বিজয়া দশমী ( সংঘ প্রতিষ্ঠা দিবস) স্পেশাল – জাতি গঠনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ

বর্তমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশ ভারত ‘নিউ ইন্ডিয়া’এর গৌরবোজ্জ্বল রূপের দিকে এগিয়ে চলেছে। বিগত ২০০০ বছরের পরাধীনতার সময়ে ভারত ও ভারতীয়ত্ব রক্ষার জন্যে নিজেদের সর্বস্ব পণ করা কোটি কোটি ভারতীয়র জীবনের উদ্দেশ্য সফল হতে চলেছে। ভারত আজ আবার ভারতবর্ষ ( অখণ্ড ভারত ) তে পরিণত হওয়ার পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ভারতের সার্বজনীন স্বাধীনতা ‚ সার্বিক সুরক্ষা এবং সার্বিক বিকাশের জন্যে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে কাজ চলছে। আসলে সংঘ এই কাজ ১৯২৫ থেকেই না থেমে ‚ না কারও কাছে মাথা ঝুঁকিয়ে করে চলেছে।

প্রতিষ্ঠার সময় থেকে শুরু করে আজ ৯৪ বছরের ধারাবাহিক ও নিরলস চেষ্টার ফলে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ জাতি সচেতনতার এক নীরব অথচ শক্তিশালী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। তীব্র জাতীয়তাবাদী চেতনার অধিকারী ড. কেশবরাও বলিরাম হেডগেওয়ার ‚ ১৯২৫ সালে বিজয়া দশমীর দিন যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন ‚ তা আজ ভারতের কোনায় কোনায় দেশপ্রেম ‚ সমাজসেবা ‚ হিন্দু জাগরণ তথা জাতি সচেতনতা জাগ্রত করে তুলেছে। সংঘ কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীকা পর্যন্ত বিস্তারিত বিশাল হিন্দু সমাজ ‚ প্রত্যেক ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণীর অনুসারী দের এক বিজয়শালী শক্তিরূপে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।

এই শক্তিশালী হিন্দু সংগঠনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠার আগে এর প্রতিষ্ঠাতা ড.হেডগোয়ার প্রাচীন গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ‚ সংস্কৃতি ‚ মহান সব বই ‚ দেশের গৌরব ও পতনের কারণ গভীরভাবে অধ্যয়ন করেছিলেন। এই অধ্যয়ন ‚ উপলব্ধি এবং অভিজ্ঞতার ত্রিবেণী সঙ্গমে জন্ম হয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের্। সংঘের কাজে ব্যক্তিপুজো বা “গুরুধাম” এর কোনো স্থান নেই। সংঘ তার পরামর্শদাতা ও অনুপ্রেরণা হিসাবে ভারতের সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের প্রতীক ভাগয়া ঝান্ডাকে গ্রহণ করেছে। সংঘের লক্ষ্য হলো সমাজকে জাগানোর মাধ্যমে আমাদের জাতিকে পরম শক্তিশালী করা।

সংঘ প্রতিষ্ঠার আগেও ‚ জাতি চেতনতার অনেক চেষ্টা হয়েছে। আচার্য চাণক্যের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে বিদেশী ও বিধর্মী শক্তিরা পরাস্ত হয় এবং সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে ভারত সত্যি সত্যিই অখণ্ড রূপে প্রকাশিত হয়। দক্ষিণ ভারতে স্বামী বিদ্যারণ্যের দ্বারা জাতি সচেতনতার মহৎ কর্মের ফলেই বিজয়নগর নামে একটি শক্তিশালী হিন্দু রাষ্ট্র জন্ম নিয়েছিলো।রাজস্থানের মহারাণা সঙ্গ এবং রাণা প্রতাপ কখনোই মুঘলদের হীন উদ্দেশ্যগুলি সফল হতে দেননি। তারা জাতীয় গর্বের শিখা সর্বদা প্রজ্বলিত রাখেন।

