিবারেরই কোনো একজনকে সিংহাসনে বসায়, যে বিজয়ী রাজার নামে শাসনকার্য চালাতে থাকে। রাজ্যের বাসিন্দারা এইসব ব্যাপারে কখনোই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।” ৩
আরেকবার মেগাস্থিনিসের বর্ণনায় ফিরে যাওয়া যাক। কৃষিকাজের বর্ণনায় কী বলেছিলেন তিনি? না, ‘চাষ হতো সম্পূর্ণ নিরাপদে।’ হয়তো বা কৃষক কখনো মাঠ ছেড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে এসে পড়তো, বা হয়তো যুদ্ধক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করতে যেত। তবে সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রে তার সামিল হওয়াটা আকাঙ্ক্ষিত ছিলো না। যোদ্ধারা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতো, কৃষকের ধর্ম ছিলো লাঙল। ৪
প্রায় ১০০০ বছরের পার্থক্যে দুজন বিদেশী পর্যটকের বর্ণনায় এই অভাবনীয় মিল এটাই প্রমাণ করে যে, এইসব মতের ভেতর কিছু সত্যি অবশ্যই আছে। আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলেও এটি অত্যাশ্চর্যজনক। জেনেভা কনভেনশনের একটি ধারায় বলা হয়েছে যুদ্ধের সময় সাধারণ নাগরিকরা যেন যুদ্ধের লক্ষ্য না হয়। আর এটাই লুটতরাজ, শহর ধ্বংস, গণধর্ষণ, হত্যা, গায়ের জোরে ধর্মান্তকরণ ইত্যাদির সাহায্যে ঘটা ভারতে ইসলামী আগ্রাসনের যে “সার্বিক যুদ্ধ”-এর ধারণা, তার সঙ্গে ভারতের ধ্যানধারণার পার্থক্য গড়ে দেয়।
পরিশেষে বলা যায়‚ যে ঐতিহ্য অস্ত্রের উপর দেবত্ব আরোপ করে তা অহিংসার মর্ম বোঝে। হিন্দু আদর্শ অহিংসা থেকেই মহাত্মা গান্ধী তাঁর জগৎবিখ্যাত অহিংসার ধারণা পেয়েছিলেন। কিন্তু গান্ধীর অহিংসা আর ধর্মের অহিংসা পুরোপুরি একই না। আসলে সম্পূর্ণ অহিংসা ছিলো সন্ন্যাসীদের প্রতি একটা নির্দেশ মাত্র। আর গান্ধী অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে সন্ন্যাসীসুলভ অহিংসার সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে মিশিয়ে দিতে পেরেছিলেন। যেখানে যুদ্ধের রীতিনীতিতে বা ভগবদ্গীতাতে হিন্দু নিয়মকানুন পরিষ্কার করে বলা আছে যে, যুদ্ধের ময়দানে হিংসা বর্জন করা আসলে অধর্মকেই প্রশ্রয় দেয়। ঋগ্বেদের ষষ্ঠ মণ্ডলের ৭৫ তম মন্ত্রে রথে বসে থাকা মহান ধর্মরক্ষককে স্তুতি জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রনীতি বিষয়ক অমর গ্রন্থ ‘অর্থশাস্ত্র’-তে প্রতিরক্ষা এবং বৈদেশিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে অন্য রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তি হিসাবে সাম (conciliation), দান (gift), ভেদ (dissensions) এবং দণ্ডের (force) উল্লেখ করা হয়েছে। লক্ষণীয় যে, যুদ্ধ হলো এখানে সর্বশেষ অস্ত্র, এবং এটি তখনই ব্যবহার করা যাবে যখন অন্য অস্ত্রগুলি ব্যর্থ হবে। পরাজিত রাজার প্রতি জয়ী রাজার আচরণ কেমন হবে সে বিষয়ে চাণক্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, “কোনো দেশ জয় করে বিজয়ী রাজা পরাজিত রাজার দোষগুলিকে নিজের গুণ দিয়ে পরিপূরণ করে দেবে। আর শত্রু যদি ভালো হয় তবে তাকে হতে হবে দ্বিগুণ ভালো। সে নতুন প্রজাদের খুশি করতে ধর্ম মেনে চলবে, অনেক সুবিধা দেবে, বন্দীদের মুক্ত করে দেবে কিংবা উপহার দিয়ে নিজের সম্মান আদায় করে নেবে।” ৫
এই সার্বিক বোঝাপড়ার পর মহাভারত থেকে অহিংসা সম্পর্কিত এই অংশটি দিয়ে শেষ করা যাক,
अहिंसा परमो धर्मस्तथाहिंसा परो दमः
अहिंसा परमं दानमहिंसा परमं तपः
अहिंसा परमो यज्ञस्तथाहिंसा परं बलम्
अहिंसा परमं मित्रमहिंसा परमं सुखम्
