৯ মে: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পাঞ্জাবের আম্বালার মাঠে এক বিরাট জনসভায় পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর কাশ্মীর নীতিকে তুলোধোনা করলেন। যদি কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে থাকে, তাহলে কাশ্মীরের কেন আলাদা সংবিধান, আলাদা নিশান, আলাদা ওয়াজীরে আজম (প্রধানমন্ত্রী ), আলাদা সুর্প্রিমকোর্ট হবে তার ব্যাখা চাইলেন নেহেরুর কাছে। ওই দিনই জলন্ধরের ১৫ কিমি দূরে তিনি ফাগোয়ারাতে অন্য একটি জনসভায় শেখ আবদুল্লার দৃষ্টিভঙ্গির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন।
তিনি বললেন, “শেখ আবদুল্লা আমাকে কাশ্মীরে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন কিন্তু আমি বিনা পারমিটেই কাশ্মীরে ঢুকব।”
১০ মে: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পাঞ্জাবেই রইলেন কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য ।
১১মে: বিকাল চারটের সময় ডঃ মুখার্জির জিপ কাশ্মীর -পাঞ্জাব সীমান্তের দিকে রওনা হল। সঙ্গে ডঃ মুখার্জির প্রাইভেট সেক্রেটারি টেকচাঁদ ঠাকুর, জনসঙ্ঘ নেতা শ্রী গুরু দত্ত বৈদ এবং ডঃ মুখার্জির বিশেষ প্রতিনিধি, অতি বিশ্বস্ত ছায়াসঙ্গী যুবক অটল বিহারী বাজপেয়ী। ঠিক বিকেল ৪.৪৫ মিনিটে মাধোপুর চেকপোস্ট পার হয়ে জম্মু সীমান্তের ভিতরে রাভী নদীর সেতু অর্ধেক পার হওয়ার পরেই সেতুর উপরে জম্মুর কাঠুয়া থানার পুলিশ অফিসার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির কনভয় থামিয়ে দিলেন। শ্যামাপ্রসাদের হাতে একটা নির্দেশনামা ধরিয়ে দেওয়া হলো। তাতে লেখা ছিল যে ডঃ মুখার্জির জম্মু-কাশ্মীরে প্রবেশের কোনো অনুমতি নেই।গ্রেপ্তার আসন্ন দেখে ডঃ মুখার্জি তাঁর জিপ থেকে সদ্য কিশোর অটল বিহারীকে নামিয়ে দিলেন এবং বললেন, “অটল, তুমি ফিরে যাও। গিয়ে দেশবাসীকে বলো, আমি বিনা পারমিটেই জম্মু কাশ্মীরে প্রবেশ করেছি।”
এরপর, সেই রাতে তাদের শ্রীনগর সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে যাওয়া হল। পরে শ্রীনগর শহর থেকে ৭ মাইল দূরে জঙ্গলে ঘেরা সাপ প্যাঁচায় পরিপূর্ণ অত্যন্ত স্যাঁতসেঁতে মনুষ্য বসবাসের অনুপযুক্ত একটি কুঠুরিতে তাঁদের রাখা হল। চারিপাশে পাহাড় আর জঙ্গল । যেন এক ভিন্ন গ্রহ। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে চলে যাওয়ায় ডঃ মুখার্জি অসুস্থ বোধ করতে লাগলেন। ঐ কটেজের মেঝেতে শুধুমাত্র একটা তাকিয়া পাতা ছিল। শ্যামাপ্রসাদ কাশ্মীরের বিষাক্ত ঠান্ডা সইতে না পেরে – বারে বারে একটা গরম পোষাক ভিক্ষে চাইলেন শেখ আব্দুল্লার কর্চারীদের কাছে। অসহায় বাগানের মালী ফ্যাল ফ্যাল করে ওঁর দিকে তাকিয়ে থাকল। কিছু করার ছিল না মানুষটার । উপরতলা থেকে সেই রকম নির্দেশই নাকি দেওয়া হয়েছিল। পরে রাত আরো গভীর হলে কাশ্মীর সরকারের উর্ধতন কর্মচারী বক্সি গুলাম মহম্মদ একটা ওভারকোট আর ব্ল্যাঙ্কেট পাঠালেন ডঃ মুখার্জির জন্য। টিম টিম করা আলোয় ডঃ মুখার্জি আর তাঁর সহযোগীরা ঐ জঙ্গলে, হিমাঙ্কের নিচে চলে যাওয়া তাপমাত্রায় মেঝেতে পড়ে রইলেন।ঠিক একই সময় হয়তো জহরলাল তাঁর দিল্লির বাসভবনে এসি চালিয়ে এবং শেখ আবদুল্লা তাঁর শ্রীনগরের বাসভবনে লেপের তলায় আরাম করছিলেন।