এই ভাবে গুরু রামদাসের মতো সাধুর চেষ্টার ফলে ছত্রপতি শিবাজীর আত্মপ্রকাশ ঘটেএবং হিন্দু স্বরাজের মতো জাতীয় চেতনার সংগ্রাম শুরু হয়। শ্রী গুরু গোবিন্দ সিংহের দ্বারা খালসা প্রতিষ্ঠা এবং যোদ্ধা শিখদের বলিদানের ফলে বিদেশী হানাদার দের থেকে হিন্দু ধর্ম এবং জাতির অস্তিত্ব রক্ষার অনেক মহান কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। জাতি চেতনতার সংগ্রাম গৌরবময় ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ।

উপরোক্ত প্রসঙ্গটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে দেখা উচিৎ! অতীতে, জাতিকে জাগ্রত করার সমস্তধরনের প্রচেষ্টায় সবসময় সংগঠনের অভাব ছিল। পরাধীনতার কারণগুলির গভীরতায় না গিয়ে পরাধীনতাকে নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়েছিলো । বিদেশী হানাদাররা কেন সফল হয়েছিল? কেন অনবরত দেশ বিভাজন ঘটে চলছিলো ? কেন দেশ ভাগ হয়েছিল?বুদ্ধি, শক্তি, জ্ঞান- বিজ্ঞান সমস্তকিছু থাকা সত্ত্বেও জগতশ্রেষ্ঠ ভারতকে কেন পরাধীনতার শৃঙ্খলে আটকে রাখা সম্ভব হয়েছিল? সংঘ সমস্ত ভারতীয়দের এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।

ভারতের পরিচয় হলো হিন্দুত্ব

হিন্দু সমাজ যখন শক্তিশালী ছিলো তখন শক হূন দের মতো আক্রান্তকারীদেরও পরাজিত করে ভারতীয় জনসমাজে মিশিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যখনই হিন্দু দের মধ্যে বিভেদ দেখা দেয় তখন সংগঠন ও প্রতিরোধের ধারণাটি ম্লান হয়ে যায় এবং সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের শিখা মলিন হয়ে যায় । আফগান -পাঠান -মুঘল দে বর্বর জাতিদের হাতে তারা পরাজিত হতে শুরু করে।

এই একমাত্র কারণেই ব্রিটিশরা ভারতকে তাদের খ্রিস্টানত্বের কবলে আনতে সক্ষম হয়েছিলো।

তবে পরাধীনতার এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের হিন্দু সমাজ কখনও পরাধীনতা মেনে নেয়নি। হিন্দু সমাজ কোনো না কোনোভাবে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলো। তবে জাতীয় পর্যায়ে সংগঠিত প্রতিরোধের অভাব থেকেই যায়। যদিও মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতীয় সমাজ ব্রিটিশ আমলে জাতীয় পর্যায়ে প্রচুর প্রচেষ্টা করেছিল, কিন্তু সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের আসল রূপ হিসাবে হিন্দুত্বের ভিত্তি না থাকায় এই স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ পরিণতি হিসাবে ঘটেছিল ভারত বিভাজন।

সুতরাং, এটি মেনে নিলে কোনো অত্যুক্তি করা হবে না যে ‚জাতীয় স্বয়ংসেবক সংঘ হিন্দুত্বকে তার জাতীয় জাগরণের ভিত্তি করে সমস্ত ভারতীয় সমাজকে জাতীয় দিশা দেখিয়েছে। বর্তমানে ‘নিউ ইন্ডিয়ার’ দিকে এগিয়ে চলার ভিত্তি হলো এটি।