अहिंसा परमं सत्यमहिंसा परमं श्रुतम्
सर्वयज्ञेषु वा दानं सर्वतीर्थेषु चाप्लुतम्
सर्वदानफलं वापि नैतत् तुल्यम् अहिंसया
अहिंस्रस्य तपोऽक्षय्यम् अहिंस्रो यजते सदा
अहिंस्रः सर्वभूतानां यथा माता यथा पिता
एतत् फलम् अहिंसाया भूयश्च कुरुपुंगव
न हि शक्या गुणा वक्तुम् इह वर्षशतैरपि
~ महाभारतम्
(अनुशासन पर्व, अध्याय ११७, श्लोक ३७ – ४१)
অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ ধর্ম।
অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ আত্মনিয়ন্ত্রণ।
অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ গুণ ; অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ প্রায়শ্চিত্ত্ব।
অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ যোজনা ; অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ শক্তি।
অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ বন্ধু; অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ সুখ।
অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ সত্যি ; অহিংসা হলো শ্রেষ্ঠ শ্রুতি।
সমস্ত আত্মত্যাগের ফলে তৈরী উপহার; সমস্ত পবিত্র জলে অভিষেক।
সমস্ত শাস্ত্রীয় আদেশের আওতায় তৈরি উপহার;
এই সমস্ত কিছুর গুণাবলি যোগ করেও তা অহিংসার সমান হয়না।
অহিংসক মানুষ সর্বদা ত্যাগ স্বীকার করে চলেছে।
অহিমসক মানুষ সমস্ত প্রাণীর মাতাপিতা।
এইভাবে, ও কুরুজাতির পিতা! এগুলো হলো অহিংসার কিছু গুনাবলী মাত্র।
অহিংসার গুণ এত বেশী যে, এগুলোকে তালিকাবদ্ধ করা সম্ভব নয়।
এমনকি একজন একশত বছর ধরেও তা করতে পারবে না।
( মহাভারত, অনুশাসন পর্ব )
তথ্যসূত্র
১ গুরুবচন সিং তালিব. The Impact of Guru Gobind Singh on Indian Society. Guru Gobind Singh Foundation. p. 5৯
২ McCrindle, J.W., Ancient India as Described by Megasthenes and Arrian , Trübner, London, ১877, p.8৪, as quoted in ‘India: A History’ by John Keay, chapter ৯
৩ Suleiman, in HOIBIOH, vol.১, p.7 as quoted in ‘India: A History’ by John Keay, chapter ৯
৪ ‘India: A History’ by John Keay, chapter ৯
5 Kautilya (ed. and trans. Rangarajan, L.N. etc.), The Arthasastra , p.7৪১ as quoted in ‘India: A History’ by John Keay, chapter ৯
(Source: Ayudha Puja: The Worship Of Weapons
by Swami Venkataraman and Rakesh Vaidyanathan (Swarajya online magazine, October ১০, ২০১6)
স্বামী ভেঙ্কটরমণ হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন এর ন্যাশনাল লিডারশিপ কাউন্সিল মেম্বার্। এছাড়া তিনি নিউ ইয়র্কের মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি আইআইটি মাদ্রাজ থেকে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ বি.টেক. এবং আইআইএম ক্যালকাটা থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন।
রাকেশ বৈদ্যনাথনর একটি বিজনেস কনসাল্টিং ফার্ম জয় গ্রুপে সহপ্রতিষ্ঠাতা। তিনি এর আগে কাজ করেছেন ম্যাকিন্সেতে এবং বসট্ন কন্সাল্টিং গ্রুপে।। রাকেশ আইআইএম কলকাতা থেকে এবং চেন্নাইয়ের হোয়ার্টন স্কুল এবং ইনজিনিয়ারিং কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছেন।
১. Worship of Goddess Sarasvati
On day of VijayDashami doing the physical act of the worship of the Goddess transforms the expressed bhav of an embodied soul into an unexpressed one and thereby helps in maintaining its stability.