১২ মে: দিল্লিতে সেদিন হিন্দুমহাসভার প্রেসিডেন্ট নির্মল চন্দ্র চাট্যার্জি ( সিপিএম নেতা সোমনাথ চ্যাটার্জির পিতা) হিন্দু মহাসভার সেক্রেটারি ভি জি দেশপান্ডে, সংসদ সদস্য শ্রী নন্দলাল শর্মা ও ডঃ প্রকাশ বীর শাস্ত্রী সংসদের দেওয়ান হলে ডঃ মুখার্জির গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে জহরলাল নেহেরু আর শেখ আব্দুল্লার বিরুদ্ধে রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন।
১৫ মে: নেহেরুর নির্দেশে বিক্ষোভকারীদের সকলকেই দিল্লিতে প্রিভেনশন ডিটেনশন এক্ট (P.D.A) এ গ্রেপ্তার করা হল।
২৩ মে: শনিবার ভোরে জহরলাল নেহেরু তাঁর বোন বিজয়লক্ষ্মী পন্ডিতকে নিয়ে তিন দিনের সফরে কাশ্মীরে এলেন। সঙ্গে ছিলেন তত্কালীন স্বরাষ্ট্র ও রাজ্য বিষয়ক মন্ত্রী কে.এন.কাটজু। শ্রীনগর এয়ারপোর্টে তাদের হাসি হাসি মুখে রিসিভ করলেন শেখ আবদুল্লা, করন সিংহ, কাশ্মীরের মন্ত্রী পারিষদরা ও ইন্ডিয়ান আর্মীর টপ অফিসিয়ালরা। সেদিন সন্ধ্যায় ডাল লেকের ধারে পন্ডিত নেহেরু এক বিরাট জনতার সামনে আলো জ্বালিয়ে এক পার্কের উদ্বোধন করলেন। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকা সত্ত্বেও নেহেরু একটিবারও ডঃ মুখার্জির খোঁজ খবর নিলেন না।
২৪ মে: রবিবার সকালে পন্ডিত নেহেরু, হোম মিনিস্টার কে.এন.কাটজু, কাশ্মীরের প্রধান শেখ আবদুল্লা , ন্যাশানাল কনফারেন্সের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এক গোপন বৈঠকে মিলিত হলেন। বস্তুত ঐ বৈঠকেই শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিকে কিভাবে স্লো পয়জন করে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া যায় সেটা ঠিক করা হল। পন্ডিত নেহেরু সকল রকম ব্লু প্রিন্ট তৈরী করে দিয়ে ২৪মে সারা দিন ডাল লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করে বোন বিজয়লক্ষ্মী পন্ডিতকে নিয়ে পরের দিন ২৫ মে দিল্লি ফিরে এলেন।
২৬ মে: Hindustan Standard পত্রিকায় লেখা হল, ” ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি আর তাঁর সহযোগী বন্দীদের কোর্টে এপিয়ার করার অনুমতি দেওয়া হল না। তাঁদেরকে বিনা পারমিটে কাশ্মীরে প্রবেশের দায়ে কারাবন্দী করে রাখা হল।” নেহেরুর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাশ্মীরে অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়ে রইলেন ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। তত্কালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ও মৌন থেকে গেলেন।
১৩ জুন: সুর্প্রিমকোর্টের সিনিয়ার এডভোকেট ইউ.এম.ত্রিবেদী দেখা করলেন ডঃ মুখার্জির সঙ্গে, লিগ্যাল এডভাইস দেওয়ার জন্য। কিন্তু ঠিক তার পরের দিনই অর্থাত ১৪ জুন এডভোকেট ত্রিবেদী দিল্লি এসে প্রেস কনফারেন্স করে জানালেন যে- “আমি কোনো রকম লিগ্যাল এডভাইস দিতে না পেরে বাধ্য হয়ে দিল্লি চলে এসেছি কারন – ভারত সরকার আর কাশ্মীর সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশ ছিল যে কাশ্মীরের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ আমাদের আলোচনার সময় সব সময় উপস্থিত থাকবেন এটাই নাকি ওনাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বললেন, “I could not agree to it because under the law talk between the lawyer and his client is confidential.” (ডঃ মুখার্জির সহযোগী মাধক বলরাজের লিখিত বই ‘AMAR SHAHID DR.SHYAMAPRASAD MUKHERJI’ পৃষ্ঠা নং ২৭৮ এ পরিষ্কার উল্লেখ আছে এই সব কথা।) মিঃ ত্রিবেদী যখন কাশ্মীর থেকে দিল্লি ফিরে আসছিলেন তখন হোটেলে এক সিনিয়ার কাশ্মীরী নাগরিক ওঁকে বললেন – “আপনি এখনই দিল্লি যাবেন না, ডঃ মুখার্জিকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান নতুবা ওঁকে মেরে ফেলা হবে এখানে।”