জাতি আগে ‚ সংগঠন পরে

উল্লেখ্য যে ‚ জাতি সচেতনার কাজে সেই সংস্থা বা নেতৃত্বই সফল হতে পারবে যার কাছে গঠনকার্যের স্থায়ী ব্যবস্থা রয়েছে। সংঘ প্রাক যুগে, জাতি চেতনা জাগরণের প্রায় সকল চেষ্টাতেই অবিচ্ছিন্ন কর্ম পদ্ধতির অভাব ছিল। সংঘের কার্য পদ্ধতির (ধারাবাহিক শাখা) এর বিশেষত্ব এই যে ‚ এতে শিশু,বালক ‚ তরুণ এবং প্রবীণ স্বেচ্ছাসেবীরা স্বয়ংসেবক হিসাবে অংশ নেয় । এই কারণেই সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ হেডগোয়ার দেহ ত্যাগ করার পরেও সংগঠনটি এগিয়ে যেতে থাকে। সংঘের কার্যকারিতা ব্যক্তি, পরিবার, আশ্রম এবং বর্ণ কেন্দ্রিক না ‚ বরং জাতিকেন্দ্রিক। যেহেতু সংঘের কাজ, সরাসরি জাতি জাগরণের সাথে যুক্ত, তাই সংঘ স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল এবং স্বেচ্ছাসেবীরা নিজের এবং তাদের সংগঠনের নাম না প্রচার করেই প্রতিটি সত্যাগ্রহ আন্দোলন ও সংগ্রামে অংশ নিয়েছিল।

স্বাধীনতা অর্জনের পরেও, সংঘ তার বিস্তৃত এবং বিশাল সংগঠনের আদর্শ অনুসরণ করে গোয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন, গোরক্ষা আন্দোলন এবং শ্রী রাম জন্মভূমি মুক্তি আন্দোলনকে শক্তিশালী করে তুলেছিল। এই সমস্ত কাজগুলি শুধুমাত্র জাতীয় সচেতনতার কারণেই সফল হতে পারে। স্বেচ্ছাসেবকরা বিদেশী আগ্রাসনের সময় সমাজের মনোবল বজায় রাখতে, সৈন্যদের সর্বপ্রকার সহায়তা প্রদান এবং সরকারকে সঠিক ভুমিকা পালনের জন্য চাপ দেওয়ার ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

সংঘের চতুর্ভূজ রুপ

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দ্বারা জাতিচেতনার জাতীয়তাবাদী আদর্শ বোঝার জন্যে আগে এর চতুর্ভূজ রূপটিকে গভীরভাবে বোঝা প্রয়োজন।

সংঘের কাজের প্রথম রুপ হলো প্রত্যক্ষ সেবা কাজ।শাখা এমন একটি শক্তির আধার ‚ জাতিপ্রেমের বিদ্যুৎ তরঙ্গ উঠে এসে সমাজের প্রত্যেক ক্ষেত্রকে আলোকিত করে। সংঘের শাখা ‚ এবং সংঘের বিভিন্ন কর্মসূচিতে গাওয়া হয় সংহতি সূত্র ‚ ঐক্য মন্ত্র। গানগুলির মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতি ‚ জাতীয় ঐক্য ‚ সামাজিক সম্প্রীতি এবং জাতির আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের দেখা পাওয়া যায়। মহান ব্যক্তিদের স্মরণ করে সংঘের স্বয়ং সেবকরা ভারতমাতার বন্দনা করে।

শাখার শারীরিক কর্মসূচিগুলি এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে শারীরিক শক্তির পাশাপশি নিজের সমাজ ও দেশের জন্যে লড়াই করার মানসিকতাও গড়ে ওঠে। সংঘের দ্বারা বিকশিত এই শাখা ব্যবস্থাটি জাতিকে জাগ্রত করার কাজটি দিয়ে শুধুমাত্র বিশাল হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করেই তুলছেনা বরং তার উপর হওয়া সমস্ত ধর্মবিরোধী আঘাতকে সহ্য করার ক্ষমতাও দিয়েছে।

সংঘের কাজের দ্বিতীয় রুপ হলো ‚ সংঘ দ্বারা পরিচালিত ও পথ প্রদর্শিত ক্ষেত্র যেমন কৃষক ‚ মজুর ‚বনবাসী ‚ শিক্ষার্থী ‚ শিক্ষা‚ চিকিৎসা‚ চারুকলা ইত্যাদিতে ছোটোবড় অনেক সংগঠন তৈরী হয়েছে । প্রত্যেকটি সংগঠন তাদের নিজস্ব অঞ্চলের পরিস্থিতি ও প্রয়োজন অনুসারে জাতিকে জাগ্রত করার কাজ চালিয়ে আচ্ছে।