Ref: BhartiyaSanskritikosh, Volume ৪, Page no.৩১৯, ৩২০
২. It is believed that Lord Ramachandra slayed Ravana and emerged victorious on this day. To signify these events, this day has been named as Vijaya Dashmi.
৩. Since Dussehra is a festival of triumph, on this day special rituals have been recommended for nobles and kings. This is a festival signifying victory and valour. Before Arjun went into hiding, he placed all his weapons in the hollow of the Shami tree. But on this day when the Kourav army was herding away King Virat’s cattle, Arjun pulled out his weapons from the Shami tree and confronted the army and defeated them.
Legend of Vijaya Dashami and Shami pooja—Pandava worshiped Shami tree for guarding their weapons and also performed Durga pooja. Since the day of their(Pandava’s) victory in the battle field against Kouravas, the day is celebrated as Vijaya Dashami and Shami pooja become a main ritual in the Vijaya Dashami celebration.
৩. In the ancient time the festival (Dushara or Vijaya Dashami) was celebrated by peasants as a merrymaking events just after after the first monsoon harvest.
During the Navratri, on the day of installation of the pot (ghata sthapana) nine types of food grains are germinated in the altar. On the day of Dusshera the sprouted grains are pulled out and offered to the deities. In several places the main door of the house is decorated with sheaves of rice grains. This custom also depicts that it is a festival of the peasants.
Vijaya Dashami also marks the beginning of the harvest season. People seek the blessings of Mother Earth for a good harvest, peace and prosperity.
Source–(Ref: BhartiyaSanskritikosh, Volume ৪, Page no.৩১৯, ৩২০)
৪. Madhvacharya and Vijayadashami
Sri Madhvacharya was born in the year ১২৩8 A.D, on the Vijaya Dashami day of the month of Aswayuja in a village about three miles from Udupi in South Canara. His father was a pious Brahmin belonging to Bhagavata Sampradaya and a pauranic by profession.
- Velu Nachiyar & Kuyili: The Woman who took took on the British 85 Yrs Before ১857 on the day of Vijaya Dashami.
Source : https://www.thebetterindia.com/১57৩১6/news-india-independence-women-fighters-british-raj/ - RSS was founded on the day of Vijaya Dashami in ১৯২5. Veer Savarkar had immense reverence for Shri Ram and Shri krishna. He used to say that both were army-Chiefs and supreme leaders of this country. In ১৯০৯, he celebrated Vijaya-Dashami in London. Remembering the work done by Ramchandra he said, “When Prabhu Shri Ram gave up his kingdom, superficially to obey his father’s word, but mainly for eradication of demons, He did a great job. When Shri Ram attacked Lanka and got ready for the unavoidable and righteous battle, that of slaying Ravana, His work was superior”
Book Source : Hindu Mahasabha in Colonial North India, ১৯১5-১৯৩০: Constructing Nation By Prabhu Bapu
Other Source-https://books.google.co.in/books?id=iUFalxUFFWkC&pg=PA১১০&lpg=PA১১০&dq=vijaya+dashami+১857&source=bl&ots=PR7nu৪৪CAS&sig=Wn১7aPh১৩6৩zlXOqqySH7Q৯8SMw&hl=en&sa=X&ved=২ahUKEwj১ieCfvIHeAhXLP৪8KHUh6BF০৪ChDoATAGegQIBRAB#v=onepage&q=vijaya%২০dashami%২০১857&f=false - The Vijaya Bank was founded by a group of farmers under the leadership of A. B. Shetty on ২৩ October ১৯৩১, in Mangaluru, Dakshina Kannada District of Karnataka State. It was named Vijaya Bank since it was found on the auspicious Vijaya Dashami Day.
৯. Baba Saheb Ambedkar converted to Buddhism on Vijaya Dashami at Deeksha Bhoomi, Nagpur in ১৯56, which fell on ১৪th of October that year. A festival and congregation is held at Nagpur, Maharashtra to commemorate this.