সেই একই প্রবীন কাশ্মীরী ব্যক্তি ২৪ জুন ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মৃত্যুর পরে, ২৪ জুন সকাল বেলা এডভোকেট ইউ.এম.ত্রিবেদীকে মনে করিয়ে দিলেন সেই দশ দিন আগে বলা কথাটা।
পরিকল্পনা মাফিক সম্পূর্ণ ব্লুপ্রিন্ট তৈরী করে পন্ডিত নেহেরু ১৯৫৩ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ইউরোপের লন্ডন, জেনিভার দিকে দীর্ঘ ভ্রমণে বের হলেন। এদিকে তাঁর নির্দেশ মতন ছক অনুসারে সমস্ত কিছু চলতে লাগল। একদম ছক কষে ২৩ জুন তারিখে ডঃ মুখার্জির ক্যালকুলেটেড মার্ডারের ঠিক এক সপ্তাহ পরে অর্থাত্ ৩০ জুন পন্ডিত নেহেরু বিদেশ সফর শেষ করে ভারতে ফিরে আসেন।
ঠিক সেই দিনই জহরলাল নেহেরু দিল্লি ফিরে এসে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর প্যাডে শ্রদ্ধেয় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মাতা যোগমায়া দেবীকে একটি চিঠি লিখলেন –
Letter No. – 499 – P.M
New Delhi,
June 30,1953
My Dear Mrs. Mukharjee,
It was with deep grief that I learnt a few days ago, as I was leaving Geneva for Cairo, that your son Dr, Shyamaprasad Mukharjee had died.
The news came as shock to me for – though we may have differed in politics.
… When I went to Kashmir about five weeks ago, I inquired as to where he was kept and about his health. I suppose It was beyond human power to do anything and we have to bow to circumstances beyond control. If I can be of any service to you – you will please not hesitate to inform me.
Yours faithfully ,
S/D Jawharlal Neheru !!!
আর এই এখানেই খটকা – ” Though we may have differed in politics ” !!!
” I suppose it was beyond human power to do anything ” – ” আমি মনে করি এটা ছিল মনুষ্য শক্তির উর্ধে তাতে কিছু করার ছিল না ” সত্যি চমত্কার ।
ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির বারন করা সত্বেও শ্রীনগর সাব জেলের ডাক্তার ২০ জুন ১৯৫৩, দুপুর ২.৩০টায় জোর করে স্ট্রেপটোমাইসিন ইঞ্জেকশন দিলেন। ডঃ মুখার্জির পারিবারিক ডাক্তার এই ইঞ্জেকশন সম্পর্কে সতর্ক করে ছিলেন।
ডঃ মুখার্জির প্রাইভেট সেক্রেটারি টেকচাঁদ ঠাকুর ও জনসঙ্ঘের লিডার গুরু দত্ত বৈদকে শ্রীনগর সাবজেলে স্থানান্তরিত করা হল। বিনা শীতবস্ত্রে, বিনা চিকিত্সায় ডঃ মুখার্জি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ১৯ জুন এবং ২০ জুন ১৯৫৩-এর মাঝের রাতটা ভয়ংকর গেল।
ডঃ মুখার্জির পিঠে অসহ্য ব্যথা হতে লাগল এবং প্রচন্ড জ্বর এলো। ২০ জুন সকাল ১১.৩০টায় জেলের ডাক্তার আলী মহম্মদ ডঃ মুখার্জিকে দেখে বললেন –
“ডঃ মুখার্জির ড্রাই প্লুরিসি(Pleurisy) হয়েছে। তাই উনাকে স্ট্রেপটোমাইসিন ইঞ্জেকশন দিতে হবে এবং কিছু পাউডার জাতীয় ঔষধ খাওয়াতে হবে।” এর পূর্বে ১৯৩৭ ও ১৯৪৪ সালে ডঃ মুখার্জি ঐ একই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাই তার এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা ছিল। সেইজন্য সত্বর ডঃ মুখার্জি বললেন – “আমাদের পারিবারিক ডাক্তার মিঃ বোস বলেছেন স্টেপটোমাইসিন আমার শরীরে সুট করে না। তাই ওটা কিছুতেই দেওয়া যাবে না।”
কিন্ত এই কথা শোনার পরেও ২০ জুন দুপুর ২.৩০টায় এক গ্রাম স্ট্রেপটোমাইসিন ইঞ্জেকশন ডঃ মুখার্জির হাতে পুশ করা হলো এবং ২১ জুন সকাল ১০টায় আরও এক গ্রাম ঐ একই ইঞ্জেকশন ডঃ মুখার্জিকে পুশ করা হল। তাকে আশ্বস্ত করা হল এই বলে যে , এটা নূতন ড্রাগ, এটা নিলে উনি দ্রুত সেরে উঠবেন।