সংঘের তৃতীয় রূপ হলো ‚ স্বয়ংসেবকদের দ্বারা ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে জাতি জাগরণের কাজ। এই ক্ষেত্রে বিদ্যালয় ‚ খবরের কাগজ ‚ ঔষাধলয় ‚ মন্দির এর ব্যবস্থা এবং আরো নানা প্রকার সাংস্কৃতিক ও সেবা প্রকল্প রয়েছে। স্বয়ংসেবকদের এইসব কাজের পেছনে জাতীয় চেতনা ‚ সেবা এবং হিন্দুত্ববাদের প্রেরণা রয়েছে।

সংঘের কাজ অর্থাৎ জাতি চেতনার চতুর্থ রূপ অত্যন্ত বিশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে সমস্ত প্রচারণা ‚ আন্দোলন ‚ সম্মেলন ‚ আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান ‚ ধর্মীয় সংগঠন চলে আসে। সংঘের কাজ ‘হিন্দু সংগঠন ‘ এবং সংঘের উদ্দেশ্য ‘সবথেকে মহিমান্বিত জাতির’ লক্ষ্যে এরা সক্রিয় আছে। এই সমস্ত সংগঠনে সংঘের সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসাবে, সংঘের স্বয়ংসেবকরা তাদের নিজের থেকে উঠে এসে শুধু সংগঠন গুলিতেই শুধু সক্রিয় ভূমিকা পালন করে তাই না, পাশাপাশি সংগঠন তন্ত্রের সূত্র গুলিকেও একত্রিত ও পরিচালিত করে।

তপস্যার পরিণতি

সংঘের স্বয়ংসেবকরা তাদের ৯৪ বছরের ধারাবাহিকতার জেরে ভারতে সাংস্কৃতিক জাতীয়তা অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদী চেতনার এমন এক শক্ত ভিত্তি তৈরী করেছে যেখান থেকে প্রতিনিয়ত জাতি চেতনার অনেক অঙ্কুর প্রস্ফুটিত হচ্ছে। সংঘ সমগ্র ভারতীয় সমাজকে এক নতুন দিশা দিয়েছে ‚ যা জাতির জীবনের অবস্থার পরিবর্তন করেছে; যে অবস্থার জন্যে ভারত ১২০০ বছর ধরে ক্রমাগত বিদেশী দের কাছে পরাজিত হয়ে আসছিলো। সবদিকে অজেয় শক্তি অর্জন করে ভারত ধীরে ধীরে অজেয় ভারত হতে চলেছে। স্বদেশ এখন সুদেশ হতে চলেছে।

সংঘ জাতীয় জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে দ্বিধা ও হীনমন্যতার অবস্থা পালটে এক শক্তিশালী সমাজ গঠনের জন্যে নীরব আন্দোলন করে চলেছে। জাতীয়তাবাদী শক্তিগুলি শক্তি অর্জন করছে, এবং জাতীয়তা বিরোধী উপাদানগুলি ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।

সংঘ একটি ঐতিহাসিক সত্যকে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বিশ্ববাসীর কাছে জানিয়ে দিয়েছে যে ভারত সুপ্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীর একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র। হিন্দুত্বই ভারতের জাতীয় পরিচয়। ভারতের উত্থান -পতন আর হিন্দুদের উত্থান-পতন সমার্থক।

আজ, ভারতের জনগণ বিশ্বাস করে যে সংঘের স্বেচ্ছাসেবীরা যারা সার্বজনীন স্বাধীনতা, সার্বিক সুরক্ষা এবং তাদের জাতির চূড়ান্ত বিকাশের কাজে নিযুক্ত আছেন তারা খুব শীঘ্রই তাদের লক্ষ্য অর্জন করবেন এবং ভারত মাতাকে আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসনে অভিষিক্ত করা হবে।