১০. Sarasvati Puja and Vidyarambham
Vijaya Dashami is considered auspicious to begin your learning. The traditional Vidyarambham ceremony observed mainly in Kerala and Karnataka introduces children formally to learning of music, dance, languages and other folk arts. The child is formally initiated into the process of learning by writing a mantra on rice or sand spread in a plate with the help of the father or any other elderly member of the family.
১১. Vijaydashmi and Dhakeshwari Temple,Bangladesh
In Bangladesh, it is a five day long festival and is celebrated in congregation. This the largest festival held at Dhakeshwari temple and Ramakrishna Mission in Dhaka.
১২.UNESCO and Vijaydashmi
Dussehra or Vijaya Dashami festival was inscribed by UNESCO as one of the “Intangible Cultural Heritage of Humanity” in ২০০8.
Importance of weapon worship on Vijaydashami
Ayudha Puja: The Worship Of Weapons
Ayudha puja or shastra puja is the worship of weapons that takes place on the ninth day of the Navaratri festival. Weapons are retrieved for use with the blessings of the Goddess on the tenth day, Vijayadasami. Ayudha puja is a pan-Indian phenomenon, although it is traditionally confined to those closely connected with, and responsible for, the use of weapons such as royal families and schools of martial arts such as kalaripayattu. Today, worship of weapons is primarily carried out by policemen, security personnel and the army. Most Indian army units have long standing traditions of ayudha puja.
Multiple traditions of weapon worship
Multiple Hindu traditions surround Vijayadasami, notably that of Durga slaying Mahishasura and Rama killing Ravana. Less famous is that the Pandavas retrieve their weapons hidden in a shami tree after thirteen years of exile on Vijayadasami. In memory of this event, the Maharaja of Mysore proceeds on the tenth day on a caparisoned elephant to the Bannimantapa, where he pays respects to the Shami or Banni Tree. This is the grand procession through the thoroughfares of Mysore that the Dussehra celebrations are renowned for.
Shastra puja is present among Sikhs as well. Guru Gobind Singh encouraged “shastar puja” or worship of swords along with the chanting of Chandi di Vaar (also called Vaar Sri Bhagauti ji ki), composed by the Guru and is the fifth chapter of the Dasam Granth. The Vaar is based on a episode from the Sanskrit Markandeya Purana১ and describes the conflict between devas, led by Indra, and asuras led by Shumba and Nishumba, where the supreme goddess is transformed into a liberating divine power in the form of a sword. The Chandi di Vaar evokes a powerful warlike temper aided by powerful language and eloquent similes and is especially dear to the Nihang Sikhs, the most martial order among the Sikhs. The names Chandi and Bhagauti (Bhagawati), the origin in the Markandeya Purana which houses the Devi Mahatmyam, and the worship all exemplify the close connection between Hinduism and Sikhism.
Guru Gobind Singh (Wikimedia Commons)
Some leftist academics have manufactured a needless controversy about Vijayadasami and Navaratri — that Durga represents an Aryan deity who kills the Dravidian Mahishasura and that the ayudha puja is an “Aryan evil,”. However, Tamil Nadu itself has an equally hoary tradition of devi and weapon worship. The worship of the war goddess Kotravai is recorded in Sangam literature. In fact, the same goddess who killed Shumbha and Nishumba, glorified in the Devi Mahatmyam as well as the Chandi di vaar, is worshipped in Tamil Nadu as Nishumba soodini (slayer of Nishumba). She personifies valor and was the war deity of the imperial Cholas themselves. The founder Vijayalaya chola built the Nishumba soodini temple near Kumbakonam.
Another popular Tamil deity, Muruga, is also a war deity. Thai Poosam is one of the most popular festivals of Tamil Nadu (albeit not well known in North India) and is celebrated with great gusto even by diaspora Tamils in Singapore, Malaysia, Sri Lanka etc. The festival, which falls in January/February, celebrates the day Goddess Parvati empowers Muruga with her Shakti by bestowing upon him the spear, his weapon used to lead the devas to victory against the asuras. Yet another case where worship and celebration is associated with the weapon. Indeed, Muruga’s spear and Vishnu’s Sudarshana chakra are unique in that these are two weapons that are worshipped on their own right, when the deities wielding them are not in the picture at all !!