২১ জুন বিকেল ৪টা থেকে ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জর বুকে ও পিঠে ব্যথা অসহ্য ভাবে বেড়ে গেল, জ্বর ১০৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল।
বিনা চিকিত্সায় মাত্র দুই জন সহযোগী বন্দীর সঙ্গে সেই রাতে পড়ে রইলেন শ্যামাপ্রসাদ।
২২ জুন ডঃ মুখার্জির প্রচন্ড বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট হতে লাগল ভোর ৪টেতে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ভোর ৪.৪৫টা পর্যন্ত তিনি পড়ে রইলেন প্রায় অচেতনভাবে। শ্বাস প্রশ্বাসের গতিবেগ ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যেতে লাগলো।
উপায় না দেখে তাঁর সহযোগী বন্দী গুরু দত্ত বৈদ এবং টেকচাঁদ ঠাকুর একটু গরম জল করে তাতে একটু দারুচিনি আর লবঙ্গ মিশিয়ে ডঃ মুখার্জিকে পান করালেন। ভোর ৫টায় তিনি সামান্য সুস্থ বোধ করতে লাগলেন।
ঐদিন সকাল ৭.৩০টায় শেখ আব্দুল্লার ঠিক করা ডাক্তার আলী মহম্মদ তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডঃ মুখার্জির বাম হাতে ২ সি.সি কোরামিন ইঞ্জেকশন দিলেন।
এর পরেই ডঃ মুখার্জিকে বলা হলো – “উপর মহলের নির্দেশ আছে আপনাকে হসপিটালে ভর্তি করাতে হবে তাই এখান থেকে রিমুভ করা হচ্ছে। “
২২ জুন ঠিক দুপুর ১২টায় ভয়ংকর অসুস্থ শ্যামাপ্রসাদ মাত্র একটা জামা পরে কোনো রকম শীত বস্ত্র না পরে ফ্যাল ফ্যাল করে শূন্য দৃষ্টিতে তাকাতে তাকাতে শেখ আব্দুল্লার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে পায়ে হেঁটে হেঁটে গাড়ি নং – কে – ১৫৯ এ গিয়ে উঠলেন সাধারণ ক্রিমিনালদের মতন।
হাসপাতালে ভর্তি করার পর জানানো হয় যে তার Heart Attack হয়েছে। এর একদিন পর তার মৃত্যু হয় রহস্যজনক ভাবে। ২৩ জুন ৩.৪০টায় তাঁর মৃত্যু ঘোষণা করা হয় । ডঃ মুখার্জির কোনও পোস্ট মর্টেম করা হয়নি বা মৃত্যুর কোনও তদন্ত হয়নি । যোগমায়া দেবী নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করলে নেহেরু তা প্রত্যাখান করেন ।
S.C DAS এর মতে , হাসপাতালের নার্স RAJDULARI TIKU শ্যামাপ্রসাদের মেয়ে সবিতাকে বলেছিলেন যে ডঃ মুখার্জি ডাক্তারের জন্য চিত্কার করলে সে DR JAGANNATH ZUTSHI কে ডেকে আনে । তিনি একটি বিষাক্ত পাওডার দিলে ডঃ মুখার্জি প্রচন্ড চিত্কার করতে শুরু করেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। ২০০৪ সালে বাজপেয়ী দাবি করেন যে মুখার্জির গ্রেপ্তার ছিল “নেহেরুর ষড়যন্ত্র।”
এমনকি তার মৃত্যুর পরও অনেক ষড়যন্ত্র হয়। কলকাতাতে তার মৃতদেহ যেদিন আনা হয় সেইদিন বামেরা বাংলা বন্ধ ডেকেছিল যাতে তার অন্তেষ্টিতে বেশী মানুষ যেতে না পারে। তথাপি হাজার হাজার লোক জমায়েত হয়েছিল তাদের প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানানোর জন্য । স্বাধীনতা এতগুলো বছরে এই মহাপুরুষকে কম অবহেলার স্বীকার হতে হয়নি।
কলকাতার একটি লোকসভা কেন্দ্র থেকে একজন প্রার্থীকে শ্যামাপ্রসাদের আদর্শে চলা দল টিকিট দেয়। সেই ভদ্রলোক প্রকাশ্যে শ্যামাপ্রসাদের আদর্শ ভুয়ো।, মানুষটা জালি এমনধারা কথা বলেছিলেন। হিন্দুত্বের এই পুনর্জাগরণের বাজারেও যে সেই নীল রক্ত সম্বলিত প্রার্থী শোচনীয় পরাজয় স্বীকার করেছেন , তা একরকম পোয়েটিক জাস্টিস।
প্রীতম চট্টোপাধ্যায়।
(মূল নিবন্ধ লিখেছেন শ্রী অভিমন্যু রায মহাশয় )