নরেন্দ্র সহগল

विजयादशमी (संघ स्थापना दिवस) पर विशेष – राष्ट्र–जागरण के अग्रिम मोर्चे पर राष्ट्रीय स्वयंसेवक संघ

वर्तमान राजनीतिक परिवर्तन के फलस्वरूप हमारा भारत ‘नए भारत’ के गौरवशाली स्वरूप की और बढ़ रहा है। गत् 1200 वर्षों की परतंत्रता के कालखण्ड में भारत और भारतीयता की रक्षा के लिए अपना सर्वस्व अर्पण करने वाले करोड़ों भारतीयों का जीवनोद्देश्य साकार रूप ले रहा है। भारत आज पुन: भारतवर्ष (अखंड भारत) बनने के मार्ग पर तेज गति से कदम बढ़ा रहा है। भारत की सर्वांग स्वतंत्रता, सर्वांग सुरक्षा और सर्वांग विकास के लिए युद्ध स्तर पर प्रयास हो रहे हैं। वास्तव में यही कार्य संघ सन् 1925 से बिना रुके और बिना झुके कर रहा है। विजयादशमी संघ का स्थापना दिवस है।

अपने स्थापना काल से लेकर आज तक 94 वर्षों के निरंतर और अथक प्रयत्नों के फलस्वरूप राष्ट्रीय स्वयंसेवक संघ राष्ट्र जागरण का एक मौन, परन्तु सशक्त आन्दोलन बन चुका है। प्रखर राष्ट्रवाद की भावना से ओतप्रोत डॉ. केशवराव बलिराम हेडगेवार द्वारा 1925 में विजयादशमी के दिन स्थापित संघ के स्वयंसेवक आज भारत के कोने-कोने में देश-प्रेम, समाज-सेवा, हिन्दू-जागरण और राष्ट्रीय चेतना की अलख जगा रहे हैं। कश्मीर से कन्याकुमारी तक फैले विशाल हिन्दू समाज, प्रत्येक पंथ, जाति और वर्ग के अनुयायियों को एक विजयशालिनी शक्ति के रूप में खड़ा करने में संघ ने सफलता प्राप्त की है।

इस शक्तिशाली हिन्दू संगठन की नींव रखने से पहले इसके संस्थापक डॉ. हेडगेवार ने भारत के प्राचीन गौरवशाली इतिहास, संस्कृति, महान ग्रंथों, देश के परमवैभव व पतन के कारणों और तत्कालीन दयनीय स्थिति का गहरा अध्ययन किया था। इसी अध्ययन, मनन और अनुभव का संगम है – राष्ट्रीय स्वयंसेवक संघ। संघ कार्य में व्यक्ति पूजा अथवा ‘गुरुढम’ का कोई स्थान नहीं है। संघ ने भारत के सांस्कृतिक राष्ट्रवाद के प्रतीक भगवा ध्वज को अपना गुरु और प्रेरणास्रोत स्वीकार किया है। समाज के जागरण के माध्यम से अपने राष्ट्र को परमवैभवशाली बनाना संघ का उद्देश्य है।

भारतीय पराक्रम ने ली अंगड़ाई

संघ की स्थापना से पहले भी राष्ट्र – जागरण के अनेकों प्रयास हुए हैं। आचार्य चाणक्य के अथक प्रयासों के फलस्वरूप विदेशी एवं विधर्मी शक्तियां परास्त हुईं और सम्राट चन्द्रगुप्त के काल में अखण्ड भारत अपने वास्तविक स्वरूप में प्रकट हुआ। दक्षिण में स्वामी विद्यारण्य द्वारा किये गए राष्ट्र जागरण के महान कार्य के परिणाम स्वरुप विजयनगर का एक वैभवशाली हिन्दू साम्राज्य अस्तित्व में आया था। राजस्थान के महाराणा सांगा और महाराणा प्रताप ने मुगलों के नापाक इरादों को कभी पूरा नहीं होने दिया और राष्ट्रीय स्वाभिमान की लौ जलाए रखी।