What does such worship of weapons tell us about Hinduism?
It points to certain fundamental distinctions between Hindu or dharmic spirituality and the Abrahamic traditions. But equally importantly, it tells us a lot about the Hindu approach to violence and, by implication, non-violence.
For one, even as kings worshipped deities of war and their weapons and literally drew inspiration for battle from these, Hinduism readily provides the allegorical and spiritual interpretation of these stories for sadhakas. The battle between devas and asuras can be seen as an internal one. The slaying of mahishasura is the destruction of tamasic tendencies within us. And immediately after receiving the spear from Parvati, the story of Muruga has him as the personification of the highest Advaitic truths, teaching the meaning of “Om” to Lord Shiva himself. This story is the background to Muruga being worshipped as Swaminatha (the “Swami” who taught the “Natha” Lord Shiva himself).
Balaskandha (NARINDER NANU/AFP/Getty Images)
Secondly, unlike Abrahamic traditions, Hinduism sees divinity in all of creation and God as both immanent and transcendent. Such an attitude infuses divinity into all activities of life. Work itself is worship, and this philosophy of karma yoga is yet another context in which to place the veneration of weapons. Although it means “weapons”, ayudha is also a generic term that means “instrument or implement.” On the ninth day of Navaratri, everyone cleans, decorates and worships the implement that enables them to make a living, seeing a manifestation of the divine in that. This applies to musicians and musical instruments, farmers and the plough, students and their books, as well as factories and machinery. And of course, it applies to soldiers and their weapons.
It is perhaps more interesting to observe how a culture that has a tradition of worshipping weapons approaches questions of war, violence and non-violence. Dharma, Artha, Kama and Moksha are the four great “purusharthas” (goals of life) of Hinduism. Dharmic conduct is the basis upon which all the other goals of life are to be attained. At an individual level, it is the dharma of a soldier to fight if necessary. At a social level, the ruler must enforce dharma and protect society. Use of weapons is seen as part of a sacred duty to protect dharma. This infusion of divinity and dharma into the use of weapons, in our minds, largely explains why wars in India were circumscribed by a strict code of conduct. The most important component of this code is that wars were fought between soldiers only and other segments of society were not involved.
As far back as the ৪th century BCE, Megasthenes the Greek Ambassador to Chandragupta Maurya describes the Mauryan army as a permanent and professional body, recruited, trained and maintained at state expense, and which scarcely impinged on the agricultural masses. “It therefore not infrequently happens that at the same time, and in the same part of the country, men may be seen drawn up in array of battle, and fighting at the risk of their lives, while other men close at hand are ploughing and digging in perfect security.”২
Suleiman, an Arab merchant who made several trips to India during the first half of the ninth century, says: “The Indians sometimes go to war for conquest, but the occasions are rare. I have never seen the people of one country submit to the authority of another… When a king subdues a neighbouring state, he places over it a man belonging to the family of the fallen prince who carries on the government in the name of the conqueror. The inhabitants would not suffer it to be otherwise.”৩
“Once again one is reminded of Megasthenes’ description of agriculturalists ‘ploughing in perfect security’ while armies did battle in the next field. Although the ploughmen may have had a stake in the outcome of the battle or may have contributed to theequipage of one of the protagonists, they were not expected to get involved. Warriors fought with warriors; the ploughman’s dharma was to plough”.৪
This remarkable similarity in the accounts of two outside travelers separated by over ১০০০ years suggests that there must be some truth to this idea, stunning though it is in its idealism when viewed from a modern perspective. It is also a remarkable anticipation of the Geneva conventions of the ২০th century that required armies not target civilians during times of war. And it stands in stark contrast to the “total war” approach of the Islamic invasions of India, characterized by plunder and destruction of cities and large scale rape, murder and forced conversion of the general populace.