इसी तरह समर्थ गुरु रामदास जैसे संतों के प्रयत्नों से छत्रपति शिवाजी का उदय हुआ और हिन्दवी स्वराज जैसे राष्ट्रीय जागरण के संघर्ष की शुरुआत हो सकी। श्री गुरु गोबिंद सिंह द्वारा खालसा पंथ की स्थापना और योद्धा सिक्खों द्वारा बलिदानों की अटूट श्रृंखला खड़ी कर विदेशी हमलावरों के हाथों हिन्दू धर्म और राष्ट्र की अस्मिता को बचाने के अनेक श्रेष्ठ कार्य सफलतापूर्वक सम्पन्न हुए। राष्ट्रीय स्वयंसेवक संघ ने राष्ट्र जागरण के इसी संघर्ष और गौरवशाली परंपरा को आगे बढ़ाया है ।

उपरोक्त संदर्भ में एक अतिमहत्वपूर्ण बिंदु पर विचार करना चाहिए । पूर्व में राष्ट्र जागरण के सभी प्रयासों में एक सूत्रबद्धता का अभाव सदैव बना रहा । परतंत्रता के कारणों की गहराई में जाए बिना परतन्त्रता को मिटाने के प्रयास होते रहे । विदेशी आक्रांता क्यों सफल हुए? राष्ट्र क्यों खंडित होता चला गया? देश क्यों बांटा गया? बुद्धि, बल, ज्ञान-विज्ञान सब कुछ होते हुए भी जगतगुरु भारत परतंत्रता की जंजीरों में क्यों जकड़ा गया? संघ ने इन सभी प्रश्नों के उत्तर समस्त भारतीयों के समक्ष रखे हैं।

भारत की पहचान है हिंदुत्व

संघ ने बहुत बड़ी इस ऐतिहासिक सच्चाई को संसार के सामने दृढ़तापूर्वक रखा है कि भारत सनातन काल से चला आ रहा विश्व का एकमात्र हिन्दू राष्ट्र है । हिन्दुत्व भारत की राष्ट्रीयता है । भारत का वैभव और पतन हिन्दुओं के वैभव और पतन के साथ जुड़ा हुआ है ।

जब हिन्दू समाज संगठित और शक्तिशाली था तो शक और हूण जैसे हमलावरों को भी परास्त करके उन्हें भारतीय जीवन प्रणाली में समरस कर लिया गया। परंतु जब हिन्दुओं में आपसी फूट घर कर गई, संगठन व प्रतिकार की भावना लुप्त हुई और संस्कृतिक राष्ट्रवाद की लौ क्षीण हुई तो भारत तुर्कों, अफगानों, पठानों और मुगलों जैसी बर्बर जातियों के हाथों पराजित होता चला गया ।

इसी एकमेव कारण से अंग्रेज भी भारत को अपने ईसाई शिकंजे में जकड़ने में सफल हो गये । हालांकि परतंत्रता के इस लंबे कालखंड में हमारे हिन्दू समाज ने कभी भी परतंत्रता को स्वीकार नहीं किया । किसी ना किसी रूप में हिन्दू समाज संघर्षरत रहा । परंतु राष्ट्रीय स्तर पर संगठित प्रतिकार का अभाव बना रहा । अंग्रेजों के कालखंड में यद्यपि महात्मा गांधी जी के नेतृत्व में भारतीय समाज ने राष्ट्रीय स्तर पर अनेक प्रयास किए, परंतु सांस्कृतिक राष्ट्रवाद के वास्तविक स्वरूप हिन्दुत्व का आधार ना होने से इस स्वतंत्रता संग्राम की परिणीति भारत के विभाजन के रूप में हुई ।