Finally, the tradition that sees divinity in weapons also prizes ahimsa (non-violence). It is the Hindu ideal of ahimsa that inspired Mahatma Gandhi’s satyagraha, a movement unique in the annals of world history. But the fact that Gandhi was inspired by Hindu ideas cannot be interpreted as Hinduism’s abhorrence for violence under all circumstances. Indeed, absolute non-violence is a mandate ONLY for sannyasis, and Gandhi’s genius lies in marrying his sannyasi-like ahimsa with the demands of a political movement. Whether in martial customs or the injunctions of the Bhagavad Gita, Hindu tradition is clear that a refusal to fight on grounds of non-violence often only empowers adharma. The 75th hymn of the 6th mandala of the RigVeda is glorious eulogy to the Ratha, the great warrior in the chariot that protects dharma
The Arthashastra, that masterpiece of statecraft, deals with defence and external relations at length, and lays out sama, dana, bheda, danda (conciliation, gifts, dissension and force) as a way to deal with other kingdoms. War is the last option, but imperative if other options fail. Chanakya then proceeds to describe how the king should treat a subjugated kingdom: ‘having acquired new territory the conqueror shall substitute his virtues for the enemy’s vices and where the enemy was good, he shall be twice as good. He shall follow policies that are pleasing and beneficial by acting according to his dharma and by granting favours and exemptions, giving gifts and bestowing honours.’5
With this balanced understanding, it is appropriate to end this piece on the worship of weapons with the following remarkable ode to non-violence from the Mahabharata:
अहिंसा परमो धर्मस्तथाहिंसा परो दमः
अहिंसा परमं दानमहिंसा परमं तपः
अहिंसा परमो यज्ञस्तथाहिंसा परं बलम्
अहिंसा परमं मित्रमहिंसा परमं सुखम्
अहिंसा परमं सत्यमहिंसा परमं श्रुतम्
सर्वयज्ञेषु वा दानं सर्वतीर्थेषु चाप्लुतम्
सर्वदानफलं वापि नैतत् तुल्यम् अहिंसया
अहिंस्रस्य तपोऽक्षय्यम् अहिंस्रो यजते सदा
अहिंस्रः सर्वभूतानां यथा माता यथा पिता
एतत् फलम् अहिंसाया भूयश्च कुरुपुंगव
न हि शक्या गुणा वक्तुम् इह वर्षशतैरपि
~ महाभारतम्
(अनुशासन पर्व, अध्याय ११७, श्लोक ३७ – ४१)
Ahimsa is the highest Dharma; Ahimsa is the highest self-control
Ahimsa is the highest charity; Ahimsa is the highest penance
Ahimsa is the highest yajna; Ahimsa is the highest strength
Ahimsa is the highest friend; Ahimsa is the highest happiness
Ahimsa is the highest truth; Ahimsa is the highest shruti
Gifts made in all sacrifices; ablutions in all holy waters
Gifts made under all scriptural injunctions; the merits of all these do not add up to that of ahimsa
The penances of a man of ahimsa are inexhaustible; The man of ahimsa is always performing sacrifices
The man of ahimsa is father and mother to all creatures
These, O chief of Kuru’s race, are some of the merits of ahimsa
Ahimsa’s merits are so many that they cannot be listed even if one were to speak for a hundred years.
— Bheeshma in the Anushasana Parva of Mahabharata
Notes:
১ Gurbachan Singh Talib. The Impact of Guru Gobind Singh on Indian Society. Guru Gobind Singh Foundation. p. 5৯
২ McCrindle, J.W., Ancient India as Described by Megasthenes and Arrian , Trübner, London, ১877, p.8৪, as quoted in ‘India: A History’ by John Keay, chapter ৯
৩ Suleiman, in HOIBIOH, vol.১, p.7 as quoted in ‘India: A History’ by John Keay, chapter ৯
৪ ‘India: A History’ by John Keay, chapter ৯
5 Kautilya (ed. and trans. Rangarajan, L.N. etc.), The Arthasastra , p.7৪১ as quoted in ‘India: A History’ by John Keay, chapter ৯
(Source: Ayudha Puja: The Worship Of Weapons
by Swami Venkataraman and Rakesh Vaidyanathan (Swarajya online magazine, October ১০, ২০১6)
Swami Venkataraman, a National Leadership Council member of the Hindu American Foundation, is a Senior Vice President at Moody’s Investors Service in New York. He holds an MBA in Finance from IIM Calcutta and a B.Tech in Electronics Engineering from IIT Madras.
Rakesh Vaidyanathan is a co-founder of The Jai Group, a business consulting firm. He has previously worked for Mckinsey and Co. and The Boston Consulting Group. Rakesh is a graduate of IIM Calcutta, The Wharton School and the College of Engineering Guindy, in Chennai.)