अतः यह स्वीकार करने में कोई अतिश्योक्ति नहीं होगी कि राष्ट्रीय स्वयंसेवक संघ ने हिन्दुत्व को अपने राष्ट्र जागरण के कार्य का आधार बनाकर समस्त भारतीय समाज को राष्ट्रीय दिशा प्रदान की है । वर्तमान में ‘नए भारत’ की ओर बढ़ रहे कदमों का धरातल भी यही है ।

राष्ट्र पहले, संगठन बाद में

उल्लेखनीय है कि राष्ट्र के जागरण में वही संस्था अथवा नेतृत्व सफल हो सकता है, जिसके पास कार्यकर्ताओं के निर्माण की स्थाई व्यवस्था हो। संघ के पूर्व के काल में राष्ट्र जागरण के प्राय: सभी प्रयासों में निरंतर चलने वाली कार्यपद्धति का अभाव बना रहा । संघ की कार्यपद्धति (नित्य शाखा) में यह विशेषता है कि इसमें शिशु, बाल, तरुण और वृद्ध स्वयंसेवक बनते रहते हैं । यही वजह है कि संघ के संस्थापक डॉक्टर हेडगेवार के देह छोड़ने के बाद भी संगठन निरंतर आगे बढ़ता चला गया । संघ की कार्यप्रणाली व्यक्ति, परिवार, आश्रम एवं जाति केंद्रित ना होकर राष्ट्र केंद्रित है ।

संघ का कार्य क्योंकि राष्ट्र जागरण से सीधा जुड़ा हुआ है, इसीलिए संघ ने स्वतंत्रता आंदोलन में बढ़-चढ़कर भाग लिया और अपने व अपने संगठन के नाम को आगे ना रखते हुए स्वयंसेवकों ने प्रत्येक सत्याग्रह आंदोलन और संघर्ष में भाग लिया ।

स्वतंत्रता प्राप्ति के पश्चात भी संघ ने अपने विस्तृत एवं विशाल संगठन की आदर्श परंपराओं का पालन करते हुए गोवा स्वतंत्रता आंदोलन, गौ रक्षा आंदोलन एवं श्री राम जन्मभूमि मुक्ति आंदोलन को बल प्रदान किया। यह सभी कार्य राष्ट्र जागरण के कारण ही सफल हो सके । विदेशी आक्रमणों के समय समाज का मनोबल बनाए रखने, सैनिकों को प्रत्येक प्रकार की सहायता देने और सरकार की पीठ थपथपाने में भी स्वयंसेवकों ने अग्रणी भूमिका निभाई है ।

संघ का चतुष्कोणीय स्वरूप

राष्ट्रीय स्वयंसेवक संघ द्वारा किए जा रहे राष्ट्र जागरण के राष्ट्रव्यापी स्वरूप को समझने के लिए इसके चतुष्कोणीय स्वरूप को गहराई से समझना भी आवश्यक है। संघ कार्य का प्रथम स्वरूप है, प्रत्यक्ष शाखा का कार्य । शाखा एक ऐसा शक्तिपुंज है जहां से राष्ट्रप्रेम की विद्युत तरंगें उठकर समाज के प्रत्येक क्षेत्र को जगमगाती हैं। संघ शाखाओं व संघ के विभिन्न कार्यक्रमों में गाए जाने वाले एकात्मता स्त्रोत, एकता मंत्र और गीतों में भारतीय संस्कृति, राष्ट्रीय एकता, सामाजिक सौहार्द और राष्ट्र की आध्यात्मिक परंपराओं के दर्शन होते हैं । राष्ट्रीय महापुरुषों का स्मरण करते हुए संघ के स्वयंसेवक भारत माता की वंदना करते हैं।

शाखा में शारीरिक कार्यक्रमों की रचना इस तरह की जाती है, जिससे शारीरिक बल के साथ अपने समाज और देश के लिए जूझने की मानसिकता तैयार होती है । संघ द्वारा विकसित इस शाखा पद्धति ने राष्ट्र जागरण के कार्य के साथ न केवल विशाल हिन्दू समाज को संगठित किया है, अपितु अपने ऊपर होने वाले विधर्मी आघातों का सामना करने के लिए उसे शक्ति संपन्न भी बनाया है ।

संघ कार्य का दूसरा स्वरूप है, संघ द्वारा संचालित अथवा मार्गदर्शित क्षेत्र –किसान, मजदूर, वनवासी, गिरीवासी, विद्यार्थी, शिक्षा, चिकित्सा, कला इत्यादि क्षेत्रों में संघ के स्वयंसेवकों ने छोटे-बड़े अनेक संगठन तैयार किए हैं । यह सभी संगठन अपने अपने क्षेत्र की परिस्थितियों और आवश्यकताओं के अनुसार राष्ट्र जागरण का कार्य कर रहे हैं ।

संघ कार्य का तीसरा स्वरूप है, स्वयंसेवकों द्वारा व्यक्तिगत स्तर पर किए जा रहे राष्ट्र जागरण के कार्य, इस श्रेणी में विद्यालय, समाचार पत्र, औषधालय, मंदिरों की व्यवस्था और विविध प्रकार के सांस्कृतिक व सेवा के प्रकल्प आते हैं। स्वयंसेवकों द्वारा किये जा रहे इन सभी कार्यों के पीछे राष्ट्रीय एकता, सेवा एवं हिंन्दुत्व की प्रेरणा रहती है ।

संघ कार्य अर्थात् राष्ट्र-जागरण का चौथा स्वरूप बहुत ही विशाल एवं महत्वपूर्ण है। इसमें वे सभी अभियान, आंदोलन, सम्मेलन, आध्यात्मिक संस्थान, धार्मिक संगठन आते हैं जो संघ के ही कार्य हिन्दू संगठन और संघ के ही उद्देश्य, ‘परम वैभवशाली- राष्ट्र’ के लिए सक्रिय हैं । संघ का इन सभी संगठनों को पूरा सहयोग रहता है। संघ के स्वयंसेवक अपने और संगठन के नाम से ऊपर उठकर एक देशभक्त नागरिक के नाते इन संगठनों में ना केवल सक्रिय भूमिका ही निभाते हैं, अपितु संगठन तंत्र के सूत्रों को भी सम्मिलित और संचालित करते हैं।

तपस्या का परिणाम

संघ के स्वयंसेवकों ने अपनी 94 वर्षों की सतत तपस्या के बल पर भारत में सांस्कृतिक-राष्ट्रवाद अर्थात् हिन्दुत्व के जागरण का एक ऐसा सशक्त आधार तैयार कर दिया है, जिसमें से राष्ट्र-जागरण के अनेक अंकुर प्रस्फुटित होते जा रहे हैं। संघ ने सम्पूर्ण भारतीय समाज को एक नई दिशा प्रदान की है, जिसने राष्ट्र जीवन की उस दशा को बदल डाला है जिसके कारण भारत निरंतर 1200 वर्षों तक विदेशियों के हाथों पराजित होता रहा । सर्वांग अजय शक्ति को प्राप्त कर रहा भारत वास्तव में अजय भारत बन रहा है । स्वदेश अब सुदेश बन रहा है।

संघ ने राष्ट्र-जीवन के प्रत्येक क्षेत्र में व्याप्त दुविधा और हीन भावना की स्थिति को बदल कर एक शक्तिशाली समाज के गठन का मौन आंदोलन छेड़ा हुआ है । राष्ट्रवादी शक्तियों को बल मिल रहा है, जबकि अराष्ट्रीय तत्व अलग-थलग पड़ते जा रहे हैं ।

आज भारतवासियों का विश्वास बना है कि अपने राष्ट्र की सर्वांग स्वतंत्रता, सर्वांग सुरक्षा और सर्वांग विकास के कार्य में जुटे हुए संघ के स्वयंसेवक बहुत शीघ्र अपने लक्ष्य को प्राप्त करेंगे और भारत माता फिर से विश्व गुरु के सिंहासन पर शोभायमान होगी।

नरेन्द्र सहगल

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.